লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে জিয়া শপিং কমপ্লেক্সের দোকান বরাদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও স্বজনপ্রিতির অভিযোগ উঠেছে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ শাহাজাহান এর বিরুদ্ধে। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ৮৪টি দোকান বরাদ্ধের জন্য ২বছর পূর্বে টেন্ডার আহবান করে সিডিয়ারসহ দরখাস্ত জমা নিলেও নিয়মের কোন তোয়াক্কা না করে লটারী ছাড়াই তিনি এবং তার সহকারিদের আত্মীয়স্বজনের নামে দোকানগুলি বরাদ্ধ করে রাখেন। সম্প্রতি অপ্রদর্শিত লটারী দেখিয়ে সেই দোকানগুলি অধিক দামে বিক্রির বিষয়টি জানাজানি হলে বঞ্চিতরা গতকাল রবিবার সকালে চলমান কাজ বন্ধ করে মার্কেটে তালা মেরে দেন।
সুত্রে জানা যায়, ০১লা অক্টোবর ২০১৮ ইং লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ শাহাজাহান জিয়া শপিং কমপ্লেক্সের ৩য় তলায় দোকান বরাদ্ধের জন্য টেন্ডার আহবান করলে প্রায় ৭শত সিডিয়ারসহ দরখাস্থ জমা পড়ে। এরপর তিনি কোন লটারী প্রদর্শন না করেই চেয়ারম্যান এবং তার সহকারি রুবেল ও অঘোষিত সহকারি সায়েমের আত্মীয়স্বজনের নামে ব্যাপক অনিয়মের মাধ্যমে গোপনে ৮৪টি দোকান বরাদ্ধ করে রাখেন। এতে অপেক্ষা করে বহু লোক দোকান না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন আবার অনেকে এখনো সিডিয়ারের টাকা তুলতে পারেন নাই। সম্প্রতি তিনি নিজের ইচ্ছামত অপ্রদর্শিত লটারী দেখিয়ে দোকানগুলি জামায়াত-বিএনপি নেতা কর্মীদের কাছে অধিক দামে বিক্রি শুরু করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে দলীয় নেতাকর্মীসহ বঞ্চিতরা ৩য় তালার সমস্ত কাজ বন্ধ করে প্রধান পটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। এ ছাড়াও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দ্বায়ীত্ব গ্রহনের পর তিনি এবং তার লোকজন পানিয়ালা বাজার, পানপাড়া বাজারসহ রামগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে সরকারি জায়গা দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বহু ইমারাত গড়ে তুলেছেন।
বঞ্চিত হওয়া তুহিন নামের একজন জানান, ৩০ অক্টোবর ২০১৮ ইং তারিখে দুইটি দোকনের জন্য ৫ লক্ষ টাকার সিডিয়ারসহ দরখাস্থ জমা দিয়েছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমাদেরকে দোকান বরাদ্ধ না দিয়ে উনারা নিজেদের নামে বরাদ্ধ নিয়ে এখন বেশী মূল্যে কোন সিডিয়ার ছাড়াই অনিয়মের মাধ্যমে দোকান বরাদ্ধ দিচ্ছে।
রামগঞ্জ পৌর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক বেলাল আহম্মেদ জানান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দোকানগুলি নিজের আয়ত্বে রাখার জন্য দুই বছর পূর্বে টেন্ডার আহবান করে সিডিয়ারসহ দরখাস্ত জমা নিলেও লটারী করেন নাই। এখন তিনি একটি সাজানো লটারী দেখাইয়া বেশী দামে বিক্রি শুরু করলে বঞ্চিতদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আরো অনেক জায়গা দখলের অভিযোগ আছে।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম রুহুল আমিন জানান, এ দোকানগুলোর বিষয়ে কাহারো সাথে সমন্বয় না করেই তিনি অনিয়মের মাধ্যমে নিজস্ব লোকদের গোপনে বরাদ্ধ দিয়েছেন। সব চেয়ে দুঃখজনক বিষয় হলো পানপাড়া বাজারে আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয়ের বরাদ্ধকৃত জায়গা তিনি টাকার বিনিময়ে তার নিজস্ব লোককে বরাদ্ধ দিয়েছেন।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ শাহাজাহানের সাথে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জিয়া শপিং কমপ্লেক্সের তয় তলায় ৮৪টি দোকান এবং পানপাড়া বাজারে দলীয় কার্যালয়ের জায়গা বরাদ্ধের বিষয়ে কোন কথা না বলে বিষয়গুলো এড়িয়ে যান।
Leave a Reply