রাষ্ট্রয়াত্ব শিল্প প্রতিষ্ঠান গুলো দিন দিন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এবার সরকারি ২৫ পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিলো সরকার। কারণ চরম পরিমাণে লোকসান।
অথচ এই প্রতিষ্ঠানগুলোই যখন বেসরকারি খাতে চলে যাবে, তখন ঠিকই লাভজনক প্রতিষ্ঠান হবে। বিদেশীরা ইনভেস্টমেন্ট করবে, উচ্চ পদেও থাকবে সব বিদেশী। কারণ বাঙালিরা দূর্নীতি করে। এরপর বর্তমানের চেয়ে অনেকটা কম মজুরী দিয়ে গাধার মত খাটবে এদেশের জনগণ।
রেলে নাকি কয়েক যুগেও লাভ দেখেনি কোন সরকার, অথচ রেলে যাত্রীর অভাব নেই। দূর্বল একটি কারণ দেখানো হয়, রেলে চড়ে, বাঙালিরা ভাড়া দেয় না। তাহলে রেল পুলিশের কাজ কী?
বিমানেও একই অবস্থা!
স্বাধীনতার চার দশক পর এসে, বিমানের অবকাঠামোগত কিছু পরিবর্তন পরিলক্ষিত হলেও, যাত্রীসেবা ও নিরাপত্তায় এখনও শতভাগ অান্তর্জাতিক মানের হয়ে উঠতে পারেনি বাংলাদেশের কোন এয়ারপোর্ট। বাইরের যাত্রী সেবা দিয়ে যেখানে, শ্রীলঙ্কার মত দেশের এয়ারপোর্টগুলো সুনাম কামাচ্ছে, সেখানে এদেশের এয়ারপোর্টে অামাদের লোকেরাই হয়রানির স্বীকার হয়। বাঙালি প্রবাসীরা বাংলাদেশের বিমান ব্যবস্থায়, খুবই অসন্তুষ্ট।
ব্যাংকিং খাতে প্রবৃদ্ধির চেয়ে ঋণ শব্দটিও বেশি উচ্চারিত!
কমিশন খেয়ে যাচাই-বাছাই ছাড়া শত শত কোটি টাকা ঋণ দিয়ে ব্যাংকগুলো দেওলিয়া হয়ে যাচ্ছে, অথচ প্রকৃত গ্রাহকরা ঋণ পায় না।
সরকারি বাজেট লুট!
সরকারি বাজেট লুটের ক্ষেত্রে এদেশের কোন নির্দিষ্ট দল বা সরকারকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। এ পর্যন্ত বাজেট সবাই গুম করেছে। অাওয়ামীলীগ বলেন, বিএনপি বলেন অার জাতীয়পার্টি কিংবা ডান-বাম সব দলই সরকারে থেকে নয়তো লেজুরবৃত্তি করে হলেও বাজেট মেরেছে!
অামার মুখের কথা নয় এগুলো বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সরকারের দূর্নীতি বিরোধী অভিযানে প্রকাশ পেয়েছে।
রাজনীতিবিদরা একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ক্ষমতা পায়, মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বেই যা পারে লুটেপুটে খায়। তারাহুড়া করতে গিয়ে অনেক সময় ধরাও পড়ে। জেল-জরিমানা হয়, জনগণের কাছে খলনায়ক হয় এদেশের রাজনীতি করা মানুষগুলো।
কিন্তু শত শত দূর্নীতিবাজ অামলা/কর্মকর্তা/কর্মচারী/পিওন অাছে সরকার ও প্রশাসনে যারা খুব সুক্ষ ভাবে বাজেট গলাধঃকরণ করে, এ জাতি টেরও পায় না।
যাই হোক অাসল কথায় অাসি,
সরকার দেশের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্র ও অান্তর্জাতিক সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে অাসে, সেই ঋণের টাকায় যতটা না রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন হয়, তার চেয়েও বেশি ব্যক্তি-সম্পদে পরিণত হয়। কিন্তু রাষ্ট্রীয় সম্পদ অপহরণ করা, ব্যক্তি গুলি যদি দেশের জন্য কাজ করতেন, তাহলে অার এদেশে বিদেশী কোম্পানী গুলো ঘাঁটি করতে পারতো না। দেশের টাকা দেশেই থাকতো, জনগণের টাকা ঘুরে ফিরে জনগণের হাতেই অাসতো।
রাষ্ট্রয়াত্ব প্রতিষ্ঠান গুলোও বেঁচে যেতো।।
অথচ টাকা যায় সব সুইচ ব্যাংকে……….
নিজের দেশে নিজেই ভাড়াটে!
বিদেশী কোম্পানি গুলো এদেশে তাদের ফ্যাক্টরি খুলে, অনেকেই মনে করেন। এতে করেই দেশের উন্নয়ন হয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু না!
বিদশীরা এখানে ব্যবসা খুলে, কারণ এখানে কম মজুরীতে শ্রমিক পাওয়া যায়।
বিদেশী সংস্থাগুলো কৃষককে ঋণ দিচ্ছে, সেই ঋণের টাকা শোধ করতে না পেরে কৃষক জমি বিক্রি করছে, কোম্পানি গুলো সেই জমিগুলো কিনে, সেখানে ফ্যাক্টরি দিচ্ছে। অার অামার দেশের কৃষক সেই ফ্যাক্টরিতেই শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে।
তাই বাঙালির ব্যাপক দূর্নীতি, রাষ্ট্রের সচেতন অবহেলায় অাজ ‘পুঁজিবাদ’ অামাকে করেছে ভাড়াটে।
লেখকঃ শিক্ষার্থী, সরকারি তিতুমীর কলেজ, ঢাকা।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, সরকারি তিতুমীর কলেজ।
Leave a Reply