উৎসর্গ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ কুড়িগ্রাম জেলা শাখা ও নাগেশ্বরী উপজেলা শাখার ব্যবস্থাপানায় বন্যা কবলিত বানভাসী মানুষের মাঝে ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্প, বিনামূল্যে ঔষধ ও বাচ্চাদের মাঝে শুখনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৭ জুলাই) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের চরাঞ্চর গ্রামের কয়েকটি পানিবন্ধি এলাকায় এসব কার্যক্রম চালানো হয়।
উৎসর্গ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ নাগেশ্বরী উপজেলা শাখার সভাপতি মোঃ সাদিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উৎসর্গ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য মোঃ খোরশেদ আলম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উৎসর্গ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ কুড়িগ্রাম জেলা শাখার প্রধান উপদেষ্টা মোঃ হাফিজুর রহমান, কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার তথ্য প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং আজীবন সদস্য মোঃ সাখাওয়াত হোসেন আকাশ প্রমুখ।
কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি ডা. মোঃ মুকুল হোসেন ও ডা. প্রনয় কৃষ্ণ রায় এর চিকিৎসার মাধ্যমে সাধারণ জ্বর, সর্দি-কাশি, ডায়রিয়ার ঔষধ, খাবার স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধ করন পাউডার বিতরণ করা হয়।
উৎসর্গ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য মোঃ খোরশেদ আলম জানান, বর্তমানে চারিদিকে সবার মনে শুধু করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক। তার মাঝে আবার শুরু হয়েছে বন্যা। একারনে বন্যা কবলিত বানভাসীদের মাঝে বাড়ছে সাধারণ জ্বর, সর্দি, কাশি কিংবা ডায়রিয়া। এতে করে মানুষ এখন ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ছে। অনেক সময় সাধারণ অসুখ নিয়ে মানুষজন ছুটছে ডাক্তার আর হাসপাতালে।
তিনি আরও জানান, এমন পরিস্থিতিতে নিম্নবিত্ত শ্রেণীর মানুষের বিপদের শেষ নেই। কারণ কর্মহীন ও অসহায় মানুষের জন্য খাবার জোটানোই এখন কষ্টকর। সেখানে সাধারণ চিকিৎসার জন্য ভালো ডাক্তার দেখিয়ে ঔষধ কিনা তাদের সাধ্যের বাইরে। তাই আমরা চেষ্টা করেছি বিনামূল্যে ঔষধ দিয়ে এসব মানুষের পাশে থাকার।
সংগঠনটির কুড়িগ্রাম জেলা শাখার প্রধান উপদেষ্টা মোঃ হাফিজুর রহমান জানান, কুড়িগ্রাম জেলার অনেক জায়গায় শুরু হয়েছে বন্যা। এই করোনা মহামারী পরিস্থিতিতে এসব এলাকার মানুষ এখন সবচেয়ে বড় বিপদে আছেন। তাই আমরা বন্যা কবলিত এলাকায় গিয়ে গিয়ে নিম্নবিত্ত মানুষদেরকে ফ্রী চিকিৎসা ও বিনামূল্যে ঔষধ বিতরণ করছি।
উৎসর্গ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার তথ্য প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং আজীবন সদস্য মোঃ সাখাওয়াত হোসেন আকাশ বলেন, সাধারণ মানুষের মধ্যে করোনা ভাইরাসের সচেতনতা অনেকটাই কম। আবার অন্যদিকে শুরু হয়েছে বন্যা। তাই তারা অসুস্থ হলেও সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, মানুষকে করোনা সম্পর্কে সচেতন করেছি। আমাদের এই সচেতনতা কার্যক্রমে আশা করি মানুষজন করোনা নিয়ে আরো সতর্ক থাকবে। তার পাশাপাশি উৎসর্গ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এর আয়োজনে কুড়িগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্প, বিনামূল্যে ঔষধ বিতরণ ও শুখনো খাবার বিতরণ করে যাচ্ছে।
আমরা শীতে জরাজীর্ণ ভাবে বাস করি, বন্যায় ভেসে চলি, আমরা কুড়িগ্রামের অবহেলিত মানুষ, প্রধানমন্ত্রীর ভাষায় কুইড়াগ্রাম, মানে অলস, আমরা কারো কাছে কিছু চাইতেও জানিনা, জোর করেও নিতে জানিনা। প্রকৃতি আমাদের উত্তরণের বড় অন্তরায়, সারা বছর যা জমাই, বর্ষাকালে পানি বন্দী হয়ে আর শীতকালে ঘড় থেকে বের হতে না পেরে বসে বসে খেয়ে শেষ করি। প্রয়োজনীয় যা দরকার তাই জোটাতে পারিনা, শখ করব কইত্থেকে। এখন প্রায় অধিকাংশ বাড়ীতে জ্বর, সর্দিতে ভরপুর, সেটা কি করনার জ্বর নাকি সিজানাল জ্বর বোঝার উপায় নাই, কারন পানি থাকায় বের হওয়া মুশকিল। তিনবেলা খাবার জোটেনা ওষুধ কিনব কীভাবে, ডাক্তারের কাছে গেলেতো ৫০০ টাকা ভিজিটও দিতে হয়, আল্লাই একমাত্র ভরসা। এ কথাগুলি এখানকার মানুষের হৃদয়ের কথা।
বিনামূল্যে ঔষধ বিতরণ কর্মসূচীতে আরো উপস্থিত ছিলেন, উৎসর্গ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ নাগেশ্বরী উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি মোঃ শাহ আলম মিয়া, উজ্জ্বল কুমার সেন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ সোহেল রানা, সহ-সাধারণ সম্পাদক মোঃ রবিউল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক খোরশেদ আলম ও প্রচার সম্পাদক মোঃ শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
You cannot copy content of this page