মেহেদী হাসান উজ্জ¦ল,ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
বৈশ্বিক করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করার নিমিত্তে সারাদেশে যে উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা পরিলক্ষিত হচ্ছে তারই অংশ হিসেবে জনগণকে সচেতন করা ও নিরাপদ রাখার জন্য দিনাজপুরের ফুলবাড়ী থানার পুলিশ সদস্যরা দিন-রাত নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের নেতৃত্বে রয়েছেন দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার মো: আনোয়ার হোসেন পিপিএম বিপিএম বার।
এদিকে বিদেশ ফেরত,ঢাকা,চিটাগাং ফেরতসহ বিভিন্ন এলাকার বহিরাগত মানুষের আগমনের কারনে যেনো করোনা সংক্রমিত হয়ে ছড়িয়ে না পড়ে সেদিকে খেয়াল রেখে তাদের খোঁজ খবর রাখা এবং ব্যবস্থা গ্রহনে উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি ফুলবাড়ী থানা পুলিশের যথেষ্ট তৎপরতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল। ইতো মধ্যে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে রাতদিন মাঠে থেকে ব্যাপক তৎপরতা প্রদর্শন করায় সাধারণ মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছেন ফুলবাড়ী থানা পুলিশ। এতে সাধারণ মানুষ ফুলবাড়ী থানা পুলিশের এই তৎপরতাকে প্রর্কৃত পক্ষেই মানবিক মনে করছেন।
থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: ফখরুল ইসলাম বলেন, ইতি পুর্বে করোনার এই দুর্যোগ মোকাবেলায় তিনিসহ থানার অন্যান্য অফিসার থেকে কনেস্টবল পর্যন্ত মোট ৫৭জন পুলিশের এক দিনের বেতন সমতুল্য টাকা জেলা পুলিশের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রির তহবিলে সহায়াতা প্রদান করেছে ফুলবাড়ী থানা পুলিশ। বিগত দিনের মতো করোনা প্রতিরোধে জনগনকে সচেতন করতে ও নিরাপদ রাখার জন্য থানা পুলিশ প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা উপজেলার পৌর শহরসহ হাট-বাজার ও বিভিন্ন গ্রামের লোকালয়ে একযোগে ব্যাপক তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপÍ স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এনায়েতুল্লাহ্্ নাজিম বলেন এ পর্যন্ত ফুলবাড়ী উপজেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ২২জন, এর মধ্যে সুস্থ্য হয়েছেন ১৮জন, মৃত্যুবরন করেছেন ১জন। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি তাকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছেন ফুলবাড়ী থানা পুলিশ।
অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মো: ফখরুল ইসলাম,পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) তদন্ত মো: মাহামুদুল হাসানসহ থানার অন্যান্য অফিসার থেকে কনেস্টবল পর্যন্ত সবাই দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার মো: আনোয়ার হোসেন পিপিএম বিপিএম বার এবং ফুলবাড়ী থানার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ফুলবাড়ী সার্কেল) মিঞা আসিশ বিন হাসান এর সার্বিক দিকনির্দেশনায় থানার অফিসার্স ইনচার্জ ফখরুল ইসলামের নেতৃত্বে এবং তার নির্দেশে শহরের প্রবেশ দ্বারে চেক পোষ্ট বসিয়ে যাচাই করন,ফুলবাড়ী পৌর শহরসহ উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত পল্লীতে গিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা,স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, বাধ্যতামুলক মাস্ক পরিধানে উদ্ববুদ্ধো করন,দোকানপাট বন্ধ রাখা,অপ্রয়োজনে বাড়ীর বাইরে না আসার জন্য প্রচারনা,আক্রান্ত ব্যাক্তিদের বাড়ী লকডাউন করা,তাদের সবরকম খোঁজ খবর রাখা এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে থানা পুলিশ প্রয়োজনে যে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করায় আগের চেয়ে পরিস্থিতি অনেকটাই উন্নত হয়েছে ফুলবাড়ীতে।
প্রতিদিনই এই উপজেলার প্রতিটি থানা পুলিশ কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে পুলিশ পিকআপ ভ্যানে করে কেউ মাইক্রোবাস আবার কেউ কেউ মোটরসাইকেলে চেপে প্রতিদিন বিভিন্ন স্থানে তৎপরতা চালাচ্ছেন। সচেতনতা মুলক প্রচারনা সত্ত্বেও অপ্রয়োজনে যারা বাড়ীর বাইরে এসে বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে ভীড় জমাচ্ছেন,তাদেরকে বাড়ী ফেরানোর ব্যবস্থাও করছেন পুলিশ। নিজের ও পরিবারের কথা না ভেবে শুধুমাত্র জনগনের সেবায় সরকারের দেয়া দায়ীত্ব পালনের লক্ষে ফুলবাড়ী থানা পুলিশ রাতদিন উপজেলার ৭ টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার বিভিন্ন এলাকার অলি গলিতে গিয়ে নিরলসভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করেই চলেছেন।
পুলিশের এই অব্যাহত তৎপরতায় সাধারণ মানুষ নির্ধারিত সময়ের পর বাড়ীর বাইরে আসা অনেকটাই কমে গেছে। সন্ধার পর নির্ধারিত সময়ের পরে বন্ধ থাকছে অপ্রয়োজনীয় দোকান পাট। পুলিশের তৎপরতায় এখন আর তেমন আড্ডাদিতে দেখা যাচ্ছেনা মানুষের। তবে কিছু উঠতি বয়সের তরুনরা বেশীরভাগই বাড়ীতে বন্দী হয়ে থাকতে নারাজ। কোন না কোন অজুহাতে তারা বাড়ীর বাইরে যাবার বাহানা দেখাচ্ছে।
Leave a Reply