উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও গত কয়েকদিন ধরে অব্যাহত বৃষ্টিতে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ডালিয়া ব্যারেজের সবকটি গেট খুলে দিয়েছে। ফলে গতকাল তিস্তার পানি ১৫ সেন্টিমিটার বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার চরাঞ্চলের প্রায় ৭ শতাধীক বাড়িতে পানি উঠে পানিবন্দি হয়েছে ওইসব পরিবার। তলিয়ে গেছে কিছু আমন বীজ তলা, ভুট্টা ক্ষেত ও বাদাম ক্ষেত। রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং শুক্রবার বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এদিকে শনিবার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে চরাঞ্চলের ৭ শতাধীক বাড়ির পরিবার পানিবন্দির পাশাপাশি হুমকিতে পড়েছে রাস্তা-ঘাট, আমন বীজ তলা ও সদস্য নির্মিত বিদ্যুৎ খুঁটি। গবাদি পশু নিয়ে সমস্যায় পড়েছে পানিবন্দি পরিবারগুলো। কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনা চরে গত কয়েকদিন তিস্তার ভাঙনে বিলীন হচ্ছে চরের একমাত্র পাকা রাস্তাটি। পাকা রাস্তাটির এরই মধ্যে প্রায় ৬’শ ফিট ভেঙে গেছে। এছাড়া ওই এলাকার প্রায় ৩ কিলোমিটার একটি কাচা রাস্তার ওপর দিয়ে পানি প্রবেশ করে গোটা চরে প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে এলাকাবাসী ও ইউপি চেয়ারম্যান। চারদিকে পানি থাকায় রাস্তারটি এক পার্শ্ব খুরে আরেক পার্শ্ব ভরাট করে উচু করে পানি আটনোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কোলকোন্দ ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় ও এলাকাবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমে পানি আটনোর জন্য রাস্তা ভরাটের কাজ চলছে। এলাকাবাসী জানান, রাস্তাটি রক্ষা করা না গেলে তিস্তার পানি প্রবেশ করে বিনবিনা চরসহ পার্শ্ববর্তী লালমনিরহাট জেলার মইশাসুরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় পানিতে তলিয়ে যাবে। বিনবিনাচর সেনাবাহিনী পরিদর্শন করেছেন বলেও এলাকাবাসী জানান। নোহালী ইউনিয়নের কয়েকটি চরে ২’শ, কোলকোন্দ ইউনিয়নের চর চিলাখাল, মটুকপুর, বিনাবিনা ও উত্তর কোলকোন্দ বাঁধের ধারের ২’শ, লক্ষীটারী ইউনিয়নের শংকরদহচর, বাঘেরহাট, কলাগাছিরচরের দেড়’শ, মর্নেয়া ইউনিয়নের ছালাপাকচর, মনের্য়ারচরের ৭৫, গজগন্টা ইউনিয়নের, তালপট্টিচরসহ আশপাশের ৪০ ও গঙ্গাচড়া ইউনিয়নের গান্নার পাড় এবং ধামুর বাঁধের ৩৫ পরিবারের বাড়িতে পানিতে উঠেছে। অপরদিকে শংকরদহ চরের গতবছর নির্মিত গুচ্ছ গ্রামটি ভেঙে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে গুচ্ছ গ্রামের প্রায় ১৫ পরিবারের বাড়ি তিস্তায় ভেঙে গেছে। এলকাবাসী দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহনে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। কোলকোন্দ ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব আলী রাজু জানান, তিনি নিজ উদ্যোগে এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে ভাঙন রোধে চেষ্টা করছেন। এছাড়া উপজেলা প্রশাসন ও রংপুর পানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছেন।
Leave a Reply