রাজশাহী প্রতিনিধিঃ রাজশাহীতে গ্রেফতার বানিজ্যের শীর্ষে আরএমপি’র কাশিয়াডাংঙ্গা থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই তাজ উদ্দিন। এরকমই অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। অভিযোগ উঠেছে ঘুষ, গ্রেফতার, মাদক কারবারির কাছে মাসোহারা সহ সকল অনিয়মের শীর্ষে রয়েছেন এসআই তাজ উদ্দিন। মতিহার থানায় এলাকায় নানা অনিয়মসহ ঘুষ গ্রহনের অভিযোগ তার পুরোনো ঘটনা। এছাড়াও কাশিয়াডাংগা এলাকায় চালাচ্ছেন তিনটি জুয়ার বোর্ড।
অভিযোগ-১ঃ চলতি বছরের গত ১৪ মার্চ থানা এলাকার বালিয়া থেকে ৫ জনকে আটক করেন এস আই তাজ উদ্দিন। আটকরা হলেন, মামুনুর রশীদ, আমানুল্লা, হালিম, শাহাবুল, নুরুল ইসলাম। তারা সকলেই মাদক সেবনকারী। ঘটনার দিন আটকদের নিকট ১০ হাজার টাকা করে দাবি করেন। পরে তিনজন ৪ হাজার করে ১২ হাজার করে টাকা দেন। তিনজনকে ছেড়ে দেন বাকী দুজনকে ১২ গ্রাম হেরোইন দিয়ে মামলা দেওয়া হয়।
অভিযোগ-২ঃ চলতি বছরের গত ২৫ শে ফেব্রুয়ারী কোর্ট ঢালুর মোড় থেকে ২ জনকে আটক করেন এস আই তাজউদ্দীন। আটকরা হলেন, আরিফুল ইসলাম ও ইমাম হাসান। আটকদের কাছে কোন প্রকার মাদক না পেয়েও থানায় নিয়ে গিয়ে মারধর করে ১ লক্ষ টাকা দাবি করেন। পরে ২০ হাজার টাকায় ছাড়া পান তারা।
অভিযোগ-৩ঃ নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক এক নারী জানায়, চলতি বছরের ১৩ জুন লিলি হল এলাকায় বাড়ির কাজ বন্ধ করতে যান এস আই তাজউদ্দীন। এ সময় কাজ বন্ধ করে অর্থ দাবি করেন তিনি। জনতার চাপে সেখান থেকে থানায় চলে আসতে হয় তাকে। পরে ওসি মাসুদ পারভেজ বিষয়টি ঠিক করে দেন।
১ম পর্বঃ উল্লেখ্য যে, সম্প্রতি অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, ৩১ শে মে’২১ আদারিপাড়া থেকে জাহিদ নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেন এএসআই সোহেল রানা। তাৎক্ষণিক ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান এসআই তাজ উদ্দিন। জাহিদকে আটকের পর ঐদিন ১২ হাজার টাকা জব্দ ও ৪০ গ্রাম হেরোইন দিয়ে মামলা দেয় কাশিয়াডাঙ্গা থানা পুলিশ।
ঘটনা সুত্রে জানা যায়, জাহিদ একজন কাঠ ব্যবসায়ী। সে সেইদিন গ্রামীণ ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংক থেকে যথাক্রমে ৫০ হাজার ও ৪০ হাজার টাকা-সহ সর্বমোট ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা নিয়ে কাঠ কিনতে বের হয়েছিলেন । পথিমধ্যে এএসআই সোহেল তাকে আটক করেন। তার কাছে কোন মাদক না থাকলেও টাকা আত্মসাৎ এর জন্য ৪০ গ্রাম হেরোইন দিয়ে মামলা দেন এসআই তাজ উদ্দিন। আটক জাহিদের কাছে থাকা ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার মধ্যে ১২ হাজার টাকা জব্দ তালিকায় লিপিবদ্ধ করে ১ লাখ ৪৮ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী জাহিদের পরিবার জানায়, জাহিদ কোন মাদক ব্যবসায়ী নয়, সে মূলত কাঠ ব্যবসায়ী। তার টাকা আত্মসাৎ করার জন্যই তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে । তারা বিষয়টি অভিযোগ আকারে পুলিশের উর্ধ্বতন অফিসারদের জানিয়েছে।
এদিকে ৪ মে, অপর একটি ঘটনায় দুইজনকে ২০ গ্রাম গাঁজাসহ আটক করেন তাজ উদ্দিন। দুইজনের মধ্যে একজনকে ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে আরএমপি ধারায় চালান করলেও টাকা না পেয়ে অপরজনকে ১২০ গ্রাম গাঁজা দিয়ে মামলা দেন।
অন্য আরেকটি ঘটনায়, ৫০০ গ্রাম হেরোইনসহ একজনকে আটক করে ৩০ গ্রাম হেরোইন দিয়ে মামলা দেন এসআই তাজ উদ্দিন। এই ঘটনায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ঘুষ নেন তিনি। অপর আরেকটি ঘটনায়, বিনা কারণে রাস্তা থেকে সুমন নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে ২০ হাজার টাকা নিয়ে ছেড়ে দেন তিনি ।
এ বিষয়ে এস আই তাজউদ্দীন বলেন, সব ঘটনা মিথ্যা। আমার সকল ঘটনা উদ্ধর্তন অফিসাররা জানে।
কাশিয়াডাঙ্গা থানার ওসি মাসুদ পারভেজ বলেন, আমার ঘটনাগুলো জানা নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নিবো।
এ বিষয়ে, আরএমপি’র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, আমি বিষয়টি জানি না, ভুক্তভোগীর অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
You cannot copy content of this page