রাজশাহী ব্যুরো : রাজশাহীতে লিজার পরিচালিত নর্থ বেঙ্গল সামাজিক সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির ঋণের প্রতারণার জালে নিঃস্ব হতে চলেছে অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধী ইয়ানুস আলীর (৪৯) পরিবার সহ একাধিক ব্যক্তি।
সরকারি প্রতিবন্ধী ভাতাপ্রাপ্ত ঐ পরিবারসহ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী মহানগরীর তেরখাদিয়ায় অবস্থিত নর্থ বেঙ্গল সামাজিক সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির দ্বারা প্রতিনিয়তই প্রতারণার স্বীকার হচ্ছেন রাজশাহীর সাধারণ মানুষ।
নগরীর শ্রীরামপুর এলাকার প্রতিবন্ধী ইয়ানুস আলীর (৪৯) স্ত্রী মোসাঃ নাসিমা বেগম (৪৫) জানান, লিজার এনজিও থেকে ২০১৬ সালে ছেলেকে দোকান করে দেওয়ার উদ্দ্যেশে পঞ্চাশ হাজার টাকা ঋণ নেন তিনি এবং ঋণ নেওয়ার জন্য সমিতির কাছে জমির মূল দলিল ও তার স্বাক্ষরিত তারিখ বিহিন ডাচ বাংলা ব্যাংকের একটি ফাঁকা চেক জামানত হিসেবে জমা দেন। এই ঋণের বিপরীতে নাসিমা প্রতিদিন পাঁচশত পঞ্চাশ টাকা করে ঋণের কিস্তি জমা দিতেন মাঠকর্মী জালালের কাছে। ঋণের টাকা পরিশোধ হওয়ার পর মাঠকর্মী জালাল অফিসে পরিশোধ দেখানো হবে বলে জমা বইটি অফিসে নিয়ে যায়। এরপর মাঠকর্মী জালালের কোন হদিস না পেয়ে তারা নর্থ বেঙ্গল এনজিওতে তাদের জামানত হিসেবে জমাকৃত ফাঁকা চেক ও ভিটেবাড়ির জমির দলিল ফেরত নিতে গেলে তা আজ না কাল বলে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে এবং ঋণ সম্পূর্ণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়েছি ও আরো টাকা পাওয়া যাবে বলে দাবি করেন এনজিও’র পরিচালক লিজা (৩৫) ও তার ম্যানেজার রিয়াল (২২)। এছাড়াও ৫ লক্ষ টাকা দাবি করেন তারা। তা নাহলে আমার উপর মামলা করবে বলে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখায়। বিষয়টি আমি রাজপাড়া থানায় জানালে তারা কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় আমি সংসদ সদস্য-২, জেলা প্রশাসক, পুলিশ কমিশনার, রাজশাহী জেলা পুলিশ, সিআইডি, ডিবি সহ অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানাই। এরপর থেকেই লিজা ও তার ম্যানেজার রিয়াল আমাদেরকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করছে। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর রাজপাড়া থানা আমাকে আগামী ১৫ জুন সকাল ১০টায় থানায় উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দেন। এ অবস্থায় আমি ও আমার প্রতিবন্ধী পরিবার ভীষণ সঙ্কায় দিন কাটাচ্ছি।
এ বিষয়ে লিজার কাছে জানতে চাইলে বলেন, তারা ২০১৬ সালে পঞ্চাশ হাজার টাকা লোন নিয়েছিল আর এখন ২০২০ সাল। চার বছরের লাভ সহ এখন এক লক্ষ বিশ হাজার টাকা হয়েছে। আমি তাকে এক লাখ টাকা দিয়ে তাদের চেক ও জমির দলিল ফেরত নিতে বলেছি। পাঁচ লাখ টাকার মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে লিজা বলেন মামলাতো আরো পাঁচ বছর চলবে, আমি ভয় দেখানোর জন্য পাঁচ লাখার টাকার মামলা দিয়েছি। আর তারা ঋণের কোন টাকা পরিশোধ করে নাই।
রাজপাড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক মোঃ মেহেদী হাসান বলেন, পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে বিষয়টির তদন্তের জন্য বিষয় সংশ্লিষ্ট সকলকে আগামী ১৫ জুন সকাল ১০টায় থানায় উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
Leave a Reply