মোঃ জোবায়ের পারভেজ শোভন, ফরিদপুর প্রতিনিধিঃ ফরিদপুরের ভাঙ্গায় শেষ মুহুর্তে এসে জমে উঠেছে কোরবানীর পশুর হাটগুলো। ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারনায় এখন বেশ সরগরম এলাকার পশুর হাটগুলো। গত কয়েকদিনে হাটগুলোতে বেড়েছে ক্রেতা সমাগম, সেই সাথে বেড়েছে বিক্রিও। তবে প্রত্যাশা অনুযায়ী দাম না পাওয়ায় লোকসানের শংকায় খামারীরা।
প্রতিবছরের ন্যায় এবারও স্থায়ী হাটের পাশাপাশি এলাকায় বসেছে বেশ কয়েকটি অস্থায়ী পশুর হাট। এসব হাটে স্থানীয় গরুর চাহিদাই বেশী। কোরবানীকে সামনে রেখে উপজেলার অসংখ্য খামারী গরু মোটাতাজা করেন। এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারনে গো খাদ্যের দাম বেশী থাকায় পশু পালনে ব্যায় বেড়েছে অনেক। কিন্ত করোনার প্রভাবে হাটগুলোতে ক্রেতার উপস্থিতি কম থাকার পাশাপাশি দামও কম পাচ্ছেন খামারীরা।
এলাকার সবচেয়ে সুপরিচিত মালীগ্রাম পশুর হাটে গিয়ে দেখা যায় হাটে প্রচুর পশু আমদানী হয়েছে। কিন্ত করোনার প্রভাবে আশানুরুপ ক্রেতা নেই। এতে দুশ্চিন্তার ভাজ ফেলেছে খামাারীদের চোখে-মুখে। হাটে আসা ক্রেতারা গরু ও ছাগলের দাম কম হাকছেন। এলাকার চৌকিঘাটা গ্রামের বাদল মিয়া ৩টি ষাড় এনেছেন বিক্রয়ের জন্য। তিনি প্রতিটি ৩ লক্ষ টাকা করে দাম হাকলেও ক্রেতারা বলছেন মাত্র দেড় থেকে ২ লক্ষ টাকা করে। এতে তার খরচের টাকাও উঠবেনা বলে জানান তিনি। এভাবে কথা হয় সাউতিকান্দা গ্রামের খামারী ইউনুস আলীর সাথে। তিনি কোরবানীর জন্য পালন করা ১০টি গরু নিয়ে এসেছেন। প্রতিটি গরুর দাম ১ থেকে ২ লক্ষ টাকা করে ক্রেতারা হাকছেন। এতে তিনিও দাম নিয়ে বেশ হতাশ।
এদিকে পশুর হাটগুলোতে আসা ক্রেতা-বিক্রেতারা অনেকেই স্বাস্থ্য বিধি মানছেননা। মুখে মাস্ক ছাড়াই সামাজিক দূরত্ব না মেনে পশুর হাটগুলোতে ভীড় করছেন। তবে প্রশাসন বলছেন স্বাস্থ্যবিধি এবং হাটের নিরাপত্তা বজায় রাখতে জালনোট সনাক্ত, মলমপার্টি প্রতিরোধসহ সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। হাটে দায়িত্বরত ভাঙ্গা থানার এস,আই পিযুষ কান্তি হালদার ও এস,আই শওকত হোসেন যথাযত ভাবে হাটের সার্বিক নিরাপত্তা গ্রহন করছেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রানীসম্পদ কর্মকর্তা মনমথ কুমার সাহা বলেন, প্রতিবছরের ন্যায় এবারও আমরা গরু মোটাতাজা করনের উদ্যোগ গ্রহন করেছি মাঠ পর্যায়ে। উঠোন বৈঠকের মাধ্যমে আমরা খামারীদের কাছে গিয়েছি,খামার পরিদর্শন করেছি যাতে তারা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরন করেন। তবে আমি নিশ্চিত করতে চাই যে আমার জানা মতে খামারীরা ষ্টোরয়েড ব্যবহার করেনি। প্রায় ৩ হাজারের মত চাষী যারা স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে গরু হৃষ্টপুষ্টকরন করেছে। তবে খামারীরা চিন্তিত আছে তারা ঠিকমত পুজি খাটিয়ে বিক্রি করতে পারবে কিনা। তবে আমাদের প্রানী সম্পদ অধিদপ্তরের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা অনলাইন পশুর হাটের ব্যবস্থা করেছি। আমাদের জেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তার নির্দেশনা মোতাবেক ফরিদপুর অনলাইন পশুরহাট চালু হয়েছে। আমরা বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রচার-প্রচারনার মাধ্যমে চাষীদের উদ্বুদ্ধ করেছি, চাষীরা তাদের পশুর ছবিসহ পশুর ওজন ও আনুমানিক মূল্য এই অনলাইন পশুর হাটে দিলে যতদুর সম্ভব কেনাবেচা করতে পারবে। নিরাপদে পশু কেনাবেচার জন্য অনেকেই অনলাইন পশুর হাট ব্যবহার করছেন। সাড়াও পাচ্ছেন অনেকেই। তবে এ ব্যবস্থা সম্পর্কে সাধারন খামারীদের কোন ধারনা না থাকায় সুফল পাচ্ছেননা অনেকেই।
এ দিকে উপজেলার আজিমনগর মোড়া হাটের ইজারাদার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শাজাহান মোল্লা বলেন, হাটের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য আইনশৃংখলা বজায় রাখা, মলম পার্টি প্রতিরোধ, জালনোট সনাক্তসহ সকল ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।
Leave a Reply