স্টাফ রির্পোর্টারঃ
শেখ শাহাজালাল ওরফে বোমা শাহাজালাল। সাতক্ষীরা কালিগঞ্জের কুশুলিয়া ইউনিয়নের বাজারগ্রাম রহিমপুর গ্রামের শেখ আলী হোসেন এর পুত্র এবং একই গ্রামের মৃত শেখ সাহিদুল্লাহ এর জামাতা। পেশায় মৎস্য সেটের একজন পানি তোলা শ্রমিক। মাতৃকুল ও পিতৃকুলের প্রায় সবাই বিএনপি’র রাজনীতির সাথে জড়িত। চাচাত ভাইয়েরা বিএনপি’র রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে পদাসীন থাকায় ২০০৬ সাল পর্যন্ত তাকে বিএনপি’র অনেক মিছিল মিটিংয়ে দেখা যায়। ওয়ান ইলেভেন পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামীলীগ সরকার গঠন করলে তিনি রাতারাতি পাল্টি মারেন। শ্বশুর বাড়ির সূত্র ধরে শ্বশুর এর চাচাত ভাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ ওয়াহেদুজ্জামান এর সংস্পর্শে আসেন। প্রথম দিকে তিনি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি’র বডিগার্ড হিসেবে কর্মরত হন। আস্তে আস্তে সুকৌশলে আওয়ামী রাজনীতিতে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির হস্তক্ষেপে উপজেলা তরুনলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০১৩ সালে আওয়ামীলীগ টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় গেলে পেশী শক্তির জোরে তৎকালীন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ ওয়াহেদুজ্জামান উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বেড়ে যায় শেখ শাহাজালাল এর ক্ষমতা। উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি মনোনিত হন। প্রথম দিকে নিজের শ্যালক শেখ সাহিদুল্লাহ এর দুই পুত্র শেখ রেজাউল করিম রেজা ও শেখ আনিছুর রহমানের সমন্বয়ে গড়ে তোলেন সন্ত্রাসী বাহিনী। ধীরে ধীরে এ বাহিনীর কলেবর বৃদ্ধি করেন। টেন্ডারবাজী, জমিদখল, চাঁদাবাজি, ঘেরলুট সহ ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীর কর্মকান্ড শুরু করেন। ডাকাতির সাথেও তার সম্পৃক্ততার অনেক তথ্য আছে। ২০১৩ সালের সহিংসতা পরবর্তী সময়ে জামায়াতের নেতা-কর্মীরা বাড়ি থেকে পালালে সেই সুযোগে সে এবং তার শ্যালকদ্বয় জামায়াত নেতাদের বাড়িতে রাতে রাতে অভিযান চালান। স্বামীদের বাড়িতে ফিরিয়ে এনে দেবেন বলে জামায়াত নেতা-কর্মীদের স্ত্রীদের কাছ থেকে নগদ অর্থ, অলংকার হাতিয়ে নেন। এমনকি অনেক স্ত্রীদের শ্লীলতাহানী করেন। উপজেলার ১নং কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান এ,কে,এম মোশাররফ হত্যাকান্ডে নেতৃত্বদানকারী জলিল ডাকাতের সাথে সন্ত্রাসী শাহাজালাল এর পরিচয় হয় এবং আস্তে আস্তে দুজনের মধ্যে ঘনিষ্টতা বড়ে। কুখ্যাত ডাকাত জলিলকে ধর্ম ভ্রাতা মানেন। এতে তার শক্তি আরো বেড়ে যায়। উপজেলাব্যাপী তার কর্মকান্ড আরো বিস্তার লাভ করে। এভাবে বিভিন্ন অবৈধ কর্মকান্ডের মাধ্যমে শেখ শাহাজালাল প্রায় কোটিপতি বনে যান। যেদিন মোশাররফ চেয়ারম্যান হত্যাকান্ড পরিচালিত হয় সেদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তাকে ডাকাত জলিলের সাথে কয়েক দফা কালিগঞ্জ সদরে ঘুরতে দেখার তথ্য আছে। প্রায় আড়াই থেকে তিন বছর পূর্বে তার বাড়ির আঙ্গিনায় বোমা তৈরির সময় বিস্ফোরন হলে বোমা মামলার আসামী হয়ে কিছুদিন সে আত্নগোপনে চলে যায়। পরবর্তীতে সে তার নেতার প্রচেষ্টায় জামিন লাভ করে এবং এলাকায় ফিরে আসে। ২০১৯ সালে তাকে আশ্রয়দাতা নেতা উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ ওয়াহেদুজ্জামান প্রয়াত হলে দিশেহারা হয়ে কিছুদিন বাড়িবন্দি থাকেন। সর্বশেষ উপজেলা নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক সাঈদ মেহেদী উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে এবং সন্ত্রাস দমনের অঙ্গিকার করলে শাহাজালাল বাড়ি থেকে পালিয়ে ঢাকায় চলে যায়। উপজেলা আওয়ামীলীগের মধ্যে গ্রুপিং থাকার কারনে কিছুদিন পর একটি গ্রুপেে হাত ধরে এলাকায় ফিরে আসে। আবারো তার পূর্বের কর্মকান্ড পরিচালিত করার জন্য জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তার বিরুদ্ধে বোমা মামলা, চেয়ারম্যান মোশাররফ হত্যাকান্ড মামলা সহ অনেক মামলা রয়েছে। সাম্প্রতিক তার বিরুদ্ধে একটি নারী নির্যাতন ও ধর্ষনের মামলা হয়েছে। যে বাড়িতে সুন্দরী স্ত্রী ও মেয়ে রয়েছে, সেই বাড়ির আঙ্গিনায় প্রায়ই রাতে তাকে দেখা যায়। এনিয়ে এলাকার পুরুষ সদস্যরা তাদের সুন্দরী স্ত্রী ও মেয়েদের নিয়ে মারাত্নক টেনশনে আছে। এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের আইজিপি, র্যাব মহাপরিচালক সহ সংশ্লিষ্ট সকলের নিকট এই সন্ত্রাসী বোমাবাজ শাহাজালাল এর ক্রসফায়ার দাবী করেছেন এলাকার অভিভাবক সহ সাধারন জনগন।
Leave a Reply