সংবাদ দাতা:রাকিব মাহমুদ,রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়,বাংলাদেশ প্রতিনিধি
দেশের ৪৩ তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ২০১৭ সালের ৮ই মে সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুরে যাত্রা শুরু হয় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ।
আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে,বৈশাখ মাসে তার হাটু জল থাকে’ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত এই কবিতা যেখানে বসে রচনা করেন সেই শাহজাদপুরেই গড়ে উঠেছে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ। ছোট নদী খ্যাত এই শাহজাদপুরে কবিগুরুর অসংখ্য স্মৃতি জড়িয়ে আছে।রবি ঠাকুরের এই স্মৃতি বিজড়িত শাহজাদপুরে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালের ৮ই মে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের মাধ্যমে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়কে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে অনুমোদন দেয়।
অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষকে ভিসি নিয়োগ দেয়ার পরে ২০১৭ সালের ৮ই মে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে যাত্রা শুরু করে দেশের একমাত্র এই সাংস্কৃতিক বিশ্ববিদ্যালয়টি।শুরুতে ৩ টি বিভাগ নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে ৫ টি বিভাগ রয়েছে।অস্থায়ী কাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হলেও ভিসি বিশ্বজিৎ ঘোষের অক্লান্ত পরিশ্রমে বিশ্ববিদ্যালয়টি দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে।ইতিমধ্যে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব যানবাহনের সুযোগ করে দিয়েছে জন নেত্রী শেখ হাসিনা। শিক্ষার্থীদের দাবী একুশে পদক িবজয়ী এই অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষের হাত ধরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়টি খুব তাড়াতাড়ি দেশের একটি অন্যতম বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হবে।
রবি ঠাকুরের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের (রবিয়ানদের)উপস্থিতিতে কোলাহল ও উৎসব মুখর থাকলেও করোনার জন্য স্থবির হয়ে পড়েছে রবিয়ানদের এই শাহজাদপুর।তবুও করোনার এই বিপর্যয়ের সময় থেমে নেই শিক্ষার্থীরা। নিজ নিজ অবস্থান থেকেই নানারকম সচেতনমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে এই রবিয়ানরা।
বর্তমানে করোনার উদ্ভূত এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা অনেকটা হুমকির মুখে পড়েছে।দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে সবরকম সুযোগ সুবিধা না থাকলেও ভিসি অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষের নির্দেশে অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক বিশ্বজিৎ স্যারের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়,বাংলাদেশ সম্পর্কে তার যে পরিকল্পনা ও অভিমত তা হুবহু তুলে ধরা হল:
আমাদের স্বপ্ন, এ বিশ্ববিদ্যালয় একটি সাংস্কৃতিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে উঠবে। পৃথিবীর মানুষ এ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবে সংস্কৃতি সম্পর্কে গবেষণা করার জন্য, বাংলাদেশ সম্পর্কে গবেষণা করার জন্য এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর বহুমাত্রিক অবদান সম্পর্কে গবেষণা করার জন্য। আমাদের একটা ঋদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য আছে, আমাদের যে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সেটা পৃথিবীর অনেক দেশেরই নেই। আমরা গর্ব করতে পারি, আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য নিয়ে। আমাদের ভাষা খুবই সমৃদ্ধশালী একটি ভাষা। এতকাল আমাদের অর্থনৈতিক সচ্ছলতা ছিল না বলে ভাষার গুরুত্ব কম ছিল। এখন আমাদের ভাষার গুরুত্ব আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আপনি দেখবেন, ভবিষ্যতে যেসব বিদেশি আমাদের দেশে আসবেন, তারা আগে বাংলা শিখে আসবেন। আমরা যেমন এখন জাপানে গেলে জাপানি এবং কোরিয়ায় গেলে কোরিয়ান ভাষা শিখে যাই, তেমনি বিদেশিরা আমাদের দেশে আসলে বাংলা শিখে আসবেন। আমাদের যে সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রয়েছে, তা আরও চর্চা করার জন্য এবং সংস্কৃতিকে আরও বিকশিত এবং সামনের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য দেশে একটি সাংস্কৃতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় অভাব রয়েছে। সেই অভাবটা রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় পূরণ করতে পারবে বলে আমার দৃঢ়বিশ্বাস। আমাদের মূল লক্ষ্যই থাকবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাঙালি সংস্কৃতির ধারণাটিকে পৌঁছে দেওয়া এবং তাদের সংস্কৃতিমনস্ক করে গড়ে তোলা।
Leave a Reply