করোনা ছড়িয়ে পড়ার সঙ্কায় সরকারী নির্দেশনা সবাইকে ঘরে থাকার জন্য। ফলে কাজকর্মহীন সবচেয়ে কঠিনসময় যাচ্ছে সাধারণ মধ্যবিত্ত ও খেটে খাওয়া মানুষের। এমন সময় নিজের শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়ে মানবিক বিরল মানবিক দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) গণিত বিভাগের শিক্ষক এ. বি. এস. মাণিক মুনসী।
সম্প্রতি নিজ বিভাগের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক গ্রুপে গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এ. বি. এস. মাণিক মুনসী করোনা পরিস্থিতিতে দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে জবি শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর ষোষণা দিয়েছেন। জানিয়েছেন আর্থিক সহায়তা দিয়ে সাহায্য করবে গরীব-অসহায় শিক্ষার্থীদের। তিনি এটাকে উত্তম ঋণ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। শিক্ষার্থীরা তাদের সুসময়ে তা ফিরিয়ে দিবেন এমন প্রত্যাশাই করেন তিনি।
তার দেয়া স্ট্যাটাসটি ছিলোঃ
প্রিয় ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ,
আশা করি তোমরা ভালো আছো। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে আমরা সবাই কঠিন সময় পার করছি। তোমাদের অনেকেরই পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না। কারো কারো চলতে সমস্যা হওয়া অস্বাভাবিক নয়। তোমাদের মেধার উপর এতোটুকু ভরসা আছে যে এক সময় তোমরা অনেক ভালো অবস্থানে থাকবে, হাজার হাজার লাখ লাখ টাকা উপার্জন করবে। এগুলো বলার উদ্দেশ্য হল কেউ যদি এখন আর্থিক কষ্টে থাকো তাহলে নি:সংকোচে আমাকে ফোনে বা ইনবক্সে জানাতো পারো। আমার সাধ্যমত কর্জে হাসানাহ (উত্তম ঋণ) দিব। দান করে কাউকে ছোট করতে চাই না, এজন্য ঋণ, যা তোমার ভালো সময়ে আমাকে পরিশোধ করে দিবে।
মুঠোফোনের আলাপে এ.বি.এস. মাণিক মুনসী বলেন,যাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না বা যারা অল্প টাকায় টিউশনি করায় বা কোনো সমস্যার কারণে যাদের ম্যাস ভাড়া আটকে গেছে তারা আমাকে বলতে পারো আমি আমার সাধ্যমতো তোমাদেরকে সাহায্য-সহযোগীতা করবো।বিশেষ করে আমার ডিপার্টমেন্ট (গণিত) বা অন্য কোনো ডিপার্টমেন্টের হলেও আমি আমার পক্ষ থেকে সর্বোচ্চটা চেষ্টা করবো।ইতিমধ্যে অন্যান্য ডিপার্টমেন্টের ২-১ জন শিক্ষার্থী আমার সাথে যোগাযোগ করেছে,আমি তাদের মাসিক যতটা খরচ লাগে তা দেয়ার ব্যবস্থা করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মাসিক মোটামুটি ভালো একটা পরিমাণ বেতন পায়। তিনি মনে করেন, তাদের জন্য একজন দরিদ্র শিক্ষার্থীর মাসিক খরচ বহন করা তেমন কোনো ব্যাপার নয়। সুসময়ে শিক্ষার্থী সেটা পরিশোধ ও করে দিতে পারবে। সেজন্য দরকার ছাত্র-শিক্ষকের মাঝে সুসম্পর্ক গড়ে তুলা।
তিনি আরো বলেন,ইতিমধ্যে ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষকরা এমন একটি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে আমি জানতে পেরেছি। এর জন্য আমি সাদুবাদ জানাই। আমি মনে করি শুধু এমন পরিস্থিতিতেই নয় সবসময় গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানো দরকার।
উল্লেখ্য যে, একই ডিপার্টমেন্টের প্রভাষক মোজাম্মেল হক, জাকির হোসেন , ফয়জুন্নেসা খন্দকার ও আরো শিক্ষকবৃন্দ ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে থাকার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন।
You cannot copy content of this page