প্রতিদিনের সময় ডেস্কঃ
শুভ জম্নদিন ! বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ।
যুব সমাজই হতে পারে আগামী সোনালী বাংলাদেশের স্বপ্নের এনার্জির উৎস। উশৃংখলতা,মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজিকে না বলে যুব সমাজকে সুসংগঠিত করা জরুরি।
স্বাধীনতা পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর মতাদর্শের অনুসারীরা বিভিন্নভাবে সরকার বিরোধী অভ্যুত্থানের চেষ্টা করে। হত্যা, দাঙ্গা, লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করে যুব সমাজকে বিপথগামী করে তোলে।
এমন পরিস্থিতিতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী তরুণ ও যুব সমাজকে বিভ্রান্তির থেকে দূরে রাখতে ও তারা যেন হতাশাগ্রস্ত না হয়ে পড়ে সে লক্ষ্যে একটি যুব সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।
এমতাবস্থায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, মহান মুক্তিযুদ্ধে মুজিব বাহিনীর অন্যতম সংগঠক, বিশিষ্ট সাংবাদিক শেখ ফজলুল হক মনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে ১৯৭২ সালের ১১ই নভেম্বর দেশের প্রথম যুব সংগঠন আওয়ামী যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করেন।
যুদ্ধবিধ্বস্ত নবজাতক বাংলাদেশের তরুণ যুবসমাজকে ঐক্যবদ্ধ করে আদর্শিক দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে কাজে লাগানোই ছিল যুবলীগ প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর ভাবাদর্শের এই সংগঠনটি আজ উপমহাদেশের অন্যতম বৃহৎ যুব সংগঠন হিসাবে খ্যাতি লাভ করেছে।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে যুবলীগ নেতাকর্মীরা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও দেশগড়ার কাজে আত্মনিয়োগের পাশাপাশি অপশক্তির অত্যাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে গিয়ে বারংবার রাজপথে রক্ত দিয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন করতে গিয়ে বগুড়ায় যুবলীগ নেতা আব্দুল খালেক খসরু, চট্টগ্রামে যুবলীগ নেতা মৌলভী ছৈয়দ আহমদ নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।
১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে যুবলীগ নেতা নূর হোসেনের তাজা রক্তের ঋণ শোধ করার মধ্য দিয়ে ক্ষমতাচ্যুত হয় স্বৈরশাসক এরশাদ।
এছাড়া ১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যুবলীগের অনবদ্য ভূমিকা, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট, বিএনপি জোট সরকারের সরাসরি মদদে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী, দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে যুবলীগ ছিলো সোচ্চার, অপ্রতিরোধ্য।
২০০৫ সালের লগি-বৈঠা আন্দোলন, ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিরোধী আন্দোলনসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আওয়ামী যুবলীগ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।
১/১১ এর প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা কারান্তরীণ হলে তার মুক্তির আন্দোলনে গ্রেফতার হয়ে কারা নির্যাতনের শিকার হয় শত-সহস্র যুবলীগ নেতা কর্মী।
২০০৮ সালে ভোট বিপ্লবের অগ্রভাগে আওয়ামী যুবলীগের অসামান্য অবদান রয়েছে। যুদ্ধপরাধ ও মানবতা বিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত আসামিদের বিচারকার্য সম্পন্ন এবং ২০১৩ সালের ৫ এবং ৬ মে হেফাজতের ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা প্রতিরোধে আওয়ামী লীগ সরকারের নিরবিচ্ছিন্ন ছায়াসঙ্গি হিসাবেও যুবলীগ রাজপথে সংগ্রাম অব্যাহত রাখে।
জাতীয় কংগ্রেসের মাধ্যমে যুবলীগের নেতৃত্বের পরিবর্তন হয়।
১৯৭৪ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় কংগ্রেসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উপস্থিতিতে শেখ ফজলুল হক মনি চেয়ারম্যান ও এডভোকেট সৈয়দ আহমদ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
১৯৭৮ সালে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় কংগ্রেসে আমির হোসেন আমু চেয়ারম্যান ও ফকির আব্দুর রাজ্জাক সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
