ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : পরিবেশ দুষণ রোধে কৃষি বর্জ্য ও মাটি থেকে পরিবেশ বান্ধব ইট তৈরিতে সফলতা অর্জন করেছে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল এন্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। দীর্ঘ ৭ মাস গবেষণার পর এই সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে বলে দাবী করেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল এন্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. নাদিম রেজা খন্দকার।
জানা যায়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল এন্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের উদ্যোগে কৃষি বর্জ্য ও মাটি থেকে পরিবেশ বান্ধব ইট তৈরির কাজ শুরু করা হয়। এরপর ঠাকুরগাঁও জেলা শহরের হাজিরমোড় ও পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জে ফুলবাড়ী গ্রাম থেকে ধানের উচ্ছিষ্ট অংশ, আখের বর্জ্য এবং মাটি সংগ্রহ করা হয়। এরপর দীর্ঘদিন গবেষণা করে কৃষি বর্জ্য ও মাটি থেকে পরিবেশ বান্ধব ইট তৈরিতে সফলতা অর্জন করা হয়। এতে একদিকে যেমন এই বর্জ্যের কারণে পরিবেশদূষণ রোধ হবে, তেমনি উন্নত এই ইট তৈরির কাঁচামালও এখন হবে সহজলভ্য।
আর এই দীর্ঘ ৭ মাসের গবেষণায় কাজ করেছেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল এন্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. নাদিম রেজা খন্দকার ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল এন্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের রিসার্স এ্যাসিসটেন্ট আরমান রেজা শাহ।
পোড়ানো ইটের বিকল্প পরিবেশবান্ধব আধুনিক পদ্ধতির ইট হিসেবে এটি বেশ পরিচিত হবে এমনটাই আশা তাদের। এছাড়াও এই ইট নজর কেড়েছে সবার।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল এন্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দাবি করছে, কৃষি বর্জ্য ও মাটি দিয়ে তৈরি ইট পোড়ানো ইটের চেয়ে বেশি শক্তিশালী। এ ছাড়া ব্যয়সাশ্রয়ী। আর এই ইটের ওজন অনেক কম হওয়ায় ভবনের লোডিং ক্যাপাসিটিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধাও রয়েছে।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল এন্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের রিসার্স এ্যাসিসটেন্ট আরমান রেজা শাহ বলেন, পোড়ানো ইটের শক্তির মাত্রা থাকে মানভেদে কৃষি বর্জ্য ও মাটি দিয়ে তৈরি ইট বেশ শক্তিশালী ও পরিবেশবান্ধব। গবেষণাতেও ভালো ফলাফল পাওয়া গেছে। এই ইট বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরুর উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল এন্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. নাদিম রেজা খন্দকার বলেন, আমরা গবেষণায় দেখেছি কৃষি বর্জ্য ও মাটি দিয়ে তৈরি ইট পোড়ানো ইটের চেয়ে ভালো। কারণ একদিকে এটি বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অবদান রেখে পরিবেশ ভালো রাখবে, একই সঙ্গে পরিবেশবান্ধব হলো কাঁচামালের জোগানও স্থানীয়ভাবে মোকাবেলা করা যাবে।
তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মাটির ঘর নির্মাণ করছে। কারণ এই ঘরে বসবাস করা বেশ আরামদায়ক। আমরা মানুষকে মাটির ঘর নির্মাণে উদ্বুদ্ধ করতেই এই গবেষণা করেছি এবং সফলতাও পেয়েছি। এখন এই ইট বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করতে হলে অর্থের প্রয়োজন। সরকার থেকে যদি আর্থিক ভাবে সহযোগিতা করা হয় তাহলে কৃষি বর্জ্য ও মাটি দিয়ে তৈরি ইট বাণিজ্যিকভাবে রপ্তানি করা সম্ভব।
You cannot copy content of this page