যশোর প্রতিনিধিঃ যশোরের বাঘারপাড়ায় রাজিয়া খাতুন (২৪) নামে এক অন্ত:সত্তা গৃহবধুর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।মঙ্গলবার গভীর রাতে বাঘারপাড়া থানাধীন জহুরপুর লস্কার ব্রিকসে (ইটভাটা) এ ঘটনা ঘটে।
নিহত গৃহবধু যশোর সদরের পাগলাদাহ গ্রামের মোজাহার বিশ্বাসের ছেলে শহিদ বিশ্বাসের দ্বিতীয় স্ত্রী ও মনিরামপুর উপজেলার রসুলপুর গ্রামের জালাল উদ্দিনের মেয়ে।এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে গৃহবধুর স্বামী যশোরের আলোচিত চুন্নু হত্যা মামলার প্রধান আসামী শহিদকে আটক করেছে পুলিশ।
আটক শহিদ জানান, সোমবার মনিরামপুর উপজেলার রসুলপুরে রাজিয়াকে নিয়ে তার বাবার বাড়ীতে ছিলেন। সন্ধ্যায় স্ত্রীকে নিয়ে কর্মস্থল ইটভাটায় ফেরেন।এদিন রাত ২টার দিকে কয়েকজন ভাটার লোক পরিচয়ে তার ঘরের দরজা খুলতে বলে। দরজা খোলা মাত্রই ঘরে ঢুকেই তাকে মারপিট শুরু করে।এক পর্যায়ে সে দৌড়ে পাশের মাঠে পালিয়ে যায়।এর ২ ঘন্টা পর সে ভাটার নৈশ প্রহরীকে নিয়ে গিয়ে দেখে ঘরের সামনে তার স্ত্রীর বিবস্ত্র নিথর দেহ পড়ে আছে।
তিনি আরও জানান, ৫ বছর আগে যশোর সদরের বাগডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল মজিদের মেয়ে পুতুলের সাথে তার প্রথম বিয়ে হয়।সে পক্ষে রাকিব নামে ৪ বছরের এক সন্তান রয়েছে তার। গত ৬ মাস আগে রাজিয়ার সাথে তার দ্বিতীয় বিয়ে হয়।এরপর সে রাজিয়াকে নিয়ে মামুন ভাটায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন।সম্প্রতি এই ভাটার পার্শ্ববর্তী তৈলকুপ গ্রামে একটি মেয়েলি ঘটনার প্রতিবাদ করায় তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এ হামলা চালায় দূর্বত্তরা।তার ২ মাসের অন্ত:সত্তা স্ত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা করে তারা।
নৈশপ্রহরী আবু তাহের বিশ্বাস শহিদের বক্তব্যের সত্যতা স্বীকার করে বলেন,রাত ৪টার দিকে কাঁদামাটি মাখা অবস্থায় শহিদ এসে তাকে ডাকে। তার সাথে গিয়ে দেখেন ঘরের সামনে তার স্ত্রী রাজিয়ার নিথর দেহ পড়ে আছে।তখনই ভাটার মালিক মামুনকে জানালে তিনি পুলিশকে খবর দিলে রাত ৪টার দিকে খাজুরা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
খাজুরা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (এসআই) জুম্মান খাঁন জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে ভাটার পশ্চিমে ঘরের সামনে মাটিতে ওই গৃহবধুর মরদেহ পাওয়া যায়। নিহত গৃহবধুর স্বামী শহিদ জখম অবস্থায় লাশের পাশে বসে ছিলেন। প্রাথমিকভাবে শহিদকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। লাশের সারা শরীরে ব্লেড দিয়ে কাটা ও ইটের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং ধর্ষণের আলামতও রয়েছে।
এদিকে,খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ সার্কেল) জামাল আল নাসের,বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আল মামুনসহ জেলা গোয়েন্দা ও ডিএসবি’র কর্মকর্তারা।
এ ব্যাপারে বাঘারপাড়া থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি)জানান, ওই গৃহবধুর স্বামী যশোরের আলোচিত চুন্নু হত্যা মামলার প্রধান আসামী ছিলেন।দীর্ঘদিন ভারতে পালিয়ে থাকার পর গত ১বছর আগে দেশে ফিরে বিভিন্ন ইটভাটায় কাজ করছিল। এ হত্যাকে ঘিরে রহস্য রয়েছে।মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।সন্দেভাজন হিসেবে জিঞ্জাসাবাদের জন্য শহিদকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রস্ততি চলছে।
You cannot copy content of this page