এম আবদুল্লাহ সরকার- রায়গঞ্জ প্রতিনিধি
চার সন্তানের জনক সামিদুল। করোনার অস্থিরতায় ধুকছে তার সংসার। সংসারের সদস্যদের মুখের খাবারের সন্ধ্যানে ছুটে চলতে হয় এদিক সেদিক।কাজ নেই হাতে তাই একজনের পরামর্শে তাল শাঁস কিনে এনে বাজারে বিক্রি করছে সে। মুখে ক’টা দিন হাসি ফুটেছে। সেই হাসির ঝলক সংসারের সকল সদস্যের মুখেও। হাসিটা বেশিদিনের নয় জেনেও মুখ ভরা হাসি নিয়েই চালিয়ে যাচ্ছে ক্ষনিক এই ব্যবসাটি।
তাল পাকা গরমে আষাঢ়ের মেঘলা আকাশ ছেদ করে বৃষ্টির ছোঁয়া সারা দেশে।
তার মধ্যই জীবিকার তাগিতে তাল শাঁস নিয়ে বসে থাকে সামিদুল। সামিদুলের মত পুরো উপজেলায় প্রায় শ’খানিক সাধারণ মানুষ এখন এই ব্যবসায় জড়িত।
প্রচণ্ড গরমে পথিকের তৃষ্ণা নিবারণ করার জন্য তালশাঁস খুবই উপকারী। এর ভিতর মিষ্টি পানীয়যুক্ত নরম অংশটি খেতে খুব সুস্বাদু।
প্রতি বছরের ন্যায় এবারও রায়গঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে তালশাস বিক্রির ধুম পড়েছে। ক্ষুদে ব্যবসায়ীরা জীবিকার প্রয়োজনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ক্রয় করে নিয়ে আসে তালশাঁস।
তারপর পছন্দমতো এলাকা বেছে নিয়ে চলে বিক্রি করার প্রতিযোগীতা।
এই মানুষগুলোই জীবন জীবিকার প্রয়োজনে কখনও কখনও তার পেশা পরিবর্তন করে থাকে। রাস্তাঘাটে যারা তালশাঁস বিক্রি করছে এদের মূলত পেশা তালশাঁস বিক্রি করা নয়। মানে ঋৃতু পরিবর্তনের সাথে সাথে চলে ব্যবাসায়ীক পেশার পরিবর্তন।
করোনার মধ্যেও রায়গঞ্জের বিভিন্ন অঞ্চলে রাস্তায় হাঁটলে রাস্তার পাশে তালশাস নিয়ে বসে থাকা অনেককে চোখে পড়ে।
জানা যায়,ক্ষুদ্র ব্যবাসায়ীদের ক’টা মাস চলে এই শাস বিক্রি করে। বৃস্টি নামলে বেচাকেনা বেশি হয়না কিন্তু রোদ উঠলেই চলে বেচাকেনার ধুম। বড়দের সাথে সাথে ছোটদের কাছে এই খাবারটি খুবই আকর্ষণীয় ও সুস্বাদু । তাই পাল্লা দিয়ে ক্রয় করে তারাও।
এক ব্যবাসয়ী জানান, অল্প পুঁজিতে অল্প সময়পর জন্য তালশাসের ব্যবসা শুরু করা যায়। এক ছড়ি তাল শাস ক্রয় করতে ৫০/৬০ টাকা লাগে। আর বিক্রি হয় ১০০/১২০ টাকা। প্রতিটি তালশাস পাঁচ টাকা দরে বিক্রি হয় বাজারে।
সারাদিন যা বেচাকেনা হয় তাতে খরচ বাদে অনেক টাকা লভাংশ থাকে বলে জানান ব্যবাসয়ীরা।
উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম বলেন, উপজেলার ধামানগর, লবনকোঠা এবং তাড়াশ উপজেলায় তালগাছ সবচেয়ে বেশি। এছাড়া গত তিন বছর পূর্বে ২০ হাজার তালের বীজ রাস্তার পাশে লাগানো হয়েছে৷ প্রাকৃতিক ভারসাম্যে তালগাছ অনেক উপকারী।
Leave a Reply