আল আমিন হোসেন ইতালি থেকেঃ
জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা করেছে সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগ।গতকাল বৃহস্পতিবার ইউরোপের বিভিন্ন দেশের আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণে অনলাইনে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি এম নজরুল ইসলাম।আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ।
আলোচনা সভার শুরুতেই শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুননেসা, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে শাহাদাৎবরণকারী সকল সদস্য, জাতীয় ৪ নেতা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সব শহীদ ও নির্যাতিত মা-বোনদের।
প্রধান অতিথি ড.হাছান মাহমুদ বলেন,বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস। তিনি ২০০৮ সালের এই দিনে সংসদ ভবন চত্বরে স্থাপিত বিশেষ কারাগারে দীর্ঘ ১১ মাস কারাভোগের পর মুক্তি লাভ করেন। মূলত ১১ জুন শেখ হাসিনার কারা মুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের মুক্তি হয়েছে।
১/১১-এর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বিভিন্ন মিথ্যা-বানোয়াট, হয়রানি ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করা হয়। শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে বাংলার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারকে অবরুদ্ধ করার অপপ্রয়াস চালায় তৎকালীন অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক তত্ত্বাবধায়ক সরকার। কারাগারে থাকাকালে শেখ হাসিনা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। সে সময় চিকিৎসার জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে তার মুক্তির জোরালো দাবি ওঠে।
আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠন ও গণতন্ত্রপ্রত্যাশী দেশবাসীর ক্রমাগত অপ্রতিরোধ্য আন্দোলন, আপসহীন মনোভাব এবং অনড় দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হন।তিনি আরো বলেন,তৎকালীন সময়ে শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী হিসাবে কাজ করতে পারায় সমস্ত কিছুই সামনে থেকে দেখেছি।সেই সময়ে নেত্রীর বিচক্ষণতাই আজ আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত রেখে দেশ পরিচালনা করে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনার মুক্তির মধ্য দিয়ে এ দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে আসে। যুগপৎভাবে বিকাশ ঘটে গণতন্ত্র ও উন্নয়নের। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হারানো স্বপ্ন ও সোনার বাংলা বাস্তবায়িত হচ্ছে তার সুযোগ্য কন্যার নেতৃত্বে। এ দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় পিতার ন্যায় আপসহীন মনোভাব নিয়েই জাতীয় রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার যাত্রা শুরু হয়। জনগণের মুক্তি আন্দোলনে শেখ হাসিনাকে সহ্য করতে হয়েছে অনেক জেল-জুলুম ও অত্যাচার-নির্যাতন। অসংখ্যবার মৃত্যুর সম্মুখীন হতে হয়েছে। জনগণের অশ্রুসিক্ত ভালোবাসায় সকল রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে দেশকে এগিয়ে নিতে অকুতোভয় নির্ভীক সেনানীর মতো নিরবচ্ছিন্নভাবে পথ চলেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। সকল বাধা-বিপত্তি জয় করে আজ স্বমহিমায় উজ্জ্বল এ দেশের জনগণের প্রাণপ্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি আরো বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে সৃষ্ট সংকটে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। করোনা সংকটের শুরু থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কার্যকরি পদক্ষেপ নিয়েছেন বলেই বাংলাদেশে এখনও বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় এই সংক্রমণ থেকে কিছুটা ভালো অবস্থানে আছে। প্রধানমন্ত্রীর সুদক্ষ নেতৃত্বে করোনা সংকট জয় করে আমরা কাঙ্খিত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অভিযাত্রায় দুর্বার গতিতে এগিয়ে যেতে সক্ষম হবো ইনশাআল্লাহ।
একইসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে সকল বাঙালি হৃদয়ে দেশপ্রেমের বহ্নিশিখা প্রজ্বলিত করে সংকট জয়ের ঐক্যবদ্ধ সুরক্ষা ব্যূহ সৃষ্টি করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সরকারকে দেশে প্রবাসে থেকে সকল মুজিব সানিককে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানান তিনি।
আলোচনা সভায় ইতালি, ফ্রান্স, জার্মান, স্পেন, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ড, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, পর্তুগাল, সুইজারল্যান্ড, গ্রীস, সুইডেন, আয়ারল্যান্ড, মাল্টা, অস্ট্রিয়া ও নরওয়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন। আলোচনা সভায় কারিগরি সহযোগিতায় ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুর রহমান ভূঁইয়া ও ইঞ্জিনিয়ার হেদায়েতুল ইসলাম শেলী।
You cannot copy content of this page