সুজন ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি ঃ সারা দেশে যখন করোনা আতংকে মানুষ একঘর হয়ে গেছে ঠিক এই সময়ে ঠাকুরগাঁওয়ে করোনার ভয়াবহতার মধ্যে মাছির আতংকে এলাকাবাসী। মাছির অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে চরম বিপাকে পড়েছে স্থানীয়রা।
মঙ্গলবার ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা ৫ নং বালিয়া ইউনিয়নে বড়বালিয়া জর্দার পাড়া গ্রামে এ চিত্র দেখা যায়। স্থানীয়রা জানান, বড় বালিয়া গ্রামে দুলাল এর রাইস মিল চাতালে পোল্টি ফার্ম করার জন্য স্থানীয় বাসিন্দা নাসিরুল নামে এক ব্যক্তি ভাড়া নেয়। সেখানে ১৬০০ মুরগী নিয়ে গড়ে তোলে পোল্টি ফার্ম। কিছু দিন যাওয়ার পর হঠাৎ করে কয়েকদিন থেকে দেখা দেয় মাছির উপদ্রব এবং প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকে মাছির সংখ্যা। দূর্গন্ধ ও মাছির উপদ্রবে
এ অবস্থায় আতংক ও চরম বিপাকে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা।
জানা যায়, কুমারপুর এলাকার বাসিন্দা হোটেল মালিক দারাজ ইসলাম (ভাই সাহেব) এর ছেলে নাসিরুল ইসলাম পোল্টি ফার্ম করার জন্য পাশ্ববর্তী গ্রামের দুলাল এর রাইস মিল চাতাল ভাড়া নেয়। ফার্মের ১ মাসের মাথায় হঠাৎ করে দেখা দেয় এ মাছির উপদ্রব। এ অবস্থায় পরিবেশ দূষণ ও স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে এলাকাবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দা আশরাফুল ইসলাম জানান,করোনার ভয়াবহতার মধ্যে আমরা মাছি আতংকে পড়েছি। এতো পরিমাণের মাছি যা বলে শেষ করা যাবে না। আমরা মাছির অত্যাচারে ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া ও ঘুমাইতে পারতেছি না। যেখানে যাই সেখানে শুধু মাছি আর র্দূগন্ধ। এলাকায় দুজন শিশু ডাইরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। আমরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছি। নাসিরুল তার মুরগী ফার্ম সঠিক ভাবে পর্যবেক্ষন না করার কারণে এ সমস্যা হয়েছে। আমরা অতিদ্রুত এখান থেকে ফার্ম অপসারণ চাই। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে সহযোগীতা কামনা করছি।
মুসা নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান,ফার্ম করায় আমরা মাছি আতংকে পড়েছি। আমাদের স্বাস্থ্যের চরম ক্ষতি ও চাষাবাদের ক্ষতি হচ্ছে আমরা প্রশাসনের সহযোগীতা চাই। মঙ্গলবার দুপুরে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাইস মিল চাতালের পাশে মুরগী ফার্মটি ভিতরে নোংরা, অপরিষ্কার ও লিটারের আবর্জনার স্তূপ। যেখানে সেখানে মাছির রাজত্ব। পোল্টি মুরগী ফার্মের পাশের এক বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায় ঘরের ভিতরে যেখানে সেখানে মাছি আর মাছি। পাশের জমিতেও ভুট্টা ক্ষেতে এতো মাছি যা গননা করে শেষ করা যাবে না। হঠাৎ মাছির উপদ্রবের ঘটনায় যা এলাকায় চাঞ্চল্য তৈরী করেছে।
এ বিষয়ে পোল্টি ফার্ম মালিক নাসিরুল ইসলাম জানান, মাছির এ সমস্যা আগে ছিলো না। হঠাৎ করে বৃষ্টি হওয়ায় মাছি উপদ্রবের সংখ্যা বেড়ে গেছে। বিশেষ করে করোনা ভাইরাসের জন্য ঔষধ পাওয়া যাচ্ছিলো না তাই কিছুটা মাছির সংখ্যা বেড়ে গেছে। আমি অতিদ্রুত মাছির বিস্তার রোধ করতে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
এ বিষয়ে ৫ নং বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নূরে আলম সিদ্দিকী মুক্তি জানান, বড় বালিয়া গ্রামে ঘনবসতি এলাকায় যে পোল্টি ফার্ম করা হয়েছে তা বেআইনি। বিষয়টি আমি শুনেছি সেখানে স্থানীয় ইউপি সদস্য মাসুদকে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের সাথে কথা বলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply