প্রিন্ট এর তারিখঃ জানুয়ারী ৩১, ২০২৫, ১০:৩৭ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ মে ২৩, ২০২৩, ১:২১ অপরাহ্ণ
রাজশাহীতে নবজাতক চুরি’র ঘটনায় ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ
রাজশাহী প্রতিনিধি: সম্প্রতি রাজশাহীতে প্রাইভেট হাসপাতাল থেকে নবজাতক চুরির ঘটনায় সুকৌশলে মামলা গ্রহন ও আসামী গ্রেফতার না করে মোটা অংকের উৎকোচ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। মাদকসহ আটক ডা: রিমনকে আটক করে ঘটনাস্থলে ১ লাখ টাকায় ছেড়ে আসেন রাজপাড়া থানা পুলিশ। পরে সংবাদকর্মী ও স্থানীয়রা জেনে যাওয়ায় মানবপাচারের মামলা নেয় রাজপাড়া থানা পুলিশ।
২১ মে (রোববার) নগরীর তালাইমারী এলাকার সৈয়দা তামান্না আখতার নামে এক নারী বাদি হয়ে মামলাটি করেন।
থানা সুত্রে জানা যায়, রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া এলাকার রয়েল হাসপাতালের গাইনি বিভাগের চিকিৎসক নিশাত আনাম বর্ণা ও অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের চিকিৎসক আলী চৌধুরী রিমন-সহ চার জনকে আসামি করা হয়েছে। মানবপাচার আইনে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, তামান্না আখতারের গর্ভে দুটি সন্তান ছিল। বৃহস্পতিবার (১৮ মে) সৈয়দা তামান্না আখতারের প্রসব বেদনা উঠলে রাজশাহী নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকার রয়েল হাসপাতালে যান। এক ঘণ্টা পর রোগীকে ওটি থেকে বের করা হয়। সেখানে ওটিতে নেওয়ার পর রোগীকে অ্যানেসথেসিয়ার (অজ্ঞান করার) ইনজেকশন দেওয়া হয়। এরপর তিনি বাচ্চা প্রসব করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার সেই বাচ্চা চুরি করেছে।
সৈয়দ তামান্না আখতার বলেন, আমি ৯ মাস ১২ দিনের অন্তঃসত্ত্বা ছিলাম। এর আগেও আমি ডাক্তার দেখিয়েছি। আলট্রাসনোগ্রামে দেখা গেছে যে একটি ছেলে ও মেয়ে রয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসপাতালে ভর্তির পর আমাকে ওটিতে নেওয়া হয়। এর আগে আমার সব কাগজপত্র জমা দিলে আমাকে একটি ইনজেকশন দেওয়া হয়। ওটিতে নেওয়ার পর তারা আমার সঙ্গে বাজে আচরণ করতে থাকেন। এর কিছুক্ষণ পরে চিকিৎসক ডাক্তার নিশাত আনাম বর্ণা বলেন, এদিকে দেখেন। তখন আমি বুঝতে পারলাম আমার পুরো শরীর ঝাঁকি দিচ্ছে। মনে হলো বাচ্চা টেনে বের করে নেওয়া হচ্ছে। এরপর আমার আর কিছু মনে নেই। যখন জ্ঞান ফিরলো তখন আমি জানতে পারলাম আমার পেটে নাকি কোনো বাচ্চা ছিল না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রয়েল হাসপাতালের অ্যানেসথেসিয়ার চিকিৎসক আলী চৌধুরী রিমন বলেন, রোগীর অবস্থা গুরুতর ছিল। তার ভাইয়ের কাছে শুনেছেন তার পেটে দুইটা বাচ্চা ছিল। তাই তিনি অজ্ঞান করার ইনজেকশন দেন।
তবে গাইনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিশাত আনাম বর্ণা বলেন, একজন নারী প্রেগন্যান্সির সব সিম্পটম নিয়ে এখানে এসেছিলেন। তিনি দাবি করেন, রোগীর স্বজনরা কোনো কাগজপত্র জমা দিতে পারেননি। তার কাছে কোনো পরামর্শও নেওয়া হয়নি।
তৎক্ষনাৎ ঘটনাস্থল রয়েল হাসপাতালে ওটিতে বসে সিগারেট ও মদ পান করছিলেন ডা: রিমন। এমন সময় সাংবাদিকরা সেখানে গিয়ে মদ্যপ অবস্থায় খালি গায়ে ডা: রিমনকে দেখতে পান। সে ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষিত আছে। সে সময় সেখানে উপস্থিত হয় রাজপাড়া থানার পুলিশ এস আই কাজল নন্দি। তারাও সেখানে ডা: রিমনকে মদসহ আটক করেন। অজ্ঞাত কারণে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আসামীদের ছেড়ে দেয় বলে জানান ভুক্তভোগী পরিবার। পরে সেখানকার একটি সূত্র জানান , দুটি পাঁচ শত টাকার বান্ডিলে মোট ১ লক্ষ টাকা নিয়ে তাদের ছেড়ে আসেন পুলিশ। পরে অবশ্য সাংবাদিক ও স্থানীয় লোকজন এবং ভুক্তভোগী পরিবাবের চাপে মামলা নেয় রাজপাড়া থানা পুলিশ।
এ বিষয়ে কথা বলতে ওসি রাজপাড়া থানার ফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে, ভারপ্রাপ্ত ওসি এস আই কাজল নন্দি বলেন, টাকা নেওয়ার বিষয়টি ১০০% মিথ্যা কথা। ঘটনায় ভুক্তভোগী মামলা করেছেন, তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
© 2024 Probashtime