রবিন খান,স্টাফ রিপোর্টারঃ নাটোরের সিংড়া উপজেলার সুকাশ ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আলম হোসেন দীর্ঘদিন থেকে বড়পুকুরিয়া এলাকার ১৫ বিঘা পুকুর ভোগ দখল করে আসছে। নিজের নাম অথবা অন্যের নামের সমিতি দিয়ে পুকুর ভোগ দখল করে আসছে। এতে করে বঞ্চিত এলাকার প্রকৃত মৎস্যজীবি ও ভূমিহীন পরিবারগুলো।
স্থানীয় আরেক যুবলীগ নেতা জার্জিস এর সাথে সমন্বয় করে দীর্ঘ প্রায় ১২ বছর থেকে ঐ পুকুর তাদের আয়ত্বে রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দরিদ্র পরিবার, মসজিদ, মাদ্রাসা ও তাদের অনুদান পায়নি। এতে করে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে জনসাধারনের মধ্য।
সরেজমিনে গেলে স্থানীয় বাসিন্দা ও পুকুর পারের বসবাসরত অবহেলিত পরিবারগুলো জানান, প্রায় ৮০ টি পরিবার পুকুর পারে বসবাস করে। এদের অধিকাংশ গরীব, ভূমিহীন খেটে খাওয়া পরিবার। অথচ তারা বছরে ১ টা মাছ পায় না। ছেলে মেয়েরা বরশি ফেললে জরিমানা করে। গালিগালাজ করে, পুলিশের ভয় দেখায়। পুকুরে ড্রিপ মেশিন দিয়ে পানি তুলে এবং ঢেউ দেয়া হয় এতে প্রতি বছর পুকুর পারের শত শত গাছ পড়ে যায়। গাছের গোড়ার মাটি দিতে দেয় না। বসতভিটার মাটি লাগলে ও পুকুর থেকে তুললে গালিগালাজ করে। আইনের ভয় দেখায়।
কয়েকজন অধিবাসি জানান, গত বছর পারের লোকজনদের টাকা দিবে বলে আশ্বাস দিয়ে যায়, পরে আর দেখা করতে আসেনি। কারো কারো বসত জমি পুকুরে বিলীন হয়ে গেছে।
জানা যায়, বড়পুকুরিয়া পুকুর পারে মসলেম উদ্দিন,আশরাফুল ইসলাম, আব্দুল মান্নান, একরামুল, শামসুল হকআনছার আলী, শাহিন আলম, সাদিক, আব্দুল মজিদ, আক্কাস আলী সহ প্রায় ৮০ জন বাসিন্দা বসবাস করে। বেশিরভাগ পরিবার খেটে খাওয়া মানুষ। অথচ তারা পুকুর থেকে কোনো মাছ পায় না। বরং পুকুরে প্রতিনিয়ত ধসে যাচ্ছে বসতভিটার জায়গা, গাছপালা।
জানা যায়, আলম হোসেন যাদের নাম ব্যবহার করে সমিতি করেছে, তারা পারের বাসিন্দা। এদের মধ্য আব্দুল গফুর, সাদিক প্রামানিক, শাজাহান আলী, আশরাফুল ইসলাম, আব্দুল আলিম ও আলহাজ্ব তাদের সাথে কথা বললে তারা জানান, আমরা তাঁর সমিতির সাথে যুক্ত নয়। অথচ আমাদের নাম ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া দুজন মৃত ব্যক্তির নাম রয়েছে ফজলুল হক ও নাসির প্রামানিক।
যারা বহু বছর আগে মারা গেছেন। তাদের নাম ও সদস্য হিসেবে রয়েছে।
আগমুরশন বড়পুকুরিয়া ওয়াক্তিয়া মসজিদ সভাপতি একাব্বর আলী জানান, ১৯৮৮ সালে মসজিদ প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
আলম হোসেন কোনে সহযোগিতা করেনি।
প্রতিশ্রতি দিলেও কোনো প্রকার সাহায্য করেনি। জালসার সময় দাওয়াত দেয়া হলে ও আসে না।
আগমুরশন গ্রামের বাসিন্দা তায়েজুল ইসলাম জানান, আমার আগমুরশন মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লি: নামে সমিতি আমি প্রতিষ্ঠা লাভ করি। সেই সমিতি আমার অগোচরে তার সে নিজেদের নামে করে নেয়। আমার সাথে প্রতারনা করা হয়েছে।
আগমুরশন মসজিদপাড়া সমবায় সমিতি লি: এর সভাপতি সোহেল রানা জানান, আগমুরশন বড়পুকুরিয়া গ্রামের লোকজনের অনুরোধে এবার আমার সমিতি দিয়ে তারা পুকুর ড্রফট করেছে।
১২ বছরে ও কোনো অনুদান না পাওয়ায় মানুষ ক্ষুদ্ধ। পুকুর পারের লোকজন এবং মসজিদের স্বার্থে সমিতি উৎসর্গ করে দিয়েছি। মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে অনুরোধ গ্রামের লোকজনের দাবি মেনে নিয়ে এলাকার উন্নয়নে অংশ গ্রহনের সুযোগ করে দিবেন। কারন তাঁর মত ভালো, উদার মনের মন্ত্রী হয়না। কিন্তু তাকে সত্য গোপন করা হয়।
এ বিষয়ে সুকাশ ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আলম হোসেন জানান, আমরা স্থানীয়দের সাথে সমন্বয় করে পুকুর ভোগ দখল করে আসছি। স্থানীয় জামে মসজিদে অনুদান দেয়া হয়। তবে ওয়াক্তিয়া মসজিদে দেয়া হয়নি।
You cannot copy content of this page