ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়নের কৃষ্টপুর গ্রামে ৫ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকালে নিখোঁজের ৩ দিন পরে আব্দুল্লাহ নামে ৬ বছরের শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সালন্দর ইউনিয়নের কৃষ্টপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আব্দুল্লাহ কৃষ্টপুর গ্রামের মাসুদ রানা ছেলে। এ ঘটনায় শিশুটির পরিবার সহ ঐ এলাকায় শোকের মাতম চলছে, আর্তনাদে কাঁন্নায় ভেঙ্গে পড়ছেন শিশুটির মা সহ আত্মীয় স্বজনেরা।
তবে ঘটনাটি নিয়ে ঐ এলাকায় নানা রহস্য ও ধোয়াসায় ঘুরপাক খাচ্ছে। জানা যায়, গত রবিবার সকাল ১১ টায় বাড়ি থেকে বের হয়ে আর বাড়িতে ফেরেনি আব্দুল্লাহ । অনেক খোঁজাখুঁজি করে তাকে না পাওয়া গেলে ঐ দিনই ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করে শিশুটির বাবা মাসুদ রানা। ৫ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকালে শিশুটির দাদা পুকুর পাড়ে শিশুটির ভাসমান লাশ দেখতে পায়। পরে অর্ধগলিত শিশুর মরদেহটি উদ্ধার করে এলাকাবাসী।
এলাকাবাসীর সূত্রে আরো জানা যায়, শিশুটির বাবা মাসুদের সাথে রুনা বেগমের বিয়ে হয়, ২০১৬ সালে। পারিবারিকভাবে তাদের মধ্যে অনেক ঝগড়া ঝাটি ও ঝামেলা চলাকালীন মামলা মোকদ্দমায় জরিয়ে পড়ে তারা। এ নিয়ে অনেক বার বিচার মীমাংসাতে বসেও সমাধান হয়নি তাদের। এক পর্যায়ে ২০২১ সালে তাদের ডিভোর্স হয়ে সন্তানটি মায়ের কাছে ছিল। গত শনিবার শিশুটির দাদা মতিউর রহমান রুনা বেগমের বাড়ি বালিয়াডাঙ্গী থেকে আব্দুল্লাহকে তার বাড়িতে নিয়ে আসে। গত রবিবার সকাল থেকে নিখোঁজ হয়, শিশু আব্দুল্লাহ। এ নিয়ে রুনা আক্তার ঐদিনই ঠাকুরগাঁও সদর থানায় ৫ জনের নামে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। শিশুটিকে অনেক খোঁজাখুঁজি করার পরেও না পেয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় শিশুটির বাবা মাসুদ রানা একটি লিখিত হারানো ডায়েরি করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, ঐ পুকুরটিতে মাত্র ১ থেকে ২ শতক জুরে পানি আছে তার পরিমাণ হাটুর সমান। যদি শিশুটি ঐ পুকুরে গত রবিবার ডুবে মারা যায়, তাহলে গত সোমবার ঐ পুকুরে আমরা সবাই এতো খোঁজাখুঁজির পরেও কেন তার লাশ পাওয়া গেল না? আবার ৫ ডিসেম্বর মঙ্গলবার পাওয়া গেল তাও আবার অর্ধেক শরীর পানিতে আর অর্ধেক শরীর ডাঙ্গায়। আমরা বিষয়টি অত্যন্ত রহস্যময় মনে করছি। প্রশাসন যদি ২ পক্ষকেই ভালো মতো জিজ্ঞাসাবাদ করে সঠিকভাবে তদন্ত করে তাহলে হয়তো এই মৃত্যুর রহস্যের উন্মোচন হবে বলে জানান এলাকাবাসীরা।এদিকে শিশুটির মা রুনা আক্তার তার প্রাক্তন স্বামী,শ্বশুর, শাশুড়ি সহ কয়েকজনের উপরে অভিযোগ এনে বলেন, আমার ছেলেকে ওর দাদা মতিউর রহমান জোর করে আমার অজান্তেই তাদের বাড়িতে নিয়ে এসেছিল। তারা ইচ্ছে করেই আমার ছেলেটাকে মেরে ফেলেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
অন্যদিকে এ ঘটনা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন শিশুটির বাবার পরিবারের লোকজন।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি ফিরোজ কবির মুঠোফোনে জানান, আমরা অবগত আছি ইতিমধ্যে ঘটনা স্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে আনা হবে। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
Leave a Reply