মো: সুজন আলী, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁও পীরগঞ্জ উপজেলায় দুই কিশোরীকে দলবেঁধে ধর্ষণের মামলায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার সেনুয়া বাজার এলাকা থেকে তাদের দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান পীরগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) খায়রুল আনাম ডন। বুধবার গ্রেপ্তরকৃত দুইজনকে আদালতের মাধ্যমে ঠাকুরগাঁও জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
এরআগে রাত ৯টার দিকে দুই কিশোরীর মধ্যে এক কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে নয়ন ইসলাম (২২), মোহাম্মদ সবুজ (২০), হিরেন চন্দ্র শিল (২৬), ফরিদ হোসেন (২২) ও সেলিমকে (২২) আসামী করে পীরগঞ্জ থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন : পীরগঞ্জ উপজেলার সেনুয়া বানিয়াপাড়া গ্রামের আলতাফুর রহমানের ছেলে নয়ন ইসলাম ও একই উপজেলার ভোমরাদহ চিলাছাপা গ্রামের ওসমান আলীর ছেলে মোহাম্মদ সবুজ।
পুলিশ জানায়, গত সোমবার (১৭ আগস্ট) বিকেলে নয়নের সাথে দেখা করার জন্য বাদীর মেয়ে (১৭) ও প্রতিবেশি আরেকজন কিশোরী (১৪) বাড়ি থেকে বের হয়ে পীরগঞ্জ উপজেলা শহরে যায়। সেখানে নয়নের সাথে এই দুই কিশোরীর দেখা হয়। এসময় সাথে থাকা ফরিদ, হিরেন ও সেলিমের সাথে ওই দুই কিশোরীকে পরিচয় করে দেয় নয়ন ইসলাম।
এসময় মামলার বাদীর মেয়ে মোবাইলের ব্যাটারি কেনার কথা নয়নকে জানায়। পরে নয়ন ওই দুই কিশোরীকে জানায় পীরগঞ্জে লোহাগাড়া বাজারে তার পরিচিত মোবাইলের দোকান রয়েছে, সেখান থেকে কম দামে ব্যাটারী কেনা যাবে। নয়নের কথা মতে ওই দুই কিশোরী নয়নের বন্ধু সেলিমের মোটরসাইকেলে করে লোহাগাড়া বাজারে যায় ও নয়ন ও হিরেন বাসযোগে লোহাগাড়া বাজারে যায়। সেখানে মোবাইলের ব্যাটারীর দাম বেশি হলে নয়ন, তার বন্ধু সেলিম, ফরিদ ও হিরেনসহ আসামী সবুজের ব্যাটাচালিত অটোচার্জারে করে ওই দুই কিশোরীকে নিয়ে পুণরায় পীরগঞ্জ উপজেলা শহরে আসে।
পরে পীরগঞ্জেই একটি মোবাইলের দোকান থেকে ব্যাটারি ক্রয় করে ওই দুই কিশোরী। এরমধ্যে রাত ৭টা হলে কৌশলে ওই দুই কিশোরীকে সবুজের অটোচার্জারে করে নয়নের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পথে হিরেনের কাছে থাকা জুস ও পটোটা চিপস ওই কিশোরীদের খাওয়ায়। এতে দুই কিশোরীর ঘুম ঘুম ভাব ধরে। এসময় ব্যাটারিচালিত অটোচার্জার গাড়িতে করে কৌশলে দুই কিশোরীকে মামলার দুই নম্বর আসামী সবুজের ভোমরাদহ এলাকার বাড়িতে নিয়ে যায় তারা। পরে সেখানে ওই দুই কিশোরীকে নয়নসহ তার ৪ বন্ধু জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে সবুজের বাড়ি থেকে দুই কিশোরীকে বের করে পাশ্ববর্তী নজিবুল হকের আখ ক্ষতে নিয়ে গিয়ে পুণরায় তাদের ধর্ষণ করা হয়। এতে কিশোরী দুইজন জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এসময় স্থানীয় লোকজনের টর্চলাইটের আলো দেখতে পেয়ে আখ খেতে দুই কিশোরীকে ফেলে চলে আসে নয়নসহ তার বন্ধুরা। মঙ্গলবার ভোরে আখ খেত থেকে ওই দুই কিশোরী বের হয়ে একটি অটোচার্জার গাড়িতে করে তাদের বাড়িতে ফিরে এসে ঘটনা সম্পর্কে পরিবারের লোকজনকে জানায়।
পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) খায়রুল আনাম বলেন, ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে দুই কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে। অন্যদিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত নয়ন ইসলাম ও সবুজ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে ঠাকুরগাঁও জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করা হচ্ছে এবং ঘটনার সাথে জড়িত বাকী আসামীদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে ।
You cannot copy content of this page