1. admin@protidinershomoy.com : admin :
  2. nasimriyad24@gmail.com : ডেস্ক রিপোর্ট : ডেস্ক রিপোর্ট
  3. wp-configuser@config.com : James Rollner : James Rollner
বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:২৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম
ঠাকুরগাঁওয়ে ইটভাটায় অভিযান,২ লাখ টাকা জরিমানা নিজ হাতে মাঠ পরিষ্কার করলেন জেলা প্রশাসক ঠাকুরগাঁওয়ে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও বিনামূল্যে পুষ্টিসমৃদ্ধ জিংক ধানের বীজ বিতরণ ঠাকুরগাঁওয়ে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে পুষ্টিসমৃদ্ধ জিংক ধানের বীজ বিতরণ ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগেঞ্জ জিংক ধানের সম্প্রসারণে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও বীজ বিতরণ বেকারি কারখানায় বিএসটিআইয়ের অভিযানে ১০ হাজার টাকা জরিমানা বিএসটিআই’র অভিযানে ব্যাটারি পানি কারখানায় জরিমানা ও সিলগালা রাবি আন্ত:বিভাগ ফুটবল প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন মনোবিজ্ঞান ঠাকুরগাঁওয়ে বিনামূল্যে মেডিকেল সেবা পেলেন ২শতাধিক মানুষ রাজশাহী বরেন্দ্র কলেজে বিজয় দিবস পালিত

কালের আবর্তনে সলঙ্গা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম- বাংলার চিরায়িত সেই কাঠের তৈরি তেলের ঘাঁনি!

এম,দুলাল উদ্দিন আহমেদ
  • সময় : রবিবার, ২৪ মে, ২০২০
  • ২০৭ জন পড়েছেন

সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থেকে দিনদিন হারিয়ে যাচ্ছে আবহমান বাংলার হাজার বছরের ঐতিহ্য তেলের ঘাঁনি। সময়ের পরিবর্তন আর আধুনিক যন্ত্রপাতির আদলে বদলে যাচ্ছে এপেশায় জড়িত মানুষের জীবন যাত্রা। এক সময় মানুষের রান্না বান্না ও গায়ে মাখার জন্য যে তেল ব্যবহৃত হতো,তার একমাত্র অবলম্বন ছিল কাঠের তৈরী ও গরুর কাঁধে ঘুরানো ঘাঁনির তেল।

কালের আবর্তনে গ্রাম-বাংলার চিরায়িত সেই ঘাঁনি মেশিন এখন বিলিনের পথে। বাংলাদেশ এক রুপ ও বৈচিত্রময় দেশ। এদেশে হাজার রকমের সংস্কৃতি ও গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য ধারণ করা হয়। তেলের ঘাঁনি তার মধ্যে অন্যতম একটি গ্রাম-বাংলার প্রচীন ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন। আর এই ঘাঁনি মেশিনের রুপকার হচ্ছে কলু সম্প্রদায়। যারা ঘাঁনি মেশিন দিয়ে সরিষা মাড়াই করে তেল বের করে মানুষের চাহিদা পূরণ করে থাকে। তারা বংশ পরম্পরায় এ কাজ করে আসছেন। এই কুলুরাই এক সময় গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে আগের দিনের রাজা-বাদশা ও জমিদারদেরও তেলের চাহিদা মেটানোর একমাত্র উপায় ও মাধ্যম ছিলো। কলু সম্প্রদায়েরও একমাত্র আয়ের অবলম্বন ছিলো ঘাঁনিতে সরিষা মাড়াই করে তেল তৈরী করা। কাঁক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কুলু বাড়ির নারী-পুরুষের ব্যস্ত সময় কাটতো এই ঘাঁনি মেশিনের সাথে।

গ্রামের মানুষ যখন সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করতো তখন কমপক্ষে এক সপ্তাহ আগে কুলুদের কাছে বায়না দিতে হতো তেলের জন্য। কিন্তু আধুনিক যান্ত্রিকয়তার অগ্রাসনে গ্রামগঞ্জের এ যুগের প্রজন্মের কাছে কাঁঠের তৈরী ঘাঁনি এখন শুধুই যেন রূপকথার গল্প। এখন সরিষা ও নারকেল মাড়াইসহ ঘাঁনি মেশিনের যাবতীয় কাজ করছে ইঞ্জিনচালিত মেশিন। তাই গ্রাম-বাংলার প্রচীন ঐতিহ্য কঠের তৈরী ঘাঁনি আজ অসহায় আধুনিক মেশিনের কাছে।

