অমরেশ দত্ত জয়ঃ
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে বিদেশ ফেরত স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন হয়েছে। ১৩ই মে বুধবার সন্ধ্যায় গৃদকালিন্দিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।এ ঘটনায় নিহত স্ত্রীর মা ও ছোট ভাই আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে।ফরিদগঞ্জ থানা সূত্রে জানা যায়,ছুরিকাঘাতে নিহত স্ত্রীর নাম তানজিনা আক্তার রিতু (২০)।
সে কলেজ পড়ুয়া ছাত্রী।আটক স্বামীর নাম আল মামুন মোহন(৩২)।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,আটক আল মামুন মোহন রায়পুরের শায়েস্তানগর গ্রামের মনতাজ মাষ্টারের ছেলে।আর মেয়ে তানজিনা আক্তার রিতু ফরিদগঞ্জের রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের গৃদকালিন্দিয়া গ্রামের খাঁ বাড়ির সেলিম খানের মেয়ে।প্রায় আড়াই বছর পূর্বে তাদের বিয়ে হয় এবং বিয়ের এক বছর পর ছেলে সৌদি চলে যায়।এরপর দেড় বছর পর সৌদি আরব থেকে ফেরত আসে এবং বেকার অবস্থায় ঘুরাফেরা করে। স্থানীয় সূত্রে ঘটনা প্রসঙ্গে আরো জানা যায়, বুধবার বিকালে স্বামী মোহন তার নিজ বাড়ি রায়পুর থেকে শশুড় বাড়িতে আসে। ইফতারের পূর্বে স্ত্রী তানজিনা আক্তার রিতুর সাথে কথাকাটাকাটি হয়।আর এক পর্যায়ে রিতুকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে।তখন রিতুর মা পারভীন আক্তার ও ভাই প্রান্ত আত্মচিৎকার শুনে এগিয়ে আসলে তাদেরকেও ছুরিকাঘাত করে বসে মোহন।পরে সে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয় লোকজন টের পেয়ে তাকে আটকে রেখে গণধোলাই দেয়। পরে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এ ব্যপারে ফরিদগঞ্জ থানার এস আই কাজী মো: জাকারিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান,মোহন কে আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে।গুরুতর আহত অবস্থায় রিতু ও তার মা পারভীন(৪৫) কে ফরিদগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক রিতুকে মৃত ঘোষণা করে। আশংকা জনক অবস্থায় পারভীন আক্তার কে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া আহত ভাই প্রান্ত(১৭) কে গৃদকালিন্দিয়া বাজারে চিকিৎসা দেওয়া হয়।রিতুর লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।এ ব্যপারে নিহত রিতুর মামী তাছলিমা বেগম জানায়, সৌদি আরব থেকে মোহন চলে আসার পর বেকার অবস্থায় ছিল। বিয়ের সময় রিতুকে দেয়া স্বর্ণালংকার সবকিছু সে বিক্রি করে ফেলেছিলো। তার বাড়ি বসবাসের
অনুপযোগী থাকায় রিতু বাপের বাড়ীতে থেকেই পড়ালেখা করতো। এই সব বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ চলছিলো।আর এর জের ধরেই রিতুকে হত্যা করে এবং তার মা ও ভাইকে আহত করে মোহন।এদিকে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশের হাতে আটক অবস্থায় মোহন চিৎকার করে জানায়, তার স্ত্রী রিতু পরকিয়ায় লিপ্ত ছিলো। সে বিদেশ থেকে যে টাকা-পয়সা পাঠিয়েছে তার পাঠানো সব অর্থ তারা আত্মসাৎ করেছে।শুধু তাই নয় রিতু তাকে পাত্তা পর্যন্ত দিতো না। এতে ক্ষিপ্ত হয়েই সে ছুরিকাঘাত করে রিতুকে হত্যা করেছে।এ ব্যপারে ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রকিব জানান,নিহত রিতুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘাতক মোহনকে আটক করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
You cannot copy content of this page