এই রেল স্লাব যে সম্পূর্ণ লেগে যাওয়ার কারণে মানুষ কিন্তু এখন হেঁটে পদ্মা সেতু পার হতে পারবে। আগে যেটা অভাবনীয় ছিল কারণ পৃথিবীর মধ্যে সব থেকে ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ নদী বলা হয় পদ্মা নদীকে। কারণ এর পরিবর্তন কখন কোথায় হবে এবং এর তলদেশ কোথায় পরিবর্তন হবে সেটা ভূ-তাত্ত্বিকভাবে ভবিষ্যৎবাণী করা খুবই কঠিন ছিল। সেই নদীতে আজকে ৬.১ কিলোমিটার পদ্মা সেতু হয়ে গেছে বলা যায় কারণ এখন আমরা পায়ে হেঁটেই এখন পদ্মা নদী পার হতে পারি আর এক বছর পরে হয়তো আমরা পদ্মা সেতুতে যান বাহন চলাচল দেখবো। এটা ছিল বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ, বড় সিদ্ধান্তের বিষয়। এর সঙ্গে দেশের ভাবমূর্তি জড়িত ছিল। এমন বৃহৎ ও খরস্রোতা একটা নদীর ওপর এত বড় সেতু নির্মাণ করে আমরা বিশ্বের সামনে একাট উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছি। এই যে বিজয় বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার বিজয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের বিজয় এবং বাংলাদেশের মানুষের বিজয়। এই বিজয়ের পিছনেও কিন্তু অনেক ষড়যন্ত্র ছিল যে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে সেই ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে যা এখনো চলছে এবং সামনেও চলতে পারে। কিন্তু এইসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে অতিক্রান্ত করে যখন দেশের লিডারশিপে থাকেন তখন তার নেতৃত্বের কারণে একটা জাতির ক্রান্তিকালীন সময়ে তার সঠিক সিদ্ধান্ত পুরো দেশটির চিত্র ঘুরিয়ে দিতে পারে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হওয়ার পর পদ্মায় সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সেতু নির্মাণের জন্য প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু হয় ১৯৯৮ সালে। ২০০১ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত জাপানি অর্থ সহায়ক সংস্থা (জাইকা) সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ করে। ওই সময়েই ২০০১ সালের ৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। যার মধ্য দিয়ে সেতু নির্মাণের বীজ বপন করা হয়। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে, সকল দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে ও দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগকে পেছনে ফেলে ২০১৪ সালের ১২ ডিসেম্বর যে স্বপ্নের বীজ বুনা হয়েছিল পদ্মার পাড়ে সেই স্বপ্ন এখন বাস্তব। তার নেতৃত্বে স্থাপন হয়েছে উন্নয়নের মাইলফলক। আমাদের একজন লিডারশিপে আছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা যার রাজনৈতিক সাহসিকতা ও দূরদর্শিতার ফলেই বাংলাদেশ আজ মুখ থুবড়ে পড়েনি।
Leave a Reply