সামান্য বৃষ্টিতে নাকাল নড়াইল পৌরবাসী। বর্ষাকালসহ অন্য সময়ে অল্প বৃষ্টি হলেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। ১৯৭২ সালে নড়াইল পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ সমস্যা অব্যাহত রয়েছে। প্রতি বছরই বর্ষাকালসহ অন্য সময়ে বৃষ্টি হলে নড়াইল পৌরসভার বেশির ভাগ এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এবার বর্ষা মওসুমেও একাধিকবার জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। সর্বশেষ গত সোম ও মঙ্গলবারের (১৩ ও ১৪ সেপ্টেম্বর) বৃষ্টিতে পৌরসভার বেশির ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট, দোকান, বাসাবাড়ি ও অফিস চত্বরে পানি জমে যায়। অনেক ক্ষেত্রে ঘরের ভেতরে পানি জমে আসবাবপত্র নষ্ট হয়। ঠিকমত রান্না করতেও পারেন না পানিবন্ধী লোকজন। এছাড়া বৃষ্টি পানি মাড়িয়ে যেতে হয় অফিস-আদালতে।
পৌরসভার দুর্গাপুর, ভওয়াখালী, কুড়িগ্রাম, মাছিমদিয়া, আলাদাতপুর, দক্ষিণ নড়াইল, মহিষখোলা, বরাশুলা, ভাটিয়া, সিটি কলেজ পাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় এ সমস্যা রয়েছে।
এদিকে, নড়াইল পৌর এলাকায় ৫৫ কিলোমিটার ড্রেনেজ ব্যবস্থার প্রয়োজন হলেও আছে মাত্র তিন কিলোমিটার। ফলে বৃষ্টির পানি সহজে বের হতে পারছে না বলে জানিয়েছেন পৌর কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে দুর্গাপুর এলাকার আল-আমিন, ভওয়াখালীর রিয়াজ রহমান, আদালতপুরের জয়নাল শেখ, মহিষখোলার কামরুল ইসলাম, রূপগঞ্জের পলি রহমানসহ ভূক্তভোগীরা জানান, ১৯৭২ সালে গঠিত নড়াইল পৌরসভাটি প্রথম শ্রেণির হলেও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নতি হয়নি। বিলসহ নিচু জমিতে অপরিকল্পিত বাড়িঘর করায় সামান্য বৃষ্টিতে প্লাবিত হচ্ছে পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা। এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় নতুন নতুন বাড়িঘর গড়ে উঠলেও তেমন কোনো রাস্তা নেই। গা ঘেঁষাঘেষি করে ঘর নির্মাণ করার কারণেও সহজে পানি বের হতে পারছে না। রাস্তা এতোটাই সরু যে, এসব এলাকায় একটা ভ্যান বা রিক্সাও চলাচল করতে পারে না। অনেক এলাকায় শুধু হাঁটার মতো পথ রয়েছে। এছাড়া দুর্গাপুর, ভওয়াখালী, বরাশুলাসহ বিভিন্ন এলাকায় নির্মাণাধীন রেল লাইনের জন্যও বৃষ্টির পানি বের হতে পারছে না। এ ব্যাপারে রেললাইন প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের তেমন কোনো ভূমিকা চোখে পড়ে না বলে জানিয়েছেন ভূক্তভোগীরা।
এ বিষয়ে নড়াইল পৌরসভার প্রথম নারী মেয়র আঞ্জুমান আরা বলেন, পৌর এলাকায় ৫৫ কিলোমিটার ড্রেনেজ ব্যবস্থার প্রয়োজন হলেও আছে মাত্র তিন কিলোমিটার। ফলে বৃষ্টির পানি সহজে বের হতে পারছে না। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে অধিকাংশ ড্রেন অপরিকল্পিত এবং বিচ্ছিন্ন ভাবে তৈরি করা হয়েছে। আর শহর সংলগ্ন চিত্রা নদী ছাড়া পানি নিষ্কাশনের তেমন কোনো মাধ্যম নেই। পৌরবাসীর কষ্ট লাগবে পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্টা করছি।
You cannot copy content of this page