বিশেষ প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় একসময়ের জেএমবি মান্নান গ্রুপের হামলায় এক আওয়ামীলীগ নেতা ও তার দুই সহযোগী গুরুতর আহত হয়েছেন।
মারাত্মক জখমের শিকার ঐ নেতার নাম মকছেদ আলী প্রামাণিক। তিনি উপজেলার গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি।
আহত তার সহযোগীরা হলেন, সান্টু ৩৮, ও বল্টু ৩৫ ।
ঘটনাসূত্রে জানা যায়, গত বুধবার আওয়ামীলীগ নেতা মোকসেদ আলী প্রামানিক, সান্টু ও বল্টু উপজেলার মারিয়া ইউপি থেকে তাদের ব্যক্তিগত কাজ শেষে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফেরার পথে রাত সাড়ে ১১ টার দিকে কোনোপাড়া স্কুল মাঠ সংলগ্ন এলাকায় একসময়ের জেএমবির সদস্য মান্নানের নেতৃত্বে পূর্ব থেকে অঁৎ পেতে থাকা ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল তাদের পথরোধ করে তাদের উপর হামলা চালায়।
এসময় মান্নানের ছেলে সাদ্দাম ও জিল্লুসহ মান্নানের সন্ত্রাসী বাহিনী তাদের তিনজনকে রামদা ও হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে।
ঘটনার একপর্যায়ে এলাকাবাসী টের পেয়ে ছুটে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে এলাকার লোকজন তাদের তিনজনকে উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে পাঠায়।
হামলায় আহত সান্টু জানান,এঘটনায় আলতাবের ছেলে আফজাল ৩৬, মোজাম্মেলের দুই ছেলে আশরাফুল ৩৫ ও সুফেন ২৫ ছাড়াও বিএনপি'র চাঁন মেব্বারের ছেলে বিদ্যুৎ ৩২, ফজলু ৪০ পিতা মৃত পলয়, মৃত কাদেরের ছেলে জেএমবির এক সময়ের অন্যতম সদস্য নিজামুল হক ডাবলু ও তার সহযোগী ইসমাইলের ছেলে লালু ২৮, জালালের ছেলে বাচ্চু ৩৬ সহ অজ্ঞাত আরও অনেকে তাদের উপর হামলা চালায়। প্রথমে রামদা দিয়ে মোটরসাইকেল চালানো অবস্থায় সান্টুর বাম হাতে ও মকসেদের নাকের উপর কোপ দেয়। এই ঘটনায় ২১ জনকে আসামি করে বাগমারা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুইজনকে আটক করে জেলহাজতে পাঠায়। তারা হলেন,পলয়ের দুই ছেলে মকসেদ সরদার ৩৫ ও দেলবর হোসেন ৪০। বর্তমানে তারা দু'জন জামিনে আছে বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসী জানায়, আওয়ামীলীগ নেতা ও মৎস্য ব্যবসায়ী মোকসেদ আলী প্রামাণিক ও তার সহযোগীদের সাথে মান্নান ও আক্কাছ আলী মাষ্টার ওরফে সর্বহারার মাষ্টার ও জেএমবির এক সময়ের সদস্য নিজামুল হক ডাবলুর সাথে কোনোপাড়ার সবসার দিঘীতে মাছ চাষকে কেন্দ্র করে পূর্বের দন্দ্ব রয়েছে। তারই জের ধরে জেএমবি মান্নানের ও তার দুই ছেলের নেতৃত্বে এই হামলা করা হয়।
উল্লেখ্য ২০০৪ সালের এপ্রিলে বাগমারায় বাংলাভাইয়ের আবির্ভাবের পর তার বাহিনীতে যোগ দেয় মান্নান ও নিজামুল হক ডাবলু। বাংলা ভাইয়ের সাথে হাত মিলিয়ে কনোপাড়া, মির্জাপুর ও সাজুড়িয়া গ্রামে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।
এদের বিরুদ্ধে জেএমবি সংক্রান্ত একাধিক মামলা চলমান রয়েছে। বাংলা ভাইয়ের ফাঁসি কার্যকরের পরও থেমে নেই মান্নান,ডাবলুসহ কোনপাড়া গ্রামের আরো অনেক জেএমবি সদস্য । তারা একের পর এক ঘটিয়ে চলেছে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ। হুমকি-ধামকি, জবরদখল মারপিটসহ সন্ত্রাসী কার্যকলাপ তাদের একমাত্র পেশা হয়ে উঠেছে।
থানায় মামলা হলেও আসামিপক্ষের লোকজন দেদারছে এলাকার মাঠে-ঘাটে বাজারে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন বাদীপক্ষের এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাগমারা থানার ওসি (তদন্ত) আফজাল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওই ঘটনায় দুইজনকে আটক করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে। তারা একে-অপরকে দোষারোপ করছেন। আসামিরা এলাকায় ঘোরাঘুরি করলে পুলিশ তাদের অবশ্যই আটক করবে বলে জানান তিনি।
You cannot copy content of this page