বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খু’নি আব্দুল মাজেদের মরদেহ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় দাফন করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। জুতা-লাঠি হাতে বিক্ষোভের পাশাপাশি তারা চেষ্টা করেছেন কবর খোঁড়ার। রোববার (১২ এপ্রিল) ভোরে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলাধীন শম্ভুপুরা ইউনিয়নের হোসেনপুর শ্বশুরবাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে খু’নি মাজেদের নিকটাত্মীয়দের উপস্থিতিতে মরদেহ দাফন করা হয়।
শনিবার (১১ এপ্রিল) দিনগত রাত ১২টা ১ মিনিটের মাজেদের ফাঁ’সি কার্যকর হওয়ার পর তার মরদেহ গ্রামের বাড়ি ভোলায় নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভোলার জনগণ ও রাজনৈতিক নেতাদের চাপে সোনারগাঁ নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ভোরে অত্যন্ত গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে মাজেদের শ্বশুরবাড়ি সোনারগাঁর শম্ভুপুরা ইউনিয়নের হোসেনপুর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়। এসময় খু’নি মাজেদের চাচাশ্বশুর আলী আক্কাস ও শ্যালক শহিদুজ্জামানসহ নিকটাত্মীয়রা উপস্থিত ছিলেন। সকালে ঘটনা জানাজানি হলে এ নিয়ে এলাকায় চরম ক্ষোভ দেখা দেয়। স্থানীয় আওয়ামী লীগ, মুক্তিযোদ্ধা ও সুশীল সমাজের লোকজন খুনি মাজেদের মরদেহ এখান থেকে তুলে অন্যত্র দাফনের দাবি জানান।
মরদেহ দাফনের খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান মাসুমের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যাক নেতাকর্মী ঘটনাস্থলে ছুটে যার এবং জুতা হাতে প্রতিবাদ জানান। এক পর্যায়ে তারা খুনি মাজেদের কবর খুঁড়তে শুরু করলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তা থেকে বিরত থাকেন।
এ ব্যাপারে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম বলেন, সবার অজ্ঞাতসারে সোনারগাঁয়ে বঙ্গবন্ধুর খু’নি মাজেদের মরদেহ দাফন করা হয়েছে। এজন্য সোনারগাঁ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের পক্ষ থেকে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়েছে। পৈত্রিক বাড়ি ভোলায় দাফন না করে সোনারগাঁয় করায় আমরা ক্ষুব্ধ। এতে সোনারগাঁকে কলঙ্কিত করা হয়েছে বলে মনে করি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান মাসুম বলেন, বঙ্গবন্ধুর খু’নি মাজেদকে সোনারগাঁয়ে দাফনের মাধ্যমে সোনারগাঁয়ের মাটিকে কলঙ্কিত করা হয়েছে। এটা আমরা মেনে নিতে পারি না। শেখ হাসিনার কাছে সবিনয় প্রার্থনা এ খুনির মরদেহ যাতে সোনারগাঁ থেকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়। মাজেদের মরদেহ অপসারণ না করা হলে কবর থেকে তুলে মেঘনা নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন সোনারগাঁও উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার ওসমান গনি।
এ ব্যাপারে ওসমান গনি ও মুক্তিযোদ্ধা জামান মোল্লা বলেন, সোনারগাঁর পবিত্র ভূমিতে খু’নি মাজেদের মরদেহ রাখতে দেওয়া হবে না। এ ব্যাপারে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। প্রশাসন এগিয়ে না এলে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড নেতাদের নিয়ে কবর থেকে মরদেহ তুলে মেঘনা নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হবে।
Leave a Reply