নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
হামট্রামেক শহরের মেয়র ও কাউন্সিল সদস্যদের একটি প্রার্থী তালিকা করা হয়েছে। গণসংযোগ ও অন্যান্য নির্বাচনি কর্মযজ্ঞ আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু করে দিয়েছেন প্রার্থীরা। শোভা পেতে শুরু করেছে তাদের ফেসবুকের পোস্টার। সবমিলিয়ে আগামী ২০২১ সালের ৩ আগস্ট ভোট গ্রহণকে সামনে রেখে ভোটারদের মন জয় করতে কোমর বেঁধে নেমে পড়তে দেখা যাচ্ছে প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকদের।এখন পর্যন্ত মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নাম লিখিয়েছেন চার জন প্রার্থী।তাঁরা হলেন,সাদ আলমাসমারী, বর্তমান মেয়র কারেন মেজেস্কি, আমির মাহমুদ ও এ এস এম রহমান।যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহ্য আর শ্রেষ্ঠত্বের প্রতীক মিশিগান রাজ্যের হ্যামট্রামেক শহর এখন অভিবাসীদের দখলে। বাংলাদেশি ও ইয়েমেনি অভিবাসীদের পদচারনায় এখন সরগরম থাকে নিত্যদিন।সবার চোখ এখন হ্যামট্রামেক শহরের মেয়র নির্বাচনের দিকে। বর্তমান মেয়র কারেন মায়েস্কি পোলিশ বংশোদ্ভূত। তবে মেয়র না হলেও সাধারণ মানুষের যেকোনো প্রয়োজনে সাহায্যে এগিয়ে আসেন ইয়ামেনী বংশোদ্ভূত সাদ আলমাসরী।বাংলাদেশি কমিউনিটির সঙ্গে তাঁর রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। পাঁচ বছর ধরে হ্যামট্রামেক শহরের কমিশনারের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এবার তিনি মেয়র পদে লড়তে চান। তিনি আশাবাদী, মানুষ তাদের সেবার জন্য শহরের মেয়র পদে তাঁকেই বেছে নেবে। আলমাসমারী জানিয়েছেন,তিনি আগামী ২০২১ সালের ৩ আগস্ট অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে হ্যামট্রামেকের মেয়র পদে প্রার্থী হচ্ছেন। মেয়র নির্বাচিত হলে বছরে ৩৬৫ দিন, সপ্তাহে ৭ দিন, ২৪ ঘণ্টা কাজ করবেন। নাগরিকদের সেবা প্রদান করতে তাঁর দরজা ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে। তিনি বলেন, ‘হামট্রামেক আমাদের প্রাণের শহর। আমাদের হামট্রামেক, আমরাই গড়ব। উন্নত হামট্রামেক গড়তে আমাকে সবাই ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করতে হবে। এর মধ্য দিয়ে নবযাত্রা সূচিত হবে।’ তিনি শহরের কমিশনার সদস্য হিসেবে পাঁচ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, শহরের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনে তাঁর সময় এসেছে।তিনি বলেন, ‘আমি যদি মেয়র হিসেবে জনগণের ভোট পাই, তবে আমি এই শহরকে সুন্দর ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন শহর হিসেবে গড়ে তুলব। শিশু, তরুণ, বৃদ্ধ সবাইকে সমান গুরুত্ব দিয়েই তাদের জন্য কাজ করব। আপনাদের মুল্যবান ভোট দিয়ে আমাকে মেয়র হবার সুযোগ করে দিলে আমাদের হামট্রামেক শহর এবং বাসিন্দাদের ভালো কিছু উপহার দেবার আপ্রাণ চেষ্টা করব। পাঁচ বছর ধরে হামট্রামেক কাউন্সিল সদস্য হিসাবে আমি আমাদের শহরটির সমস্যাগুলি নিজ চোখে দেখছি, বুঝতেও পেরেছি এবং শহরের পরিস্থিতিও মূল্যায়ন করেছি। মেয়র হলে শহরের বাজেট, প্রয়োজনীয় ও অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ের মূল্যায়ন করব। আমরা আমাদের বাজেটকে শহরবাসী ও কর্মচারীদের পরিষেবা নিশ্চিতে ব্যয় করতে পারব।কনান্ট রোডকে আরও উন্নত করার চেষ্টা করব। অতীতে দেখেছি অনেকে অনেক প্রতিজ্ঞা করেছেন। কিন্তু সেটা আর বাস্তবায়ন করেননি। নাগরিকরা কর দিচ্ছে, কিন্তু শুধু রাস্তা মেরামত নয়,রাস্তায় তো আমরা আর্বজনাও দেখছি। বছরের পর বছর মেয়র আসেন-যান কিন্তু প্রতিকার নেই।মেয়র হলে উন্নতমানের রাস্তা নির্মাণ, রাস্তা পরিষ্কার,ঝাড়ু এবং আরও অনেক পরিষেবা সরবরাহ করব। সুন্দর ও ক্রমবর্ধমান শহরকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে চেষ্টা করবেন আলমাসমারী। জাতি, ধর্ম, গায়ের রং নির্বিশেষে পুরো জনসমাজের প্রতিনিধিত্ব করতে আপ্রাণ চেষ্টা করবেন বলে জানালেন তিনি।এই ইয়েমেনি মার্কিন আরও বলেন, যদিও মেয়রের ক্ষমতা একটা নির্দিষ্ট কর্মপরিধির মধ্যে সীমাবদ্ধ, তবে জনগণের ভোটে যে মেয়র ক্ষমতায় আসেন তিনি ইচ্ছা করলে অনেক কিছুই করতে পারেন। জনসমর্থনই তার বড় হাতিয়ার। হামট্রামেকের সমস্যা বের করব এবং তাদের নিয়েই সমাধানের চেষ্টা করব। সব শ্রেণি-পেশার মানুষ নিয়ে শহরের কমিশনার সদস্য ও প্রশাসনের সঙ্গে শহর অপারেশন এবং সেবার প্রতিটি স্তরে উন্নতি করার নানা পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য আসছে নির্বাচনে মেয়র পদে তাঁকে নির্বাচিত করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।হ্যামট্রামেক শহরে বাংলাদেশিরা ঐতিহ্যে ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য নিয়ে বসবাস করছেন। পরিশ্রমী ও অগ্রসর অভিবাসী হিসেবে বাংলাদেশিরা এর মধ্যেই নিজেদের প্রমাণ করেছেন উল্লেখ করে আলমাসমারী বলেন, নির্বাচনে জয়ের জন্য তিনি সব মহলের সমর্থন ও সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
Leave a Reply