সুজন ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি ঃ ঠাকুরগাঁওয়ে করোনাভাইরাস প্রার্দুভাবের মধ্যে মাস্ক না পরে বাড়ির বাইরে আসা লোকজনদের সচেতন করতে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় উৎসাহ দিতে শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক ড. কেএম কামরুজ্জামান সেলিম জানান, বৃহস্পতিবার সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়নের চৌধুরীহাট ও বরুনাগাঁও বাজারে মাস্ক না পরে আসা লোকজনদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফজলে রাব্বানি চৌধুরী এ শপথবাক্য পাঠ করান ।
এ দিন রাত ১০টার দিকে জেলা প্রশাসকের ফেইসবুকে শপথবাক্য পাঠ করানোর ভিডিওটি পোস্ট করার পরপরই তা ভাইরাল হয়ে পড়ে।
ভিডিওর কমেন্টে নুসরাত জাহান নামে একজন মন্তব্য করেন, “খুব-ই ভাল হয়েছে। এগিয়ে যান; একই সাথে নিরাপদে থাকার চেষ্টা করুন।”
ঠাকুরগাঁও পৌরসভার প্যানেল মেয়র দ্রৌপদী দেবী আগরওয়ালা মন্তব্য করেন, “খুব সুন্দর উদ্যোগ।”
শানজিদা সিদ্দিকা নামে একজন লেখেন, “সত্যি এ উদ্যোগ প্রশসংশনীয়। এমন কার্যক্রম অব্যাহত থাকুক। তাহলে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে কিছুটা হলেও কাজে আসবে।
ভিডিওতে দেখা যায়, ৫ জন ব্যক্তি মাস্ক ছাড়া দাঁড়িয়ে রয়েছেন, তাদের সামনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফজলে রাব্বানি চৌধুরী হ্যান্ড মাইকের মাধ্যমে তাদের শপথবাক্য পাঠ করাচ্ছেন; তার সঙ্গে পুলিশও রয়েছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হ্যান্ড মাইকে বলছেন, আর কোনদিন মাস্ক ছাড়া বাহিরে আসব না। যে কয়দিন করোনা আছে, আমি মাস্ক পড়ে বাহিরে আসব। নিজে নিরাপদ থাকব, অপরকেও নিরাপদ রাখব। নিজে মাস্ক পড়ব, অপরকেও মাস্ক পড়তে উৎসাহিত করব।
এ উদ্যোগের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফজলে রাব্বানি চৌধুরী বলেন, কয়েক জন ব্যক্তি মাস্ক ছাড়া হাটবাজারে ঘুরছিলেন। তাদের আটক করে স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে ধারণা দিয়েছি এবং মাস্ক পড়ার জন্য শপথবাক্য পাঠ করিয়েছি। এ সময় তারা প্রত্যেকেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন পরবর্তীতে বাইরে বের হলে মাস্ক পড়েই বের হবেন এবং অপরকেও মাস্ক পড়তে উৎসাহিত করবেন। পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, কিভাবে মানুষদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা যায় সেই লক্ষ্য কাজ করছি। খারাপ আচরণের মাধ্যমে নয়, ভাল আচরণের মাধ্যমেই মানুষকে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য উৎসাহিত করেছি
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, আমাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা প্রতিনিয়ত জেলার বিভিন্ন এলাকায় কাজ করছে। কারণ একটাই মানুষ যেন এই প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পায়। করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে হলে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে সকলকে।
এ দিকে বৃহস্পতিবার জেলার ৫ উপজেলায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারি নির্দেশ অমান্য করে নির্ধারিত সময়ের পরেও দোকান খোলা রাখা ও মাস্ক পরিধান না করায় বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ২০টি মামলায় অর্থদণ্ড প্রদান করা হয় বলে জানান জেলা প্রশাসক।
জেলার সিভিল সার্জন ডা. মাহফুজুর রহমান সরকার বলেন, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ঠাকুরগাঁও জেলায় ১৫৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে দুইজন মারা গেছেন; সুস্থ্ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫৭ জন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে হলে সরকারের নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার আহ্বানও জানান তিনি
Leave a Reply