সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার ঘাটিনা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে অ্যাসাইনমেন্টের নামে টাকা আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিদ্যালয়ে ডেকে নিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে রশিদ দিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ‘হোম অ্যাসাইনমেন্ট’ পরীক্ষার নামে পরীক্ষার ফি, বকেয়া বেতন ও সেশন ফি,সহ বিভিন্ন খাতে টাকা আদায় করা হচ্ছে।
এ ঘটনায় অভিভাবকদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, সরকারিভাবে ৩ নভেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত হোম অ্যাসাইনমেন্টের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। ঘাটিনা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী রয়েছে।বিদ্যালয়ের ৩০০ শিক্ষার্থীর নিকট থেকে ৬শত টাকা করে আদায় করা হচ্ছে।
মহামারী প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের জন্য বার্ষিক পরীক্ষার পরিবর্তে হোম অ্যাসাইনমেন্টের প্রশ্নপত্রের উত্তর পুরন করে শিক্ষার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানে যাওয়া নিষেধ।তাদের নিজ বাড়িতে সেই অ্যাসাইনমেন্ট পৌছিয়ে দেওয়ার নিয়ম। কিন্তু ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডেকে নিয়ে হোম অ্যাসাইনমেন্টের নামে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিকট জোর করে টাকা আদায় করছেন প্রতিষ্ঠান প্রধান। বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক জানান, সরকারি নিয়মের তোয়াক্কা না করে করোনা মহামারীর মধ্যে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিজের খেয়াল খুশিমতো মানি রিসিভ (রশিদ) দিয়ে টাকা আদায় করছেন। টাকা না দিলে খাতা দেওয়া হচ্ছে না বলে জানান ছাত্র- ছাত্রীরা।
যে সকল শিক্ষার্থীরা দরিদ্র ছিলো তারা ৪০০ কিংবা ৫০০ টাকা দিলেও স্কুলের রশিদে ১০০ কিংবা ২০০ টাকা বাকি উল্লেখ করেছেন। এবং পরবর্তীতে রশিদে বাকি উল্লেখ থাকা টাকাও শিক্ষার্থীরা পরিশোধ করতে বাধ্য হয়।
এসময় অভিভাবকরা আরো জানান, মহামারী করোনার কারনে যেখানে স্কুল বন্ধ রয়েছে,আর এই সুযোগেই স্কুলের শিক্ষকরা তাদের ইচ্ছে মতো টাকার চাপ দিয়ে আসছে। টাকা দিতে না পারলে খাতাও দেয়া হচ্ছে না। এবং করোনার কারনে আমাদের তেমন আয়ের কোনো পথ নেই। প্রধান শিক্ষক নিয়মবহির্ভূতভাবে করোনার মধ্যে হোম অ্যাসাইনমেন্টের নামে বিভিন্ন ভাবে অর্থ আদায় করছেন।
এবিষয়ে ঘটিনা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিরুল ইসলামের ফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
তবে ঘাটিনা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সকারী প্রধান শিক্ষক আঃ খালেকের সাথে কথা হলে তিনি বলেন,পরিক্ষার ফি বাবদ ২০০ টাকা সেখানে ৩০০ -৪০০ টাকা দিচ্ছে।
উল্লাপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সফিকুল ইসলম জানান, উপজেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের জানিয়ে দিয়েছেন। করোনার কারণে শিক্ষার্থীদের হোম অ্যাসাইনমেন্টের সময় কোনো ধরনের ফি নেয়া যাবে না। ঘাটিনা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে টাকা নেয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply