বিশেষ প্রতিনিধিঃ
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার মসূয়া গ্রামে বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী বিশ্ব নন্দিত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের পৈত্রিক বাড়িতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে এবার হচ্ছে না বৈশাখী মেলা।
প্রতি বছর বৈশাখের শেষ বুধবার থেকে সপ্তাহ ব্যাপী এ মেলার প্রচলন চলে আসছে সত্যজিৎ রায়ের পূর্ব পুরুষ জমিদার হরি কিশোর রায় চৌধুরীর সময়কাল থেকে। শ্রী শ্রী কাল ভৈরবী পূজা উপলক্ষে তিনি এ মেলার প্রচলন শুরু করে ছিলেন। তার ধারাবাহিকতায় আজ অবধি চলে আসছিল এ মেলা।
বাড়ির সামনের খোলা মাঠ, পুকুরঘাট সংলগ্ন খোলা জায়গায় মাটির পুতুল, হাড়ি-পাতিল, খেলনা, তৈজসপত্র, কসমেটিক, কাঠের জিনিস ইত্যাদি নানা রকম স্টলে মেলা উপলক্ষে মুখরিত হয় রায় বাড়ির এ প্রাঙ্গণ।
নাগরদোলা ও চরকিতে চরে বিনোদনে মেতে ওঠে শিশু কিশোর। প্রতিদিনই দূরদূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ মেলা পরিদর্শন, কেনা কাটা ও বিনোদনের জন্য আসে।
সমাগম হয় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত কবি-সাহিত্যিকগণের। সাহিত্য সংগঠনগুলো আসর বসায় গল্প কবিতা আর আড্ডার।
কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে এ বছর হচ্ছে না রায় বাড়ির এ বৈশাখী মেলা।
এ বাড়িতে ১৮৬০ সালে জন্ম গ্রহণ করেন সত্যজিৎ রায়ের পিতামহ প্রখ্যাত শিশু সাহিত্যিক উপেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরী। ১৮৮৭ সালে জন্ম গ্রহণ করেন সত্যজিৎ রায়ের পিতা ছড়াকার সুকুমার রায়।
দেশ বিভাগের পূর্বে উপেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরী সপরিবারে কলকাতা চলে যান। বর্তমানে বাড়িটি সরকারের রাজস্ব বিভাগের তত্বাবধানে রয়েছে।
সম্প্রতি পর্যটন বিভাগের উদ্যোগে একটি বাংলো নির্মান, পুকুর ঘাট ও রাস্তা সংস্কার করা হয়েছে। মেলা উপলক্ষে এগুলো কিছুটা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা হলেও সারা বছর থাকে অযত্ন অবহেলায়।
ক্ষয়ে যাওয়া বাড়ির শেষ চিহ্নটুকু সংস্কার, প্রাতিষ্ঠানিক ভবন, গ্রন্থাগার বা আরও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে রায় বাড়িটি সংরক্ষণের জন্য পর্যটন মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
কটিয়াদী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুশতাকুর রহমান বলেন, মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে মানুষের জীবন যেখানে শংকিত, মানুষ যখন ঘরবন্দি, সেখানে তো আর মেলা করা সম্ভব না। তবে এ মহামারীর প্রাদুর্ভাব কেটে গেলে আবারও হয়তো মেলাসহ সামাজিক উৎসবগুলো প্রাণ ফিরে পাবে।
Leave a Reply