কবিতা: বুকের লাল দ্রাবকে ভেজা চিঠি; লিখেছেন রুদ্র দাম
‘বুকের লাল দ্রাবকে ভেজা চিঠি’
চা-কফি বা সিগারেটর ধোঁয়ায় স্পর্শ, সংবিধানে রচিত নেই বিধায়;
কোলাহলমুখর উপচে উপচে বেয়ে চল নদীর মতো আমায় আলিঙ্গন করবে বলে চিঠি পাঠিয়েছে রক্তজবা মাঝ রাত।
নিমন্ত্রণের পথে রেলিংপোষ্ট রচনা করেছে এক দীপ্ত সামাজিক নারী;
সেই উদগ্রীবতায় চেয়ে আছে জানালার গ্রীল-কোটরে ধূলিজমা মাঝ রাতের রক্তক্ষরিত চোখ।
অনুভূতিহীন উচ্ছলতায় দুচোখে জড়ো হলো ভয়,যেন পেয়ে বসেছে এক শহরের জ্যাম।
তাহলে শূন্য চায়ের পেয়ালার মতোই কি ঠেলে দিতে হবে আমায়-আমার উষ্ণ চিবুক?
দিগন্তের স্ট্যান্ড ছেড়ে আসা ক্লান্ত সূর্যের বেয়ে চলা পথ,
কামিনী যুবতীর বিষাক্ত ভেজা কাঁধ ছুঁয়ে স্পর্শ করে নীলকমলি চোখ – মুখ – ঠোঁট, আমার বিচ্যুত অঙ্গপ্রত্যঙ্গ।
স্টেশন পড়ে আছে একা,শেষ ট্রেন ছেড়ে গেল এই;
সঙ্গতায় স্টেশনের হাতে আঙ্গুল গুঁজে দেয় কালো রাত;
তাই তো কখনো হাত বাড়িয়ে আর্তনাদ খুঁজা হয়ে উঠেনি।
তবুও মাঝ রাত চিঠি লিখা ফেলে রাখেনি,ভাষার চোখে লাল ভ্রমরের হুল হয়ে বিঁধে আছে সাংবিধানিক জটিলতা।
কিশোরীর প্রথম প্রেমের কসম ভাঙা যন্ত্রণা জমা চোখের মতো স্পষ্ট ভাষায় লিখে পাঠিয়েছে মাত্র একবার মুখোমুখি সাক্ষাৎ।
হয়তো পুরো একটা ভার্জিন সিগারেট নয়তো স্নায়ুসংবেদী পূর্ণ এক গ্লাস দ্রাবক,- এটকুই?
তার বেশি হয়তো কিছু নয়।
নিয়তির ঘরে আলপিনে বিঁধে প্রশ্নটা নাহয় দেয়ালিকা হয়ে থাক,সেদিনের অপেক্ষায়/
ঠোঁট-চোখ-মুখ-কপাল- বক্ষে কামিনী গাছের মতো ছেয়ে নিলে উদ্যমী কাম;
অথবা;
মুড়ের বাঁকে ভাঙা ল্যাম্পপোষ্টের অবসাদ মাখা আলোয় নিজের কিছুটা রুপসজ্জা চড়াও হলে-সেদিন আমায় নিও;
নেশাচর রাত,নেশাছন্ন কবিতা,আর নেশাক্ত দ্রাবকের গ্লাস-সেদিন আমায় নিও!
প্রেমের প্রথম চিঠি মধ্য বয়সী কিশোরী বুকে চেপে ফিরে পায় চিঠির মানুষ;
তেমনি আমায় নিও, বুকে-ঔরশে, রক্তিম চিবুকে অথবা উষ্ণ গ্রীবায় রেখ কাঁধ।
সেদিন নিও ঠিক; সংশোধিত সংবিধানে, মগজ-মস্তিষ্কে, চোখ অথবা কোটরে -সেদিন নিও/
হিমঘরে লাশের হিমাঙ্কে কিংবা পোস্টমর্টেমের রিপোর্ট পেপারে -নিও সেদিন, নিও/
শুধু শেষ ট্রেন ছেড়ে যাওয়া স্টেশন আমায় দিও।
রক্তজবা শেষ বিকালে-
বুকের লাল দ্রাবকে ভেজা চিঠিটা শুধু জমা দিও অপেক্ষার দরজায় -প্রিয়জনের হাতে।
কবিঃ রুদ্র দাম
Leave a Reply