এদের কেউ চাকরিজীবী, কেউ ব্যবসায়ী, কেউবা প্রবাসী। সম্পূর্ণ পেশাদারিত্ব আর সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে মিলিত হয়েছেন এক প্ল্যাটফর্মে। তার নাম দিয়েছেন হ্যান্ডশেক (প্রাঃ) লিমিটেড। নির্ধরণ করা হয়েছে সদস্যদের মাসিক চাঁদা। সেই জমানো টাকা দিয়ে গ্রহণ করা হয় ব্যতিক্রম উদ্যোগ। ৩ বছর আগে ২৫ জন কর্মজীবী নিরাপদ আমিষ উৎপাদনের লক্ষে গবাদি পশু লালন-পালনের কাজ শুরু করেন। তার আগে ২০১৬ সালের দিকে ১০০টি গবাদিপশু লালন-পালনের জন্য সুপরিকল্পিত ভাবে তৈরি করা হয় বৃহৎ খামার। ২০১৮ সালের ৬ জুন ১৯টি গরু দিয়ে তরুণদের নতুন উদ্যোগ বাস্তবায়নের যাত্র শুরু করা হয়। নাম দেয়া হয় হ্যান্ডশেক এগ্রো। তিন বছরে খামারে এখন ৫০টি গরু। গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার ইকুরিয়া বাজার সংলগ্নে গড়ে তোলা হয়েছে খামারটি। গত কোরবানি ঈদে এ খামার থেকে ৩০টি গরু বিক্রি করা হয়েছে।
চলতি বছর কোরবানির ঈদের জন্য অনলাইনে ৩৬টি গরু বিক্রি করা হয়েছে। আরো বিক্রিয়যোগ্য গরু আছে ১৪টি। ক্রেতাদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে খামারে রাখা হয়েছে সব দেশী জাতের গরু। এ বছর বৈশ্বিক মহামারি করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে হ্যান্ডশেক এগ্রো ¯øটার সার্ভিস দিচ্ছে। অর্থাৎ বিক্রিত গরু ক্রেতা ইচ্ছে করলে এখান থেকে জবাই করে নিতে পারবে। বর্তমানে ১৮ বিঘা জমিতে চলছে খামারের কার্যক্রম। ৩ বিঘায় গরুর মূল খামার। বাকী জায়গাতে গরুর জন্য সবুজ ঘাস ও ভূট্টা উৎপাদন করা হয়। ভূট্টা গাছ থেকে তৈরি করা হয় সাইলেজ। নিজেস্ব খামারের চাহিদা মিটিয়ে তা বাহিরে বিক্র করা হয়। গরু লালন পালনের জন্য দুটি পরিবারের ৫-৬ জন ব্যক্তি নিয়মিত কাজ করছে। খামারের পাশেই রয়েছে তাদের থাকার সুব্যবস্থা।
সরেজমিনে দেখা যায়, চলতি বছরের কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে দেশী জাতের গরু দিয়ে সাজানো হয়েছে খামার। শ্রমিকদের কাজের নিয়মিত তদারকি করছেন হ্যান্ডশেক এগ্রোর চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান ভূঁইয়া রুবেল। খামারের পরিবেশ খুব সাজানো-গোছানো। প্রতিটি গরুর গলায় তাদের নিজেস্ব স্টিকার। যেখানে ওই গরুর যাবতীয় তথ্য রয়েছে। খামার দেখতে আসা ব্যক্তিদের বসার জন্য রয়েছে আলাদা সুসজ্জিত কক্ষ। তরুণদের এমন উদ্যোগে সফলতা দেখে আশপাশ এলাকার অনেকেই খামার প্রতিষ্ঠা করছেন। একই এলাকায় গড়ে উঠেছে একাধিক গরুর খামার। অনেকে খামার প্রতিষ্ঠার জন্য সরণাপন্ন হচ্ছে তরুণদের।
হ্যান্ডশেক এগ্রোর চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান ভূঁইয়া রুবেল বলেন, কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করতে গিয়ে এ প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়। আমাদের লক্ষ হচ্ছে নিরাপদ আমিষ উৎপাদন করে মানুষের ঘরে পৌঁছে দেয়া। খামারের প্রায় গরুই অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে।
পরিচালক মাহফুজুর রহমান মামুন বলেন, চলতি বছর অনলাইনে গরু বিক্রির কার্যক্রম ব্যাপক ভাবে বেড়েছে। এতে করে ক্রেতারা বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে। অন্যদিকে স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা থাকছে না।
খামারটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আনিসুর রহমান জানান, কাপাসিয়ায় মোট ১ হাজার ৫২০ জন খামারি রয়েছে। এদের মধ্যে মোট ৮ হাজার ৩৬০টি কোরবানি পশু বিক্র করার উপযোগি। অনলাইনে গরু ক্রয় বিক্রয়ে ব্যপক সাড়া পাচ্ছে। উপজেলার খামারিদের মধ্যে হ্যান্ডশেক এগ্রো অন্যতম একটি।
You cannot copy content of this page