জবি প্রতিনিধিঃ পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)। সারাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মেধাবী শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করছেন সম্পূর্ণ আবাসিক সেবামুক্ত এই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। হল না থাকায় এখানকার বেশিরভাগ শিক্ষার্থী মেসে থেকে টিউশন করিয়ে পড়াশোনার খরচ চালায়। অনেক শিক্ষার্থী অসচ্ছলতার জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পার্ট টাইম কাজও করেন৷ বর্তমানে দেশের করোনা পরিস্থিতিতে টিউশনসহ সবকিছুই বন্ধ আছে। এমতাবস্থায় মেস ভাড়া,বাসা ভাড়া,খাদ্য সংকটসহ নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
এমন পরিস্থিতিতে জবির বিপদগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার জন্য এগিয়ে এসেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল তরুণ শিক্ষার্থী। ‘করোনা মোকাবেলায় জবিয়ানের পাশে জবিয়ান’ নামক ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে কার্যক্রন চালাচ্ছেন তারা। বিপদগ্রস্তদের পরিচয় গোপন রেখে দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে তারা কারো বাসায় খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন, কাউকে বিকাশে আর্থিক সহায়তা পাঠাচ্ছেন, কাউকে বা দেশের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ারও ব্যবস্থা করেছেন।
এই প্লাটফর্মের অনত্যম সংগঠক ১২ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তাওসিব মাহামুদ সোহান বলেন, এরই মধ্যে ৩০ দিনে ৩০০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থীকে প্রায় ৪ লক্ষ ৯ হাজার ২০০ টাকার উপহার পৌঁছেছি আমরা। এখানে সহয়তা বা সহোযোগিতার কিছু নাই। আমরা আমাদের সহপাঠীদের উপহার পাঠাচ্ছি।
এই প্লাটফর্মের সংগঠক ৮ম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাইসুল ইসলাম নয়ন বলেন, ‘দেশে যখন করোনার মতো দুর্যোগ চলছে তখন আমরা শুধুমাত্র আমাদের দায়িত্বটুকু পালন করতে চেয়েছি যাতে করে জগন্নাথের কোনো শিক্ষার্থী এই দুর্যোগে তাকে একা না ভাবে। আমরা সবাই যদি এগিয়ে আসি,একটু একটু করে শ্রম দিই ,শুধুমাত্র সরকার বা প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে না থেকে নিজ দায়িত্বটুকুও পালন করি কেবল তখনই করোনা মোকাবেলা সম্ভব হবে।’
সংগঠকের আরেক সক্রিয় সদস্য কনিক স্বপ্নীল বলেন, দেশের এই দুঃসময়ে হলহীন জবিয়ানদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য জবি প্রশাসনকে সর্বোচ্চ আহ্বান করা হচ্ছে। জবিয়ানদের নিয়েই ত জবি। তারা যদি আজ
ভালো না থাকে তাহলে প্রতিষ্ঠানের সার্থকতা রইল কোথায়?
অপর সংগঠক ১৩ তম ব্যাচের সুবর্ণ আসসাইফ বলেন, রমজান ও ঈদেও উপহার আদান-প্রদান যাতে অব্যহত থাকে তাই আমরা জবির শ্রদ্ধেয় শিক্ষক ও সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীদের কাছে যাকাত আহ্বান করেছি। বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতিটি জবিয়ান যেনো তার পরিবার নিয়ে হাসিমুখে ঈদ উদযাপন করতে পারে তাই আমরা সকল অনুরোধ করেছি যার যতটুকু সামর্থ্য যেনো এগিয়ে আসেন।
এছাড়াও এই প্লাটফর্মে আরো কাজ করছেন জহির রায়হান (০৮), মুন্না (১১), আলামিন (১১), কনিক (১২), জুবায়ের (১২), মিশু (১২), লিমন (১২), জহির উদ্দিন (১৩), আবু বক্কর(১৩), এরফান (১৩), সীমান্ত (১৩), হীরা (১৩)।
Leave a Reply