ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:: ঝিনাইদহে রাষ্ট্রপতি ভিডিপি সেবা পদক প্রাপ্ত মিরাজ জামান রাজের এর উপর হামলার ঘটনায় ঝিনাইদহ আদালতের মাধ্যমে সদর থানায় একটি এজাহার দায়ের করা হয়েছে। তিনি এজাহাভুক্ত সকল আসামীদের গ্রেফতার, সুষ্ঠু ও নিরেপক্ষ তদন্ত এবং নিরাপত্তার দাবিতে আজ ০৪ ডিসেম্বর ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে মিরাজ জামান রাজ বলেন, তিনি নিজে বাদী হয়ে গত ২৯ নভেম্বর ঝিনাইদহ অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেটের আদালতে একটি মামলার অভিযোগ দায়ের করেন (ঝি পি-৩২৭/২০), আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এজাহার হিসেবে রেকর্ড করার নির্দেশ দের। ০১ ডিসেম্বর ঝিনাইদহ সদর থানায় এজাহার হিসেবে মামলাটি রেকর্ড হয়। ঝিনাইদহ থানার মামলা নং ০৩, তারিখ: ০১/১২/২০২০ (ঝি জি আর-৪৯৪/২০)। উক্ত মামলায় হুকুমের আসামী হিসেবে ১ নং আসামী ঝিনাইদহ শহরের ০৩ নং পানির ট্যাংকি পাড়া নিবাসী মৃত আব্দুস সাত্তার এর পুত্র ও ঝিনাইদহ জেলা পরিষদ সদস্য মোস্তাকিম মনির এছাড়াও অন্যান্য আসামীদের মধ্যে রয়েছে তারই পিএস খ্যাত হামদহ ০৩ নং পানির ট্যাংকি পাড়ার মোঃ তুহিন বিশ্বাস এর ছেলে মোঃ রকি, একই এলাকার মোঃ একরাম উল্লাহ ছেলে মোঃ শাকিল রায়হান, মোঃ রফিকুল বিশ্বাসের ছেলে মোঃ সোহাগ হোসেন, রশিদুল ইসলামের ছেলে মো: পারভেজ ও হামদহ খন্দকার পাড়ার বাসিন্দা খন্দকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে খন্দকার হাসিন সাহাদ জোহান।
মিরাজ জামান রাজ আরো বলেন, মোস্তাকিম মনির জেলা পরিষদ হতে বন্দোবস্ত প্রাপ্ত সামান্য একটু জমি দখলকে কেন্দ্র করে ২০১৮ সাল হতে তাকে নানাভাবে ক্ষয়ক্ষতি করে আসছে। ইতিপূর্বেও তার উপর বেশ কয়েকবার হামলা হয়েছে। ঝিনাইদহ আদালতে এসংক্রান্ত পূর্বের একটি মামলাও রায়ের অপেক্ষায় আছে। পূর্ব শত্রুদার জের ধরে সম্প্রতি মনির তার পিএস মাদকসেবী ও মাদক মামলায় জেলাখাটা আসামী মোঃ রকি ও তার বাহিনীকে দিয়ে তাকে নানা রকম ভয়ভীতি প্রদর্শন করছিলো। এব্যাপারে তিনি সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরীও করেন (জিডি নং-৮৫০, তারিখ: ১৭/১১/২০২০)।
উক্ত জিডি করার মাত্র দুদিনের মাথায় জিডি করার কারণেই তারা প্রাণনাশের উদ্দ্যেশ্যেই গত ২০ নভেম্বর রাত আনুমানিক ৯টায় পুলিশ লাইন হতে বাইপাস রোডে যাওয়ার পথিমধ্যে আসামীরা কিছু সময় তাকে ফাকা রাস্তায় একা পেয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে হামলা করে রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যাই। তার মাথা, কপাল ও ভ্রুতে ০৪টি সেলাই, হাত, হাটু সহ শরীরে বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে তাকে গুরুতর আহত করেছে। পরে রানিং রাস্তায় চলন্ত গাড়ি দাড়িয়ে গেলে তার আলোতে তাকে পড়ে থাকতে দেখে আশে পাশের মানুষ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। যা অনেকেই নিছক সড়ক দূর্ঘটনা ভেবেছে এবং আসামীরাও সুকৌশলে লোকমুখে তাই প্রচার করে দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড হওয়ার পরও গত ০৩ দিনে তদন্তকারী কর্মকর্তা উক্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন সাব ইন্সপক্টের (নিরস্ত্র) মোঃ আব্দুল হাই আসামী গ্রেফতার না করে বরং গত ০২/১২/২০২০ তারিখে আমার বাড়ি গিয়ে আমার বাবা মায়ের সাথে দুর্ব্যবহার করেছেন। তিনি উচ্চসরে আমি কেন এত বড় মানুষের নামে মামলা করেছি জানতে চেয়েছেন। তিনি আমার বাবা ও আমাকে মামলা মিমাংসা করে নিতে বলেছেন। আমি আসামী গ্রেফতারের কথা বললে তিনি বলেন দেখা যাক আসামীরা জামিনও নিতে পারে।
সর্বোপরি তার এহেন কার্যক্রম আমাকে হয়রানী ও পক্ষপাতমূলক আচরণের বহিঃপ্রকাশ। পুলিশ জনগণের বন্ধু, মানবিক পুলিশের এরকম আচরণ আমাদের কারোরই কাম্য নয়। এই ঘটনার পর এখন পর্যন্ত কোন আসামীরা গ্রেফতার না হওয়ায় তারা বিভিন্নভাবে আমার ও আমার পরিবারের উপর মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করছে। এখন আমার উপর আবারও হামলা হতে পারে বলে আমি প্রচন্ড নিরাপত্তাহীনতা অনুভব করছি। তিনি সংবাদ সম্মেলনে মাধ্যমে সকল আসামীদের গ্রেফতার, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত ও তার ও তার পরিবারের জানমালের নিরাপত্তার দাবী জানান।
Leave a Reply