নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় এবার টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে। পাশাপাশি ন্যায্য দাম পাওয়ায় খুশি চাষিরাও। শীতের এই সবজির আবাদও গত বছরের তুলনায় বেড়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন একটি পৌরসভাতে প্রায় ৪০ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ হয়েছে। গত বছর টমেটো চাষ হয়েছিল ৩০ হেক্টর জমিতে। উপজেলার জয়পুর, লোহাগড়া, লক্ষ্মীপাশা, ইতনা, মল্লিকপুর, দিঘলিয়া, কোটাকোল, নোয়াগ্রাম, শালনগর, লাহুড়িয়া, নলদী, কাশিপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় আবাদি জমিতে টমেটোর চাষ হয়েছে। টমেটোর পাশাপাশি স্থানীয় চাষিরা ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, লাউ, বেগুনসহ নানা ধরনের সবজিও চাষ করেছেন।
জয়পুর ইউনিয়নের দায়িত্বরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন বলেন, এবার টমেটো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল প্রতি হেক্টরে ২০ মেট্রিক টন। তবে উৎপাদন হয়েছে প্রতি হেক্টরে ২৩ থেকে ২৫ মেট্রিক টন।
উপজেলার লোহাগড়া বাজার, এড়েন্দা বাজার, দিঘলিয়া বাজার, লাহুড়িয়া বাজার, নলদী বাজারের বিভিন্ন আড়তে টমেটো বিক্রি হচ্ছে। লোহাগড়া বাজারে গিয়ে দেখা গেছে প্রতি কেজি টমেটোর পাইকারি দাম ১৩ থেকে ১৫ টাকা। তবে খুচরা বাজারে টমেটো বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকা দরে। লোহাগড়া উপজেলার ধানাইড় গ্রামের টমেটো চাষি মো. আমিনুর রহমান বলেন, আমি ‘তিন বছর ধরে টমেটোর চাষ করছি। এবার ৩০ শতাংশ জমিতে টমেটো আবাদ করেছি। এতে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। অন্য বছরের তুলনায় এবার টমেটোর ফলন ভালো হয়েছে। প্রতি সপ্তাহে ৭ হাজার ৫শ থেকে ৮ হাজার ৫শ টাকার টমেটো বিক্রি করি।
তিনি আরোও বলেন, এ পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে প্রায় ৬৫ হাজার টাকার মতন। এখনও প্রায় অর্ধেকেরও বেশি জমিতে টমেটো রয়ে গেছে। যদি কোনও বিপর্যয় না ঘটে তাহলে বাকি টমেটো থেকে আরও ৭০-৮০ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি করতে পারবেন তিনি। খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা লাভ হবে।’
লোহাগড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সমরেন বিশ্বাস জানান, উপজেলার জয়পুর, নলদী, লাহুড়িয়া, দিঘলিয়া, লোহাগড়া ইউনিয়নে এবার প্রচুর টমেটোর চাষ হয়েছে। এবছর ৪০ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ হয়েছে। এর মধ্যে নারানদিয়া, জয়পুর ও ধানাইড় গ্রামে সবচেয়ে বেশি। টমেটো চাষে লাভ হওয়ায় স্থানীয় চাষিদের মধ্যে আগ্রহও বাড়ছে। এ কারণে টমেটো চাষের জমির পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবারে টমেটো চাষে বেশি ফলন হয়েছে। এ পর্যন্ত টমেটো চাষ করে অনেক কৃষক আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরে পেয়েছে।
You cannot copy content of this page