১৯৮৬ সালে তৃতীয় কংগ্রেসে মোস্তফা মহসীন মন্টু চেয়ারম্যান ও ফুলু সরকার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
১৯৯৬ সালে অনুষ্ঠিত চতুর্থ কংগ্রেসে শেখ ফজলুল করিম সেলিম চেয়ারম্যান ও কাজী ইকবাল হোসেন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
২০০৩ সালে পঞ্চম কংগ্রেসে এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক চেয়ারম্যান ও মীর্জা আজম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এই কংগ্রেসের পর ২০০৯ সালে এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মনোনীত হলে মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এর দায়িত্ব পালন করেন।
সর্বশেষ ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ জাতীয় কংগ্রেসে মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী চেয়ারম্যান ও মোঃ হারুনুর রশীদ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয় আওয়ামী পরিবারের সর্বোচ্চ অভিভাবক মাননীয় নেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নির্দেশক্রমে ২৩ নভেম্বর ২০১৯, যুবলীগের সপ্তম জাতীয় কংগ্রেসে শেখ ফজলে শামস পরশ চেয়ারম্যান,মাইনুল হোসেন খান নিখিল
যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়। এই কংগ্রেসের মধ্য দিয়ে সকল অভিযোগ পরিশুদ্ধ করে এগিয়ে যাবে মুজিব আদর্শের প্রিয় এই যুব সংগঠনটি। কারণ দেশের মোট জনসংখ্যার বৃহৎ অংশ হচ্ছে যুবসমাজ। এ যুব সমাজকে সঠিক মেধা, মনন ও প্রযুক্তি জ্ঞানে গড়ে তুলতে পরিশুদ্ধ যুব রাজনীতির বিকল্প নেই।
গণতন্ত্র, শোষণমুক্ত সমাজ, বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও ধর্ম নিরপেক্ষতা এই চার মূলনীতিকে সামনে রেখে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ ও আত্মনির্ভরশীল অর্থনীতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে বেকারত্ব দূরীকরণ, দারিদ্র বিমোচন, শিক্ষা সম্প্রসারণ, যুব সমাজের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং ভবিষ্যত নেতৃত্ব সৃষ্টির লক্ষ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ বদ্ধপরিকর।
আধুনিক প্রযুক্তির জ্ঞানে দক্ষ যুবশক্তি গড়ে তুলতে সৃজনশীল কর্মসূচি প্রণয়ন করে রাষ্ট্রনায়ক জননেত্রী শেখ হাসিনার রাষ্ট্রদর্শন বিশ্বপরিমন্ডলে তুলে ধরতে মেধা, মনন ও আদর্শিক চেতনায় বলীয়ান যুব সমাজ আওয়ামী যুবলীগের পতাকাতলে সমবেত হয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলবে এমনটাই প্রত্যাশা।
যে স্বপ্ন নিয়ে বঙ্গবন্ধু এদেশ স্বাধীন করেছিলো, বঙ্গবন্ধুর ডাকে সারা দিয়ে সাধারণ মানুষ জীবন বাজি রেখে লড়ায় সংগ্রাম করে আমাদের এনে দিলো একটি স্বাধীন রাষ্ট্র, একটি মানচিত্র, আমরা পেলাম লাল সবুজের পতাকা সেই আদর্শ বুকে লালন করে ১৯৭২ সালের ১১ই নভেম্বর দেশ পূনর্গঠনের জন্য গঠিত শেখ ফজলুল হক মনির নেতৃত্বের বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ আজ এই উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী যুব সংগঠন।
রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা দেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিনত করছে যার জন্য বাংলাদেশ আজ উন্নত বিশ্বে আলো ছড়িয়ে দিয়েছেন,বঙ্গবন্ধু কন্যা: মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের প্রতি কৃতজ্ঞতা,দোয়া ও ভালোবাসা জানিয়ে যেই যুবলীগ মানবতার-সেই যুবলীগ জনতার।সংকটে-সংগ্রামে-অর্জনে-মানবতার সেবায় সর্বদাই বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ এগিয়ে যাবে। ১১ই নভেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ৪৮,তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সফল ও স্বার্থক হোক।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু!
- লেখক: জার্মানি প্রবাসী
এফ এম এইচ আলী
জার্মানি আওয়ামী লীগের একজন কর্মী
ও জার্মান বাংলা বঙ্গবন্ধু রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সভাপতি।
You cannot copy content of this page