ইতিহাস কেউ মুছে ফেলতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, দেশের সর্বস্তরের মানুষ যাতে সঠিক ইতিহাসটা জানতে পারে সে জন্য তার সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা নিলেও একাত্তরে পাকিস্তানের কারাগারে বঙ্গবন্ধুর বন্দিজীবনের কোনো তথ্যই পাওয়া যায়নি। কেননা, বঙ্গবন্ধু নিজেই সে কষ্টের কথা কাউকে জানাতে চাননি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারাগারের রোজনামচা ’৬৬ সালে জাতির পিতা গ্রেপ্তার হওয়ার পর কারাগারে বসে লেখা। যেটা ছিল ’৬৮ সাল পর্যন্ত। যার একটি ছোট অংশ সে সময় ক্যান্টনমেন্টে বন্দি অবস্থায় তিনি লিখেছিলেন। তবে একাত্তর সালের কোনো লেখা নেই, পাইনি। ’৭১ সালে তিনি যে কারাগারে ছিলেন তার আমরা কিছু জানি না।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের দিনলিপি’ এবং ‘আমার দেখা নয়া চীন’ বই এবং লেখনী থেকে জাতির পিতার জীবনের অনেক তথ্য পাওয়া গেলেও একাত্তর সালের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনা আজ দুপুরে জাতীয় সংসদের অষ্টম অধিবেশনে (বাজেট) তাঁর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
এ সময় ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী স্পিকারের দায়িত্ব পালন করছিলেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘রেহানা ছোট ছিল বিধায় এসব বিষয়ে সে বাবাকে অনেক সময় জিজ্ঞেস করত, যা আমরা সাহস পেতাম না। এই কয়েক দিন আগেও তাঁকে জিজ্ঞেস করেছি, তুই কিছু শুনিস নাই?’
‘আব্বাকে জিজ্ঞেস করেছি, তিনি বলেন তোর শোনা লাগবে না, শুনলে তোরা সহ্য করতে পারবি না। কাজেই আমি (বঙ্গবন্ধু) বলব না।’ রেহানার এই বক্তব্য উদ্ধৃত করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, সে সময়ের শুধু একটা লাইন পাওয়া যায় আইযুব খানের একটি ডায়েরিতে, যেটা অক্সফোর্ড থেকে বের হয়, সেখানে বলা হয়- ‘বঙ্গবন্ধুকে যখন আদালতে আনা হতো তিনি আসতেন, তাঁকে বসতে দিলে বসতেন এবং তিনি কোর্টে এসে দাঁড়িয়েই নাকি জয় বাংলাদেশ বলতেন এবং বলতেন আমাকে যা কিছু করার করো, কিন্তু আমার যেটা করার আমি করে ফেলেছি-বাংলাদেশের স্বাধীনতা, এখন বাংলাদেশ স্বাধীন হবে।’
সরকারপ্রধান বলেন, তবে এর বাইরে সে সময় বঙ্গবন্ধুর আর কোনো তথ্য বা লেখনী তিনি পাননি। যদিও এখনো এ বিষয়ে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
তিনি বলেন, ১৯৬৫ থেকে ’৭৭ সাল পর্যন্ত মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের ডিক্লাসিফায়েড রিপোর্টস পুরোটা তিনি সংগ্রহ করেছেন। যেখানে বাংলাদেশের বিষয়টা রয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে ঘরে থাকার সুবাদে সেগুলো কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ক থেকে বের করে প্রিন্ট আউট করছেন এবং সেখানেও পাকিস্তানের কারাগারের কিছু রয়েছে কি না তিনি দেখছেন।
Leave a Reply