প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২৩, ২০২৪, ৪:৪২ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ অক্টোবর ১৬, ২০২০, ১:১৩ অপরাহ্ণ
জবরদখল ও মানবেতর জীবনযাপন থেকে মুক্তি চায় মনিরুলের পরিবার
এক ব্যাগেই পরিবারের তিন সদস্যের ভাসমান সংসার। গত পাঁচ দিন ধরে ফেস্টুন হাতে দঁাড়িয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নাটোরের গুরুদাসপুরের মনিরুলসহ তার পরিবার। একমাত্র বসতবাড়ী জবরদখল ও মানবেতর জীবনযাপন থেকে মুক্তি পেতে ন্যায় বিচারের আশায় প্রেসক্লাব সম্মুখে অবস্থান নিয়েছে।
লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, নাটোর জেলার গুরুদানপুর থানার চাচকৈড় গ্রামের মোঃ ফজলুর রহমান ছেলে মোঃ মনিরুল ইসলাম (৩৩)। তার বাবার সাথে বনিবনা না হওয়ায় মাতা মৃত ময়না বিবি’র ছেলে মোঃ মনিরুল ইসলাম ও এক মেয়েকে নিয়ে পিতার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। সেখানে থাকাকালীন মনিরুলের মা নানী সখেজান বেওয়া সন্তুষ্ট হয়ে তার ভোগদখলকৃত জমি থেকে ৫ শতাংশ জমি ছত্রিশ হাজার পঁাচশত টাকার বিনিময়ে গত ০৫ নভেম্বর ২০০৬ইং তারিখে মায়না বিবির নামে রেজিষ্ট্রিমুলে ভোগদখল বুঝিয়ে দেন। তারা উল্লেখিত জমিতে ঘববাড়ি করে ভোগদখলরত থাকা অবস্থায় একই এলাকার মোঃ শাহনেওয়াজ আলী (৫০)’র সাথে মনিরুলের মায়ের ২য় বিয়ে হয়। পরিবারে ঘরের প্রয়োজন হওয়ায় পূর্বের তৈরিকৃত টিনের ঘর ভেঙে মনিরুলের মা বিভিন্ন ব্যাংক ও সমিতি থেকে লোন নিয়ে ১ তলা পাকা বিল্ডিং তৈরি করেন। সে লোনের দায়ভার মনিরুলের পরিবার এখনও বয়ে বেড়াচ্ছে। ভাড়া পাওয়ার লক্ষ্যে মনিরুলের মা ও উল্লেখিত সৎ বাবার সমন্বয়ে উক্ত বাড়ির ২য়, ৩য় ও ৪র্থ তলা কমপ্লিট করা হয়। মনিরুলের সৎ বাবা শুধুমাত্র তার ঔরসের মেয়ে সিমির লেখাপড়া ও ভবিষ্যতের জন্য ২য় স্ত্রীসহ ঢাকায় বাসা ভাড়া করে রাখতেন। এ পর্যায়ে ২য় স্ত্রী ময়না বিবির চরম অসুস্থতা ও ঢাকায় সুচিকিৎসার কথা জানতে পরি। সৎ বাবার ভয়ে কোন কথা বলতে না পারার একপর্যায়ে তার মায়ের মৃত্যুর খবর শুনতে পায়। সৎ বাবার সু-সম্পর্কের কোন মহিলার মাধ্যমে চিকিৎসার অনিয়ম করে মনিরুলের মাকে বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। মায়ের অকাল মৃত্যুর বিষয়ে সঠিক জবাব চাওয়ায় মনিরুল সৎ বাবার চক্ষুশুল হয়ে ওঠে। প্রায় এক কোটি দশ লক্ষ টাকার বাড়ি আত্নসাৎ করতে ও ব্যবসা বাণিজ্য থেকে বিতাড়িত করতে তিনি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন এবং ভয়-ভীতি ও হুমকি-ধামকি দিতে থাকেন। অসৎ উদ্দেশ্যেই প্রতিনিয়ত মনিরুলের ফ্লাটের রুমের মধ্যে তিনি বাইরের লোকজন এনে জুয়ার আসর বসাতেন। উনার ক্ষমতার ভয়ে সবকিছু মুখবুজে সইতে থাকলেও আমার অনুপস্থিতিতে গত ১৬ সেপ্টেম্বও ১৯ইং তারিখে নিজের ভাই ফারুক মোল্লা (৩৫) ও নিজস্ব লোকজনদের দিয়ে আমার স্ত্রীসহ সন্তানদের খাবার থেকে উঠিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে এবং মালামাল ভাংচুর ও ভয়ভীতি দেখিয়ে এক কাপড়ে বাড়ি থেকে বের করে ঘরে তালা লাগিয়ে দেয়। বিষয়টির কারণ জানতে চাওয়ায় সৎ পিতা শাহনেওয়াজ আলী বাড়ি বা এলাকার সীমানায় পা রাখলে মনিরুলসহ পরিবারের সকলেকে জীবন নাশের হুমকি দেন ও কোনো বাবা থাকলে নিয়ে আসার কথা বলেন। সেই থেকে অদ্যবধি মনিরুল ন্যায্য হিস্যার শেষ সম্বল হারিয়ে একব্যাগ কাপড় চোপড়ের সংসার নিয়ে ভাসমান অবস্থায় বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় খুজে বেড়াচ্ছে। অর্ধহারে-অনাহারে বিভিন্ন স্থানে দিন কেটে গেলেও মনিরুলের ২ মেয়ের লেখাপড়া ও ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। মনিরুলের ঘরের মালামাল বিভিন্ন মানুষকে দিয়ে ও দামী মালামাল নিয়ে বাসা খালি করে ভাড়াটিয়া উঠিয়েছে। মনিরুলের প্রাপ্য ঘর ভাড়াসহ সব কাজকর্ম ও আয়ের পথ বন্ধ করতে পেছনে লোক লাগিয়ে রেখেছে। মায়ের উত্তরসূরি হিসাবে উক্ত জমি ও বাড়ির স্বত্বের সত্ববান হয়েও তঞ্চকতামূলক মনিরুলের সৎ বাবা অন্যায়ভাবে ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত করেছে। এসব বিষয়ে পরিত্রাণ চেয়ে সংশ্লিষ্ট থানা, পুলিশ সুপার, উপজেলা চেয়ারম্যান ও এমপির দারস্থ হলেও বিভিন্ন অজুহাতে তারা অপারগতা প্রকাশ করে। সব জায়গাতেই তিনি কালক্ষেপন করে করে বিষয়টিকে ঝুলিয়ে রাখায় গত ১৪ মাস যাবত বিভিন্ন এলাকায় মনিরুল পরিবারকে নিয়ে খুবই মানবেতর জীবন যাপন করছে। উপায়ান্তর না পেয়ে প্রশাসনের সুদৃষ্টি ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনার আশায় অতি কষ্টে ঢাকায় এসে জবরদখল ও মানবেতর জীবনযাপন থেকে মুক্তি পেতে ন্যায় বিচারের আশায় আজও দাঁড়িয়ে।
© 2024 Probashtime