করোনাভাইরাস কবলিত এই দু:সময়ে ঘরে বসে ক্রীড়াবিদরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের কথা বলছেন, মানুষকে সচেতন করছেন, খেলা নিয়ে কথা বলছেন। কিন্তু পাকিস্তানের সাবেক অফ-স্পিনার সাঈদ আজমল অনেকদিন পর নিজের ইউটিউব ভিডিওতে কথা বলতে এসে আজ সমালোচনা করলেন আইসিসির।আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) বিরুদ্ধে আজমলের অভিযোগ, পাকিস্তানি বোলাররা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির আনুকুল্য পান না। পাকিস্তানি বোলারদের প্রতি তাদের আচরণটা ভালো নয়। আজমল হয়তো বলতে চেয়েছেন, আইসিসির আনুকুল্য পেলে তার ক্যারিয়ার আরও লম্বা হতে পারতো এবং পাকিস্তানকে সেবা দিতে পারতেন আরও কিছুদিন।
‘রহস্য স্পিনার’ স্পিনার সাকলায়েন মুশতাকের পর পাকিস্তান দলে আসেন সাঈদ আজমল। ২০০৮ সাল থেকে শুরু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার যাত্রাটা ছিল দুর্দান্তই। ৩৫ টেস্টে তার শিকার ১৭৩ উইকেট, ১১৩ ওয়ানডেতে ১৮৪। টেস্টে ১০ উইকেট নিয়েছেন ৪ বার, ইনিংসে ৫ উইকেট ১০ বার। ওয়ানডেতে ৪ উইকেট শিকার করেছেন ৬ বার, ৫ উইকেট ২ বার। কিন্তু অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের কারণে আইসিসির কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয় তাকে ২০০৯ সালে। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের ( পিসিবি) তত্ত্বাবধানে বোলিং অ্যাকশনটা শুধরে নিয়ে আবার বোলিং করা শুরু করেন তিনি। তবে আগের আজমলকে আর পাওয়া যায়নি, কারণ নতুন অ্যাকশনে ‘দুসরা’ করতে পারতেন না।শ্রীলঙ্কার সঙ্গে একটি টেস্ট ম্যাচ খেলার পর আবার অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের কারণে আজমল অভিযুক্ত হন ২০১৪ সালে এবং আইসিসি তার বোলিং নিষিদ্ধ করে ২০১৫ সালে। দুই বছর পর ২০১৭ সালে সবধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর নেন আজমল।ইউটিউবে আজমল বলেছেন, প্রথমবার পিসিবি শারীরিক সমস্যাকে কারণ দেখিয়ে তার পক্ষে দাঁড়ায়, কারণ একটি দুর্ঘটনায় তার হাতের ক্ষতি হয়েছিল। আইসিসি সেটি মেনেও নিয়েছিল। কিন্তু পরেরবার আইসিসি সেটি মানেনি। আজমল বলেছেন, ‘২০০৯ এবং ২০১৪ সালে আমাকে একইরকম পরীক্ষা দিতে হয়েছে, কিন্তু পার্থক্য হলো পরেরবার তারা শারীরিক সমস্যার বিষয়টি বাদ দেয় যা গৃহীত হয়েছিল ২০০৯ সালে। মুরালিধরন ক্রিকেট ছাড়ার পর তারা হয়তো ভেবেছিল, এই সাঈদ আজমল তো পাকিস্তানের। তারা আমাদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কিছু করতে পারবে না!’টেস্ট ক্রিকেটের একমাত্র ৮০০ উইকেট শিকারী বোলার মুত্তিয়া মুরালিধরনের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে কম বিতর্ক দেখেনি ক্রিকেট। শ্রীলঙ্কার সাবেক এই অফ-স্পিনার সবসময়ই বলে এসেছেন জন্মগত ত্রুটির কারণেই তিনি তার বোলিং হাতটা সোজা করতে পারেন না। তার বিরুদ্ধে বারবার অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের অভিযোগ উঠেছে। তার দাবি পরীক্ষায় প্রতিষ্ঠিতও হয়েছে। মুরালিধরনের কারণেই আইসিসি ২০০৫ সালে অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের আইনটি পর্যন্ত বদলাতে বাধ্য হয় এবং শেষ পর্যন্ত আর কোনও বাধা ছাড়াই এই শ্রীলঙ্কান ২০১০ সাল পর্যন্ত চালিয়ে যান আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। তবে সন্দেহবাদীদের সংশয় কোনও কালেই মুরালিধরন ঘোচাতে পারবেন বলে মনে হয় না। ভারতীয় কিংবদন্তি স্পিনার বিষেণ সিং বেদি মুরালিধরনকে বলতেন ‘জ্যাভলিন থ্রোয়ার’। তারপর মুরালিধরন যখন দাবি করেন, জন্মগত ত্রুটির কারণেই তার বোলিং হাতটা সোজা হয় না, বেদি বলে দেন, ‘ তা জন্মগত ত্রুটি নিয়ে ক্রিকেট খেলার দরকারটা কী তোমার বাপু!’
Leave a Reply