প্রযুক্তির এই যুগে এখন সেই স্থান দখল করে নিয়েছে উন্নত প্রযুক্তির মেশিন। বিদ্যুৎ চালিত এ প্রযুক্তিতে অল্প সময়ে অনেক কাজ করা যায়। উন্নত প্রযুক্তির মেশিন তৈরীর ফলে সুখ প্রিয় মানুষ আর সময় নষ্ট করে এবং সারাদিন বসে থেকে ঘাঁনি দিয়ে সরিষা মাড়াই করে তেল তৈরী করতে চায় না। ফলে কালের বিবর্তে এবং আধুনিক যন্ত্রপাতির কাছে হার মেনে কাঁঠের তৈরী এই ঘাঁনি এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে।

সরেজমিনে সলঙ্গা ইউনিয়নের বনবাড়ীয়া, জগজীবনপুর,ধুবিল ইউনিয়নের আমশড়া, খারিজাঘুঘাট ও ঘুড়কা ইউনিয়নের লাঙ্গলমোড়া গ্রামে গিয়ে কয়েকটি কলু পরিবারের দেখা মেলে। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়,আধুনিকতার ছোঁয়ায় তারা পেশা পরিবর্তন করে এখন ঝুঁকে পড়েছে অন্য পেশায়,আবার অনেকে পাড়ি জমিয়েছে অন্য দেশে। তারপরও প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে জরাজীর্ণ কিছু কলু পরিবার এখনও বাপ-দাদার ঐতিহ্য হিসেবে ধরে রেখেছে কাঠের তৈরী ও গরুর কাঁধে ঘুরানো এই ঘাঁনির পেশাকে। লাভহীন এই পেশাকে বর্তমানে বাপ-দাদার পেশা রক্ষায় আঁকড়ে রেখেছে মুষ্টিমেয় কিছু কলু পরিবার। যাদের অনেকেই অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে।

সলঙ্গা থানার বনবাড়ীয়া গ্রামের আব্দুল আজিজ জানান,ঘাঁনিগাছ থেকে বছরের আশ্বিন,কার্তিক ও অগ্রহায়ণ এই তিন মাসে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা করে আয় হয়ে থাকে। অন্য মাসগুলোতে একটি বা দুইটি ঘাঁনের কাজ হয়। তবে এ কাজ থেকে যে আয় আসে তা দিয়ে সংসার চলেনা। যে কারণে আমরা দিনমুজুরীর কাজ করি আর বাড়ীর গৃহবধুরা কাজের ফাঁকে এ ঘাঁনির কাজ করে থাকেন। আবার বাবা-দাদার এ পেশা ধরে রাখার জন্য সরিষা কিনে এনে নিজেরাই ঘাঁনিতে ভাঙ্গিয়ে তেল বের করি এবং ওই তেল ভারের মাধ্যমে কাঁধে বহন করে বাড়ীতে বাড়ীতে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করি। শুধুমাত্র বাবা-দাদার পেশাকে ঐতিহ্য হিসেবে ধরে রেখেছি।

গ্রাম-বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য এই ঘাঁনি শিল্প যাতে হারিয়ে না যায় সে বিষয়টি বিবেচনা করে এই শিল্প রক্ষার জন্য সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। কেননা ঘাঁনিতে ভাঙ্গানো তেল অনেক পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত। কিন্তু সময়ের সাথে মানুষের মনেরও অনেক পরিবর্তন ঘটেছে। কারণ মানুষ অল্প সময়ের মধ্যে অনেক কাজ করতে চায়,তাই উন্নত প্রযুক্তির যুগে গরুর কাঁধে ঘুরানো ঘাঁনি এখন বিলুপ্ত প্রায়। তবে সরকার পৃষ্ঠপোষকতায় হাজার বছরের ঐতিহ্য এই ঘাঁনি বেঁচে থাকতে পারে বলে মনে করেন সচেতন মহল।

সংবাদটি আপনার সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার দিন

এই ক্যাটাগরীর আরোও সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশেষ সংখ্যা

You cannot copy content of this page