প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২৩, ২০২৪, ১১:০০ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৩, ৫:৩৪ অপরাহ্ণ
শিক্ষকের মারধরে শিক্ষার্থী রামেক হাসপাতালে
রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার মোহনপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নুরুল ইসলামের কাছে প্রাইভেট না পড়ায় ইয়াবা সেবনের অপবাদ দিয়ে এক অসুস্থ শিক্ষার্থীকে মারধোর করে প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষে আটকিয়ে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম নাম নুরুল ইসলাম৷ তিনি মোহনপুর সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক। আহত ছাত্র বখতিয়ার গালিব ইয়াসির ঐ স্কুলের এসএসসি পরিক্ষার্থী।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারী) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে স্কুল চলাকালীন সময়ে
স্কুল চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে মোহানপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঐ শিক্ষার্থীকে মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করেন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, হৃদ রোগে আক্রান্ত মোহনপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরিক্ষার্থী বখতিয়ার গালিব ইয়াসির চিকিৎসা শেষে ঘটনার দিনে স্কুলে আসেন। ওই শিক্ষার্থী স্কুলে আসার পর শিক্ষক নুরুল ইসলাম ইয়াবা সেবনের তকমা লাগিয়ে কৌশল করে কিছু ছাত্রদের দিয়ে ওই শিক্ষার্থীকে মারপিট করান এবং শিক্ষক নিজেই বিদ্যালয়েরর ভিতরের এলোপাতাড়ি মারধোর করেন। পরে আহত শিক্ষার্থীর বাবা বিষয়টি জানার পর, তিনি এসে তার সন্তানকে হাসপাতালে নিতে চাইলে অভিযুক্ত ঐ শিক্ষক ও তার অনুগত ছাত্ররা মিলে আবারো তাদের পিটিয়ে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে আটকিয়ে রাখেন। এদিন স্কুলে উপস্থিত ছিলেন না প্রধান শিক্ষক সুলতানা শাহীন।
কথা বললে অসুস্থ শিক্ষার্থীর বাবা একই উপজেলার মহব্বতপুর খানপুর ডিগ্রি কলেজের প্রদর্শক মো. সাদেকুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলে স্ট্রোক করেছে। সে অনেক অসুস্থ এটা আমি স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারপরেও আমার ছেলেকে শিক্ষক ও ছাত্ররা মিলে মারধর করেছে ; আমি এর প্রতিবাদ করতে গেলে তারা আমাকেও মারধর করতে ছাড়েনি। এই বলে তিনি একটি প্রেসক্রিপশন দেখান।
ভুক্তভোগী ছাত্র এসএসসি পরীক্ষার্থী গালিব জানান, আমি দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার কারনে স্কুলে আসতে পারিনি। নুরুল স্যারের কাছে পদার্থ বিজ্ঞান প্রাইভেট না পড়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে কৌশলে এ হামলা চালিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহা. সেলিম বাদশাহ বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই শিক্ষার্থী ও তার বাবাকে অবরুদ্ধ দশা থেকে মুক্ত করে তাদের মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করার ব্যবস্থা করেছি। ওই শিক্ষার্থীকে ইসিজি করে তার শারিরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শিক্ষক ওই ছাত্রকে পিটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। অভিযোগ পেলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এবিষয়ে বক্তব্য জানতে মোহনপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুলতানা শাহীনকে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করে কলটি কেটে দেন। অনেক ছাত্র অভিভাবক জানান বিভিন্ন বিষয় জানতে, প্রধান শিক্ষককে ফোন করা হলে তিনি কোন সময়ই ফোন রিসিভ করেন না। স্কুলের শিক্ষার্থী ও তার অভিভাবককে মারধোরের ঘটনায় বিব্রত অভিভাবকরা।
উল্লেখ্য, অসুস্থ শিক্ষার্থীদের পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করার পরেও ফেল করানো, শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট না পড়লে ভয়ভীতি দেখানোসহ নানাবিধ অনিয়মের একাধিক অভিযোগ রয়েছে এই স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
© 2024 Probashtime