নাগরপুর প্রতিনিধি(টাঙ্গাইল )
টাঙ্গাইল-আরিচা মহা সড়কের উপজেলার ভাদ্রা ইউনিয়নে টেংরিপাড়া গ্রামে নয়নদী শাখা খালের উপর বেইলি ব্রিজটি বালুভর্তি ট্রাক পারাপারের সময় পাটাতন ভেঙ্গে ব্রিজের মাঝখানেই আটকে যায়। সোমবার সকালে এ ঘটনার পর থেকেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যান চলাচল। এতে স্থবির হয়ে পড়েছে দু’পারের ব্যবসায়ীদের বাণিজ্য।
জানা যায়, সড়কটির বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখা যায়, ২০১৩ সালে ধলেশ্বরী সেতু চালু হওয়ার পর এই সড়ক ব্যবহার বেড়ে যায় কয়েক গুন। ফলে টাঙ্গাইল থেকে আরিচা ও পাটুরিয়াঘাট যেতে ফেরি পারাপারের বিড়ম্বনার দিন শেষ হয়। একই সাথে ঢাকার নবীনগর, ধামরাই, মানিকগঞ্জ হয়ে দীর্ঘপথ যাত্রার সমাপ্তি হয়। এতে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাথে সড়ক যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মালবাহী ট্রাক, যাত্রীবাহী বাস এই সড়ক ব্যবহার করে টাঙ্গাইল, জামালপুর, শেরপুরসহ বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচল করে। এছাড়াও পদ্মার ওপারের রাজবাড়ী, ফরিদপুর, মাগুরা, ঝিনাইদহ, গোপালগঞ্জ, নড়াইলসহ কয়েকটি জেলায় চলাচলের পথ সুগম হয়। অপরদিকে প্রতিদিন কয়েকশ’সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ ক্ষুদ্র যানবাহনগুলো টাঙ্গাইল-আরিচা-পাটুরিয়া এলাকায় চলাচল করছে।
এত গুরুত্বপূর্ণ সড়কের বেইলী সেতুর অবস্থা নাজুক হওয়ায় প্রতিদিনই বিপুল সংখ্যক যানবাহনকে চলতে হচ্ছে ঝুঁকি নিয়ে। সেতুটিতে স্টিলের পাটাতন ক্ষয়ে গেছে। ফলে মোটরসাইকেলসহ হালকা যানবাহন প্রায়ই চাকা পিছলে দূর্ঘটনার শিকার হয়। ভারী যানবাহন উঠলে রীতিমতো কেঁপে ওঠে পুরো সেতু।
এছাড়া ব্রিজ দিয়ে ভারি যানবাহন চলাচল নিষেধ হলেও তা উপেক্ষা করে প্রতিদিন কয়েকশ ভারি যান চলাচল করছে। এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
স্থানীয়রা জানায়, ব্রিজের বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গা থাকার কারণে গত কয়েক বছরে ঘটে যাওয়া ছোট বড় দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত কয়েকশ মানুষ আহত হয়েছেন। অনেকেই পঙ্গুত্ব বরণ করছেন। এখন ব্রিজটি ছাড়া দুপারের কয়েক হাজার মানুষের জীবন যাত্রা স্থবির হয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে ভাদ্রা ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, আগস্ট মাসেই প্রায় ৫ বার রিপেয়ারিং করা হয়েছে কিন্তু কাজের মান ভালো না হওয়ায় কয়কদিন পড়ই এই বেইলি ব্রিজে দূর্ঘটনা ঘটে। তবে এই মুহূর্তে ব্রিজটি ভালো করে সংস্কার না করলে যে কোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। মানুষ উপায় না পেয়েই ব্রিজটি দিয়ে চলাচল করে। এই অঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম এই ব্রিজ।
নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত ই জাহান বলেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে মেরামতের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। সাময়িকভাবে মানুষ চলাচলের উপযোগী করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আলিউল হোসেন বলেন,
ব্রিজের উপর দিয়ে অতিরিক্ত মালামাল বোঝাই ট্রাক চলাচলের কারণে এটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মেকানিকদের সাথে যোগাযোগ হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বেইলিব্রিজটি অতিদ্রুত মেরামত করা হবে বলে তিনি জানান।
You cannot copy content of this page