নড়াইল শহরের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ শরীফ আতিয়ার রহমান স্মৃতি সংসদ বিগত এক বছর ধরে বিনামূল্যে জেলার বিভিন্ন এলাকায় চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছে। শনিবার (২৯ এপ্রিল) নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নের গোপীন্তপুর বেলাশেষে প্রবীণনিবাস নামে একটি বৃদ্ধাশ্রমে এলাকার কয়েকশ অসহায় মানুষকে চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়। শরীফ আতিয়ার রহমান স্মৃতি সংসদ এবং বেলাশেষে প্রবীণ নিবাস যৌথ উদ্যোগে এই সেবা দেয়া হয়। দিনব্যাপী চিকিৎসাসেবায় এলাকার প্রায় ৩৫৭ জন রোগিকে চিকিৎসাসেবা প্রদান করেন শরীফ পরিবারের ৬ জনসহ আরো ১০ জন দেশ বরেণ্য চিকিৎসক। জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সদস্যরা চিকিৎসাসেবার সার্বিক সহযোগিতা করে।
চিকিৎসকেরা হলেন,গাইনী ও প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডাঃ তাওফিকা হোসাইন তুলি ও ডাঃ প্রিয়াংকা,বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ডাঃ শরীফ জাহাঙ্গীর আতীক,ডাঃবীরেন্দ্র নাথ,দন্ত ও মুখমন্ডল রোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ মাহাবুবুর রহমান,শরীফ শামীম আতীক,ডাঃ ঈশিতা বিশ্বাস হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ,ডাঃ চয়ন বিশ্বাস,সার্জারি বিশেষজ্ঞ সাপা,ডাঃ সোহেলি জামান,এবং ডাঃ শরীফ জায়েদ আতীক অমি।
প্রধান অতিথি হিসেবে চিকিৎসাসেবার উদ্বোধন করেন নড়াইলের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী। বৃদ্ধাশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা মো.হেমায়েত উল্লাহ হিরুর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন,জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবাস চন্দ্র বোস,বীর মুক্তিযোদ্ধা শরীফ হুমায়ুন কবির,অধ্যাপক ডাঃ শরীফ জাহাঙ্গীর আতীক,বীর মুক্তিযোদ্ধা এস,এ মতিন,শরীফ আতিয়ার রহমান স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইসমাইল হোসেন প্রমুখ।
চিকিৎসা নিতে আসা গোপূকান্তপুর গ্রামের জান্নাত বেগম বলেন, আমি প্রায় এক বছর ধরে নারী ঘটিত অসুখে ভুগছিলাম। এখান থেকে নড়াইল সদর হাসপাতালে যেতে প্রায় ২০০ টাকা খরচ হয়। আজ এখানে এসে ডাক্তার দেখাই। ডাক্তার অসুধ দিয়েছেন।
নড়াইল জেলা রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক কাজী ইসমাইল হোসেন লিটন বলেন, একই পরিবারে ৭থেকে ৮ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক খুব একটা দেখা যায় না। আমাদের নড়াইলে বিরল ঘটনা। ওই পরিবারের সন্তানরা তার পিতার সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে সমাজসেবামুলক এই কাজটি করে যাচ্ছেন। উপকৃত হচ্ছেন নড়াইলের তৃণমূল পর্যায়ের দুস্থ্য মানুষ।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সুবাস বোস বলেন, শরীফ আতিয়ার রহমান ছিলেন সর্বজন শ্রদ্ধেয় একজন গর্বিত শিক্ষক। তিনি আমারও শিক্ষক ছিলেন। তার গর্বিত সন্তানরা প্রায় এক বছর ধরে এলাকার অবহেলিত মানুষকে বিনা পারিশ্রমিকে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছে এটা গর্বের বিষয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শরীফ আতিয়ার রহমানের বড় ছেলে অধ্যাপক শরীফ জাহাঙ্গীর আতীক বলেন, আমার পিতা ছিলেন মানুষ গড়ার কারিগড়। শিক্ষকতা জীবনে তার অনেক ছাত্র সরকারি এবং বেসরকারি বিভাগের নানা পর্যায়ে উচ্চ পদস্ত কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন। আমরা তার সস্তান। আমাদের পরিবারেই ৭ জন চিকিৎসক রয়েছে। তিনি বলেন, আমার পিতার নামে এলাকার মানুষকে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছি। এতে এলাকার মানুষ উপকৃত হচ্ছেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী বলেন, এমন রত্নগর্বা পরিবারের সদস্যরা সমাজের তৃণমুল পর্যায়ের অবহেলিত মানুষদের বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন এটা বিরল ঘটনা। তিনি বলেন, আমি মনে করি এই পরিবারের সদস্যদের কার্যক্রম দেখে দেশের বিভিন্ন এলাকায় চিকিৎসক পরিবার এগিয়ে আসবে।#
You cannot copy content of this page