ভরত রায়, চিরিরবন্দর প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে ৭৫ বছর বয়সী বৃদ্ধা মা সামছুন এর মানবেতর জীবন জাপন নিয়ে গত ১০ এপ্রিল নর্থবেঙ্গল ২৪ এর স্টাফ রিপোটার ও স্থানীয় সাংবাদিক মাহাফুজুল ইসলাম আসাদ নিজস্ব ফেসবুক পেজে একটি স্বচিত্র ভিডিও ফুটেজ পোষ্ট করেন এবং তাৎক্ষিনক ভাবে চিরিরবন্দর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে কিছু খাদ্য সামগ্রী দিয়ে আসেন। সংবাদটি প্রচারের পর- ইউএনও মহোদয়ের দৃষ্টিগোচর হলে তিনি উপজেলা সমাজ সেবা অফিসারকে বৃদ্ধা সামছুন এর বিধবা ভাতা করে দেয়ার নির্দেশ দেন।
সোমবার (১৩ই এপ্রিল) বিকাল ৪টায় ব্যাক্তিগত অর্থায়নে সেই বৃদ্ধার বাড়ীতে খাদ্যসামগ্রী ও একটি শাড়ী নিয়ে স্বশরীরে হাজির হলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আয়েশা সিদ্দীকা।
উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাসের কারণে সবাই যখন ঘরে, তখন শ্রমহীন মানুষদের পাশে সরকারের পাশাপশি বিভিন্ন সামাজিক কিংবা রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষে ত্রাণ অনেকের ঘরে পৌঁছালেও চিরিরবন্দর উপজেলার মামুদপুর গ্রামের ফলিমারীর ডাঙ্গার বিধবা সামছুন (৭৫) এর কাছে এখনো পোঁছেনি কোন আর্থিক সাহায্য কিংবা ত্রাণ সামগ্রী।
পান না কোন প্রকার সরকারি ভাতা! এমতাবস্থায় চরম বিপাকে পড়েছেন তিনি। এতে খেয়ে-না খেয়ে দিন পার করতে হচ্ছে। তিনি উপজেলার আব্দুলপুর ইউনিয়নের মামুদপুর ফলিমারী ডাঙ্গার মৃত আইজ উদ্দীন এর স্ত্রী।
১৮ বছর আগে তার স্বামী মারা যান। স্বামী মারা যাওয়ার পর ভাতিজার দেয়া এক টুকরো জমিতে বাঁশের বেড়া আর টিনের ছাউনি দেয়া একটি ঝুপড়ি ঘরে একাই বসবাস করেন তিনি।
সামছুন বলেন, “স্বামীর মৃত্যুর ১৮ বছর পার হইছে চেয়ারম্যান মেম্বারের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেছি সবাই শুধু আশ্বাস দেয়। আমি বয়সের ভারে বিভিন্ন অসুখে ভুগতেছি, প্রায় অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকি। বিভিন্ন পাড়ায় ঘুরে চেয়ে খুঁজে নিয়ে চলি এখন তো সেটাও বন্ধ। আর আগের মতো চলাফেরা করতে পারি না। এখন আমার কি হবে? ঘরে টাকা-পয়সাও নাই-চালও নাই।”
বৃদ্ধা মা সামসুন কাঁদতে-কাঁদতে চোখের পানি মুছতে-মুছতে করুণ সুরে আরো জানান, “ইউয়োনো স্যার অনেক ভালো মানুষ আর তোরা মোর যে উপকার করিলেন মুই ভুলির পারিম না। দোআ করছো আল্লাহ তোমার ভালো করুক"।
এর আগে দুই বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় দুটি পা হারানো লিমনকে খাদ্য সামগ্রী পৌছে দেন। লিমন ইসবপুর ইউনিয়ের নখইড় গ্রামের ডাঙ্গাপাড়ার আব্দুল জলিলের ছেলে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইসবপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবু হায়দার লিটন।
You cannot copy content of this page