মামুন কৌশিক নেত্রকোণা প্রতিনিধি :

মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০ টায় পুলিশ সুপার নেত্রকোণা অবগত হন নেত্রকোণা জেলার হাওর অধ্যুষিত থানা খালিয়াজুরীর নগর ইউনিয়স্থ চানপুর গ্রামের কসমাকান্দা হাওরের তীরে ১৭ টি পরিবারের ৬০ জন লোক প্রায় দুই সপ্তাহ যাবৎ মানবেতর জীবন যাপন করছে।

তিনি সরকারী কাজে কেন্দুয়া থানা এলাকায় অবস্থান করায় তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে গমনপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অফিসার ইনচার্জ,খালিয়াজুরী থানা ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( অপরাধ), নেত্রকোনাকে নির্দেশ প্রদান করেন।

উল্লেখিত কর্মকর্তাদ্বয় যথাক্রমে নেত্রকোনা ও খালিয়াজুরী থেকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ সদস্য, খাদ্য সামগ্রী, মাস্কসহ কসমা হাওরের তীরে উপস্থিত হয়ে সার্বিক বিষয় জানার প্রয়াস চালান।

ঘটনার নেপথ্যে জানা যায় যে, উক্ত ১৭ টি পরিবার ঢাকা, নারায়নগঞ্জ ও গাজীপুর এরাকায় বিভিন্ন গার্মন্টেসে কর্মরত।

লকডাউনের কারনে তারা ১৩ ও ১৪ এপ্রিল নিজ এলাকায় বসবাসের জন্য বর্তমান ঠিকানা ত্যাগ করেন। কিন্তু চানপুর এলাকাবাসীর মাতাব্বর শ্রেণীর বর্বরোচিত ও পাশবিক সিদ্ধান্তের কারণে তারা স্বগৃহে অবস্থান করতে পারেনি-তাদের জায়গা হয় কসমাকান্দা হাওরের তীরে খোলা আকাশের নীচে ছোট্ট তাবু আকৃতির আবদ্ধ স্থানে, যা মানবিক সংস্কৃতির চরম লঙ্ঘন।

সার্বিক বিষয়ে পুলিশ সুপার নেত্রকোনাকে অবহিত করা হলে তিনি খালিয়াজুরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকের সহিত উল্লিখিত পরিবারের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ নেন এবং তাৎক্ষনিক উক্ত পরিবারের সদস্যদের নিজ বাড়িতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কোয়ারেন্টাইনে রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে নির্দেশ প্রদান করেন। তাঁর নির্দেশে ১৭ টি পরিবারের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী ও মাস্ক বিতরণ করা হয়।

পুলিশ সুপার নেত্রকোনা প্রশাসনকে অবগত না করে উল্লিখিত বর্বরোচিত সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রত্যক্ষ ও নৈপথ্যের ব্যক্তিদের খোঁজে বের করে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ প্রদান করেন।

পুলিশ সুপার নেত্রকোনার তড়িৎ পদক্ষেপ ও মানবিক পুলিশিং এ ১৭ টি পরিবারের ৬০ খানা মুখে স্বস্তির হাসি ফুঁটে উঠে।

এ জয় পুলিশের নয়, এ জয় মানবিকতার; বর্বরতা ও পাশবিকতাকে ছিন্ন করে মানবিকতার জয়।