অর্থনীতি না বুঝলেও অন্তত অতিদরিদ্র ও দরিদ্র বা খেটে খাওয়া ব্যক্তির আয়ের উপর করোনার প্রভাব একটি মাস যেতে না যেতেই যে প্রকট হতে প্রকটতর হচ্ছে, তা মোটাদাগে আঁচ করতে পারছি। মজার বিষয় যেখানে বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত টেকসই অর্থনীতির দিকে যাচ্ছে, সেখানে আমার ধারণা ধনী গরিবের বৈষম্যও বিস্তর ফারাক হচ্ছে।
করোনার কারণে এক মাসের ব্যবধানে এক সুবিশাল দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সরকার নানানভাবে আর্থিক সহায়তা প্রদান করছে। অথচ প্রয়োজন মেটাতে হিমসিম খাচ্ছে সরকার। আমরা বোধকরি সমতাভিত্তিক প্রবৃদ্ধিকে গুরুত্ব দেইনি। তাই প্রকারান্তরে সব বোঝা আজ সরকারকেই বহন করতে হচ্ছে।
এই পরিপ্রক্ষিতে ভাবনা উদয় হওয়া স্বাভাবিক, জনগোষ্ঠীর একটি বিশাল অংশ হয় অবৈধ, আর না হয় অনৈতিকভাবে বিপুল অর্থের মালিক হয়েছে। এর সাথে পুঁজিবাদী বাজার অর্থনীতিতে জনগোষ্ঠীর আরেকটি অংশ ক্রমেই বিত্তশালী হয়েছে।
বর্তমান সরকারের আমলে শ্রমজীবী মানুষের আয় বাড়লেও তার চেয়ে ধনীদের যে আয় বেড়েছে, তা সংখ্যামান দিয়ে বিবেচনা করলে ব্যবধান বিশাল হবে বৈকি। আজ সেই ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানকে কেন অসহায়দের সাহায্য করার জন্য সরকারকে আহ্বান জানাতে হচ্ছে? কেননা, তারাইতো রাষ্ট্র থেকে বেশি সুবিধা পেয়েছে। এ আয়ের ওপর অসহায়দের নায্য অধিকার বা হক সুনিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত।
এই মহাদুর্যোগ সামাল দেয়া একা সরকারে পক্ষে সম্ভব নয়। তাই আমরা যারা রাষ্ট্রের দ্বারা বেশি লাভবান, তাদের দায়িত্বের ও কর্তব্যের হাতকে প্রসারিত করি মানবতার জয়ের জন্য। বুভুক্ষু মানুষ কিন্ত আমার-আপনার পাশেই। তারা বিক্ষুব্ধ হলে আমরা কি রেহাই পাব? আর সেটি যেন আল্লাহ না করেন, সে কামনা করছি।
[caption id="attachment_5067" align="alignnone" width="300"] প্রফেসর মহা. হবিবুর রহমান (ছবি: সংগৃহীত)[/caption]
লেখক : অধ্যক্ষ, রাজশাহী কলেজ
You cannot copy content of this page