আব্দুল নূর,নেত্রকোনা প্রতিনিধিঃ নেত্রকোণার সদর উপজেলায় ঠাকুরাকোণার বাড়ইডহর ব্রিজের উপর কিরিচ দিয়ে আঘাত ও কোমরের বেল্ট দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারধর করে কিশোরকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে হৃদয় মিয়া ওরফে ব্ল্যাক হৃদয় (২৫) ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী কিশোর রনি মিয়াকে (১৭) ডেকে এনে অটোরিকশায় তুলে এক ব্রিজ থেকে আরেক ব্রিজে নিয়েও অভিযুক্তদের একজন ভিডিও ধারণ করে এবং এলাকায় ব্ল্যাক হৃদয় নামে পরিচিত হৃদয় মিয়া কোমর থেকে বেল্ট খুলে বেদম পেটায়। এ সময় ভিডিওতে শোনা যায়, বেল্ট দিয়ে আরও চারজনকে মারছি।
এ সময় হৃদয়ের অনুসারীরাও ব্যাপক কিল-ঘুষি ও লাথিও মারে ওই কিশোরকে। পরে অভিযুক্তরা ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয় এবং ভিকটিমকে নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা বারহাট্টা উপজেলার দশধার গ্রামের আব্দুল কাদির শনিবার বিকেলে নেত্রকোনা মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
ভুক্তভোগী কিশোর ঠাকুরাকোনায় একটি ইটভাটার শ্রমিকের কাজ করতেন এবং নেত্রকোনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
অভিযুক্তরা হলেন- জেলার সদর উপজেলার ঠাকুরকোনা গ্রামের হৃদয় মিয়া ওরফে ব্ল্যাক হৃদয়, বাইশধার গ্রামের মো. আনোয়ার মিয়ার ছেলে মো. মিজান মিয়া (১৮), চরপাড়া গ্রামের মো. নয়ন মিয়ার ছেলে লাদেন মিয়া (২০), বারহাট্টা উপজেলার সাধুয়ারকান্দা গ্রামের হেকিম মিয়ার ছেলে রানা মিয়া (১৯) ও নওয়াপাড়া গ্রামের সুবল দাসের ছেলে পলাশ দাস (১৮)।
ভুক্তভোগি রনি ইটভাটায় কাজ করে। সেখানে কাজ করার সময় আলম নামে একজনের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়। রনি বলে আলম আমার মোবাইল দিয়ে একটি মেয়েকে ফোন দিত। আলম ভাটার কাজ ছেড়ে ঢাকায় চলে যায় এবং অন্য একজনকে বিয়ে করে সেখানে সংসার শুরু করে। ওই মেয়েটি আলমের খোঁজে মাঝে মধ্যে ফোন দিত।
বেশ কিছুদিন আগে অভিযুক্তরা আলমকে পেয়ে মারধর করে একপর্যায়ে আলম আমার মোবাইল দিয়ে মেয়েটির সঙ্গে কথা বলত তা তাদেরকে বলে এবং আমার মোবাইল নম্বরটি অভিযুক্তদের দেয়।
রনি বলেন, গত শুক্রবার (২ এপ্রিল) বিকাশে টাকা পাঠানোর জন্য দশধার বাজারে যান রনি। আনুমানিক রাত ৯টার দিকে পাপন শীলের দোকানের সামনে থেকে ডেকে দশধার ব্রিজের দক্ষিণ পাশে আমাকে নিয়ে আসে। চোখমুখ বাঁধার সময় চিৎকার দিলে হৃদয়ের হাতে থাকা কিরিচ দিয়ে ঘা মারে।
এ ব্যাপারে নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. ফকরুজ্জামান জুয়েল ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জানান, ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত হয়েছি এবং ওসিকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
নেত্রকোনা মডেল থানার ওসি মো. তাজুল ইসলাম বলেন, অবগত হওয়ার পরপরই উপপরিদর্শক (এসআই) সালামকে বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে। তিনি রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
Like this:
Like Loading...
Leave a Reply