সুজন ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি- জ্বলছে ঠাকুরগাঁও পৌর মেয়রের কুশপুত্তলিকা, চলছে ইজিবাইক শ্রমিকদের আন্দোলন। ইজিবাইক শ্রমিকদের উপর পৌর টোলের নামে চাঁদাবাজি ও ইজিবাইক শ্রমিকদের উপর সকল প্রকার নির্যাতন বন্ধের দাবিতে ঠাকুরগাঁও ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের ব্যানারে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলো স্থানীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ ইজিবাইক শ্রমিকরা।
শ্রমিকরা বলছেন এর আগে তাদের পৌরটোল বন্ধের আশ্বাস দিয়েছিলেন ঠাকুরগাঁওয়ের পৌর মেয়র মির্জা ফয়সল আমিন। কিন্তু সম্প্রতি সেই ইজি বাইক শ্রমিকদের সাথে প্রতারনা করে আবারও পৌর টোলের ইজারার ডাক দিয়েছেন পৌর মেয়র। যার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে ঠাকুরগাঁও ইজি বাইক শ্রমিক ইউনিয়নের ব্যানারে শহরের চৌরাস্তায় শ্রমিকদের বিক্ষোভ কর্মসূচীর অংশ হিসেবে পৌরসভা ঘেরাও কর্মসূচী পালন করেছে স্থানীয় ইজি বাইক শ্রমিকরা। এ সময় পৌর মেয়র মির্জা ফয়সল আমিনের কুশপত্তলিকায় আগুন জ্বালিয়ে ধিক্কার জানায় ইজি বাইক শ্রমিকরা এবং পৌর টোলের নামে চাঁদাবাজি বন্ধের গর্জনে উত্তাল হতে থাকে ঠাকুরগাঁও শহর।
বিক্ষোভ কর্মসূচীর অংশ হিসেবে পৌরসভা ঘেরাও কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন, ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবের সভাপতি মো: মনসুর আলী, ঠাকুরগাঁও ইজি বাইক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মাহাবুব আলম রুবেল, সাধারন সম্পাদক আবু আস লাবুসহ অন্যান্য ইজিবাইক শ্রমিকগণ।
বক্তারা বলেন, এই করোনা কালে সারা দেশের শ্রমিকদের মত ঠাকুরগাঁয়ের ইজিবাইক শ্রমিকরাও চরম অভাব দুর্দসার মধ্যে দিনতিপাত করছে । দুই মাস লকডাউনে গাড়ি চালাতে না পেরে ব্যাটারি ড্যামেজ হয়েছে , ঋণ করে সংসার চালাতে গিয়ে ঋণ গ্রস্থ হয়েছে । এখন কিছুটা যানবাহন চলাচল করলেও আয় অর্ধেকে নেমে এসেছে ।তারপর আবার এনজিও র ঋণের কিস্তির টাকা দিতে না পারায় পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে ।
এইরকম অবস্থায় যখন শ্রমিকদের খেয়ে বাঁচাটায় কঠিন হয়ে পড়েছে তখন ঠাকুরগাঁও পৌরসভা আবার নতুন করে এই অর্থবছরে ২০২০-২০২১ ইজিবাইকে টোল ধার্য করেছে । অথচ ইজিবাইক শ্রমিকরা গত এক বছর ধরে টোল বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছে । শ্রমিকদের দাবির সাথে একমত পোষণ করে পৌর মেয়র টোল বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে মেয়র শ্রমিকদের সাথে প্রতারণা করেছে টোল ইজারার ডাক দিয়েছেন ।
ইজিবাইক শ্রমিকরা এতদিন খেয়ে না খেয়ে পৌরসভাকে লাইসেন্স ও টোল বাবদ কোটি কোটি দিয়ে আসছে । ইজিবাইক শ্রমিকদের কারণে পৌরসভার আয় বেড়েছে । অথচ এই করোনা কালে পৌরসভা সংকটগ্রস্থ ইজিবাইক শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানো তো দূরের কথা উল্টো তার শেষ রক্তটুকু শুষে নেয়ার চেষ্টা করছে ।
এই টোল ইজারায় যতটা না পোরসভা আয় করে তারথেকে ৫০ গুন বেশী আয় করে টোল আদায়কারী । গত অর্থবছর ২০১৯-২০২০ সালে পৌরসভা ৪ লক্ষ টাকায় ইজারা দিয়েছিল আর আদায়কারী আয় করেছিল প্রায় ২ কোটি টাকা । তাহলে প্রশ্ন আসে এই টোল ইজারা কাদের সার্থে ?
অন্যদিকে ইজিবাইক শ্রমিকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল টোল বন্ধ করে লাইসেন্সের সংখ্যা বৃদ্ধি করা । এখন পৌরসভা লাইসেন্স ও টোল ইজারা বাবদ প্রায় ১৭ -১৮ লক্ষ টাকা আয় করে অথচ সমপরিমাণ টাকা পৌরসভা বর্তমান লাইসেন্সের সংখ্যা দুই হাজার থেকে তিন হাজারে উন্নিত করতে পারলেই আয় করতে পারে । তাহলে তবুও এই টোল কেন ? কার সার্থে ? এস সময় পৌর টোলের নামে চাাঁদাবাজি বন্ধ না হলে এই ইজিবাইক শ্রমিকদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে হুশিয়ারি আসে কর্মসূচী থেকে।
You cannot copy content of this page