মহামারি করোনাভাইরাস মোকাবিলায় জাতিসংঘকে সমন্বিত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা, সবার জন্য সুস্বাস্থ্য, মান সম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করাসহ ২০৩০ সালের মধ্যে এমন ১৭টি লক্ষ্যপূরণে কাজ করছে উন্নয়নশীল দেশগুলো। করোনাভাইরাসের কারণে স্বাস্থ্য ও প্রণোদনা খাতে ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় টেকসই উন্নয়ন খাতে অর্থায়নে সংকট দেখা দিচ্ছে। তাই জাতিসংঘ সদর দপ্তরে
মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানদের নিয়ে একটি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। করোনাভাইরাসের সময়ও টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে অর্থায়নের বিষয়ে তাদের ভাবনার কথা জানান সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানরা।
সেখানে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে হলে উন্নত দেশগুলোকে আর্থিক প্রণোদনা বাড়াতে হবে। স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সহায়তা দেয়া অব্যাহত রাখতে হবে। এসময় আর্থিক সংকট মোকাবিলায় বিনিয়োগ বাড়ানো, শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা প্রদান, অভিবাসী শ্রমিকদের সহায়তা অব্যাহত রাখাসহ ৬টি সুপারিশ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা কোভিড-১৯ সংকটের মোকাবিলা করতে আরও উন্নত সমন্বিত রোডম্যাপ তৈরি করার জন্য বিশ্বনেতাদের সামনে ছয় দফা প্রস্তার তুলে ধরেন।
প্রথমত: জি-৭, জি-২০, ওইসিডি দেশগুলো, এমডিবি এবং আইএফআইগুলোকে অর্থনৈতিক প্রণোদনা দিতে হবে এবং ঋণ মওকুফে পদক্ষেপ নিতে হবে। উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোতে ওডিএ এর ০.৭ প্রতিশ্রতির বাস্তবায়ন করতে হবে।
দ্বিতীয়ত: আমাদের আরও বেশি বেসরকারি অর্থ ও বিনিয়োগ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সরিয়ে নিতে হবে। ডিজিটাল বিভাজন বন্ধ করার জন্য আমাদের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনকে কাজে লাগাতে হবে।
তৃতীয়ত: কোভিড-পরবর্তী শ্রম বাজারে এবং প্রবাসী শ্রমিকদের সহায়তা করার মাধ্যমে রেমিট্যান্স প্রবাহের নিম্নমুখী প্রবণতার বিপরীতমুখে নেয়ার জন্য সঠিক নীতিমালা করার পদক্ষেপ প্রয়োজন।
চতুর্থত: উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোকে অবশ্যই উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য শুল্ক এবং কোটামুক্ত বাজারে প্রবেশাধিকার, প্রযুক্তি সহায়তা এবং আরও প্রবেশযোগ্য অর্থায়নের বিষয়ে তাদের অদম্য প্রতিশ্রুতি অবশ্যই পূরণ করতে হবে।
পঞ্চম: কোভিড-১৯ মহামারির কারণে স্বল্পন্নোত দেশ থেকে উত্তরণের পর যাতে পেছনে যেতে না হয়, এজন্য অন্তত ২০৩০ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সহায়তার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
ষষ্ঠ: পরিশেষে, জলবায়ু সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড এবং স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারের জন্য অর্থ সংগ্রহে আরও জোর প্রচেষ্টা করা দরকার।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, উন্নয়নশীল দেশের প্রতি উন্নত দেশগুলোর করা ওয়াদা পূরণ করতে হবে। সামাজিক উন্নয়নে যে দশমিক ৭ শতাংশ অর্থ দেয়ার ওয়াদা তারা করেছে সেটি পূরণ করতে হবে। একই সঙ্গে প্যারিস জলবায়ু চুক্তিও বাস্তবায়ন করতে হবে। আর এজন্য জাতিসংঘকে চালকের ভূমিকা নিতে হবে।
Leave a Reply