নড়াইল সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক ও বর্তমান সভাপতি শাহীদুল হকের বিরুদ্ধে জমি গ্রহিতার সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগী হালিম মোল্যা। অভিযোগকারী হালিম মোল্যা সদর উপজেলার ডাঙ্গা-সিঙ্গিয়া গ্রামের আব্দুল বারিক মোল্যার ছেলে। লিখিত অভিযোগটি সরকারী বিভিন্ন দফতরে প্রতিকার পাওয়ার জন্য তিনি প্রেরণ করেছেন।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, সদর উপজেলা ৩৩ নং উত্তর সিঙ্গিয়া মৌজার এস এ-৫৬১, ৫৮০ ও ৫৩২ নং খতিয়ানের আর, এস চুড়ান্ত-১৭৪৮নং খতিয়ানে এস, এ ১৪২৮, ১৪২৯ ও ১৪৩১ নং দাগের আর এস চুড়ান্ত-১৬১৯ নং দাগে ০.১১ একর এবং এস, এ-১৪২৮ ও ১৪২৯ নং দাগে আর এস চুড়ান্ত- ১৬২১ নং দাগে ০.১১ একর সর্বমোট ০.২২ একর জমি একই গ্রামের মৃত রাজেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের ছেলে শংকর বিশ্বাসের নিকট থেকে ৭০০,০০০ (সাতলক্ষ) টাকা নগদ বুঝে পেয়ে নড়াইল সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে হালিম মোল্যার একক নামে সাফ কবলা দলিল রেজিস্ট্রির জন্য আসেন। দলিল লেখার জন্য বর্তমান সভাপতি শাহীদুল হক মোল্যাকে জমির কাগজপত্র দেখালে দলিল করার জন্য ১০০,০০০ (একলক্ষ) টাকা খরচ হবে বলে জানায়। এসময় হালিম মোল্যা জমি রেজিস্ট্রি বাবদ ৯৯ হাজার টাকা তাকে দেয়। ৯৯ হাজার টাকা শাহীদুল হক বুঝে পেয়ে দলিল রেজিস্ট্রি করে দেন। গ্রহীতা দলিলের নকল তুলে দেখতে পায় সাফ কবলা দলিলের পরিবর্তে গত ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে ১৪০২ নং আম-মোক্তারনামা দলিল (পাওয়ার) করেছেন। এমনকি হালিম মোল্যার নামের সঙ্গে সিঙ্গিয়া গ্রামের রাজ্জাক মোল্যার ছেলে বাদশা মোল্যার নিকট থেকে ৩,৫০০০০ (তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা নিয়ে তার নামের ওই জমি রেজিস্ট্রি করে দেন দলিল লেখক শাহীদুল হক। উক্ত দলিলে প্রতারক শাহীদুল হক তার নামের পরিবর্তে আলীমুজ্জামান (জামান) এর নাম ব্যবহার করেছেন বলেও অভিযোগ করা হয়। এদিকে বিভিন্ন অভিযোগে দলিল লেখক সমিতির সভাপতি শাহীদুল হককে সভাপতি পদ থেকে এক মাসের জন্য অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এদিকে এর আগে দলিল লেখক সমিতির বর্তমান বহিস্কৃত সভাপতি শাহীদুল হকের নিজের নাম, পিতার নাম এবং ঠিকানা পরিবর্তন করে একই ব্যাক্তির নামে দুটি লাইসেন্স নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তবে ওই বিষয়টি দায় সারা তদন্ত করে লেখক হিসেবে শাহীদুল হককে বহাল রেখেছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। দলিল লেখক সমিতির সভাপতি শাহীদুল হক লাইসেন্স নং-৯১ এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন পূর্বক ক্ষতি পুরণসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য দাবি জানান ভূক্তভোগী।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দলিল লেখক সমিতির বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি মো. ফারুক শেখ বলেন, আমাদের সমিতির সাধারণ সম্পাদক পৌরসভার প্যানেল মেয়র (কাউন্সিলর) মো. আনিচুর রহমান একজন সমাজ সেবক। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ দলিল লেখক সমিতির সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করছেন। সমিতির সাধারণ সম্পাদককে হুমকি দিয়ে আমাদের সমিতির সকল সদস্যদের অপমান করেছেন দলিল লেখক সমিতির বর্তমান বহিস্কৃত সভাপতি শাহীদুল হক। আমি এঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
অভিযুক্ত দলিল লেখক সমিতির সভাপতি শাহীদুল হকের সঙ্গে অভিযোগের বিষয়ে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কোন বক্তব্য দেননি।
জেলা রেজিস্ট্রার মো. আব্দুর রহিম বলেন, আইজিআর অফিসে লিখিত অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের যাবতীয় কাগজপত্রসহ ১০ নভেম্বর আমার কার্যালয়ে আসতে বলা হয়েছে। তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। #
Leave a Reply