নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
বাঙ্গালির জীবনে একটি দুঃসপ্নের কালো রাত। এই রাতে পাকিস্তান সামরিক বাহিনী শুরু করে অপারেশন সার্চলাইট নামের গণহত্যাযজ্ঞ। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। ২৫ মার্চের এই গণহত্যাকে স্মরণ করে দুইটি ইতালী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসান ইকবাল একটি বার্তা পাঠিয়েছেন।
হাসান ইকবাল বলেছেন, ২৫ মার্চের গণহত্যা শুধু বাংলাদেশেরই নয়, বিশ্বমানবতার ইতিহাসেও একটি কালো অধ্যায়। ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে আজ এক বাণীতে তিনি একথা বলেন।
হাসান ইকবাল বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঢাকাসহ সারাদেশে ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করে। বাঙালির মুক্তি আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দিতে সংঘটিত এ গণহত্যায় শহিদ হন ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, বিভিন্ন বাহিনী, বিশেষ করে পুলিশ ও তৎকালীন ইপিআর সদস্যসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার অগণিত মানুষ।
এ দিনে তিনি পরম শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যাঁর নেতৃত্বে দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয় মহান স্বাধীনতা। ২৫ মার্চ কালরাতে নিহত সকল শহিদকে তিনি সশ্রদ্ধাচিত্তে স্মরণ করেন। তিনি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন জাতীয় চার নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক-সমর্থকসহ সকলস্তরের জনগণকে, যাঁদের অসামান্য অবদান ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে জাতি স্বাধীনতা অর্জন করেন ।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে বাংলার মাটিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল, তা ছিল ইতিহাসের অন্যতম নৃসংশতম গণহত্যা। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে অভিযানটি পরিচালনার মাধ্যমে তারা স্বাধীনতাকামী ছাত্রজনতার প্রতিরোধকে স্তব্ধ করে দিতে চেয়েছিল। রাজারবাগ পুলিশ লাইন, পিলখানা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা শহরসহ সারাদেশে রাতভর এই হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়।
তিনি বলেন, এক রাতেই ঢাকা শহর পরিণত হয় মৃত্যুপুরীতে। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার আগেই তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যান, যার পথ ধরে শুরু হয় বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন নয় মাস পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ত্রিশ লাখ মানুষ। এত অল্প সময়ে এত বিপুল সংখ্যক মানুষ হত্যা বিশ্বের ইতিহাসে নজিরবিহীন। স্বাধীনতার দীর্ঘ সময় পর হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার শুরু করে। ইতোমধ্যে অনেক যুদ্ধাপরাধীর বিচারের রায় ঘোষণা ও তা কার্যকর করা হয়েছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন এ বিচার কার্যক্রম মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে সারাবিশ্বে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। গণহত্যা দিবস পালনের মধ্য দিয়ে ১৯৭১’র এ দিনে পাক হানাদার বাহিনী পরিচালিত গণহত্যা ও বাঙালীর স্বাধীনতার ইতিহাস সম্পর্কে বিশ্ববাসী জানতে পারবে। দেশের পরবর্তী প্রজন্ম স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে ।
হাসান ইকবাল বলেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হত্যা, নিপীড়ন ও নির্যাতন বাঙালিকে দাবিয়ে রাখতে পারেনি। বাঙালি জাতির এ বীরত্বগাঁথা আগামী দিনে জাতিকে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা যোগাবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনাকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করে একটি অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অভিযাত্রায় অংশ নিতে তিনি দল-মত-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
You cannot copy content of this page